Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Science & Tech

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট ৫০০ আসনের সংসদ

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদে ৫০০ আসন করার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সংসদ সদস্য এবং সব স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধানের সুপারিশ করেছে এ কমিশন। এতে নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার বিধানের সুপারিশও  রয়েছে।

এ ছাড়া সংবিধান সংশোধন করে স্থায়ী ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই জাতীয় কাউন্সিলের হাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অন্যান্য ২০ জন উপদেষ্টা, নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা রাখার সুপারিশ দিয়েছে এই সংস্কার কমিশন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস এবং এই সরকারের অধীনে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন করার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলেছে ইসি সংস্কার কমিশন।

রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত প্রথম ধাপের ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধরে অক্টোবরের মধ্যে যেসব প্রবাসী ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন তাদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।

সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ‘অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা’ চালুর সুপারিশ আছে কমিশনের প্রতিবেদনে। কোনো আসনে মোট ভোটের ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুননির্বাচন; জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘না ভোটের’ বিধান প্রবর্তন এবং ‘না ভোট’ বিজয়ী হলে নির্বাচন বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণভোটের বিধান আগামী সংসদে পাস করে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি)-কে নির্বাচন স্থগিত এবং পুনর্নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া যারা ২০১৮ সালের জালিয়াতি ও ২০১৪ এবং ২০২৪ সালের একতরফা পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন। তাদের তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে কমিশনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে রেফারেন্স পাঠিয়ে ৯০ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সুপারিশে যত প্রস্তাব :

রাষ্ট্রপতি : দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত করার বিধান করা; জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমন্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার বিধান করার সুপারিশ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী : সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সীমিত করা; দুবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করা ও একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যাতে দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন তার বিধান করার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে ইসি সংস্কার কমিশন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার : তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মেয়াদ চার মাস নির্ধারিত করা এবং এর মেয়াদকালে জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের পক্ষে সরকার পরিচালনায় রুটিন কার্য?মের বাইরেও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি-বিধানের সংস্কার এবং প্রশাসনিক রদবদলের ক্ষমতা প্রদানের বিধান করা। স্থায়ী জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানের নাম চূড়ান্ত করা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানসহ অন্য ২০ জন উপদেষ্টাকে নিয়োগ দেওয়া। সংবিধান সংশোধন কমিশন প্রদত্ত স্থায়ী জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের সুপারিশ গৃহীত না হলে, সব রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ ও সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা এবং ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : রাজনৈতিক দলসমূহের কেবল দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমন্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিধানের সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে।

উচ্চকক্ষের নির্বাচন : সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতিতে ১০০ আসনবিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ স্থাপন; প্রত্যেক দলের প্রাপ্ত আসনের ৫০ শতাংশ দলের সদস্যদের মধ্য থেকে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ আসন নির্দলীয় ভিত্তিতে নাগরিক সমাজ, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মানবসেবা প্রদানকারী, শ্রমজীবীদের প্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচিত করার বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে। দলীয় ও নির্দলীয় সদস্যদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা; দলীয় ও নির্দলীয় সদস্যদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত রাখা ও সংসদের উচ্চকক্ষে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নকক্ষের নির্বাচনে ন্যূনতম ৩ শতাংশ ভোট প্রাপ্তির মানদন্ড নির্ধারণ করা। সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্যদের বয়স ন্যূনতম ৩৫ বছর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে ¯œাতক নির্ধারণ করা; সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্যদের অন্যান্য যোগ্যতা-অযোগ্যতা নিম্নকক্ষের অনুরূপ করা। সংসদের উচ্চ কক্ষে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে।

সীমানা নির্ধারণ : ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে একটি আলাদা সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠন করতে সংবিধান সংশোধন করা। আলাদা কমিশন গঠন না করা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা, যেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচন কর্মকর্তা, ভূগোলবিদ, মানচিত্রকর, পরিসংখ্যানবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদ, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ এবং জনসংখ্যাবিদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত হবেন। কমিশন এ কাজে দেশি ও বিদেশি যে কোনো ব্যক্তির বা সংস্থার সহায়তা নিতে পারে।

প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা : নির্বাচনের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষেত্রে কমিশনের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা রয়েছে। নির্বাচনি তফসিলের সময় বাড়িয়ে দিয়ে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার সময় বেশি করা এবং প্রচার-প্রচারণার সময় কমানোর সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় প্রার্থীদের হলফনামা যাচাইবাচাই করে মিথ্যা তথ্য পেলে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান কঠোরভাবে প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে সুপারিশে। হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে আদালত কর্তৃক কারও নির্বাচন বাতিল হলে তাকে পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে অযোগ্য করার সুপারিশ রয়েছে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে।

নির্বাচনের সার্টিফিকেশন : জাতীয় নির্বাচনের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে, ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের আগে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা ও সঠিকতা ‘সার্টিফাই’ করা এবং গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা জনগণকে অবহিত করার সুপারশি রয়েছে প্রতিবেদনে। নির্বাচনের সুষ্ঠুতা, নিরপেক্ষতা এবং গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো রাজনৈতিক দল সংক্ষুব্ধ হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অভিযোগ করার সুযোগ সৃষ্টির বিধানের কথা বলা হয়েছে।

নতুন দলের নিবন্ধন : সুপারিশে বলা হয়েছে- নতুন দল নিবন্ধনের শর্ত শিথিলের লক্ষ্যে ১০ শতাংশ জেলা এবং ৫ শতাংশ উপজেলা/থানায় দলের অফিস এবং ন্যূনতম ৫ হাজার সদস্য থাকার বিধান করা। দলের সব সদস্যদের তালিকা প্রস্তুত ও তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা। আরপিওর ১২ ধারার অধীনে সংসদ সদস্য পদের জন্য অযোগ্য ব্যক্তিদের কোনো নিবন্ধিত দলের সাধারণ সদস্য/কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। আইসিটি আইনে সাজাপ্রাপ্ত সব ব্যক্তিকে কোনো দলের সাধারণ সদস্য/কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন-১৯৭৩-এর ৯(১) ধারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হলে সেসব ব্যক্তিকে কোনো নিবন্ধিত দলের সাধারণ সদস্য/কমিটির সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। দলের সদস্যদের গোপন ভোটে দলের স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সব কমিটি নির্বাচিত করা। দলের সদস্যদের গোপন ভোটে প্রতিটি নির্বাচনি এলাকা থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তিনজনের একটি প্যানেল তৈরি এবং তা থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের বিধান করা। দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও শ্রমিক সংগঠন, ভাতৃপ্রতীম বা যে কোনো নামেই হোক না কেন, না থাকার বিধান করা। দলের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দলের তিন বছরের সদস্য পদ থাকা বাধ্যতামূলক করা। প্রতি পাঁচ বছর পর পর দল নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যতামূলক করা। পর পর দুটি নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান বাতিল করা।

প্রচারে পরিবর্তন : নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে একই মঞ্চে ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। আসনপ্রতি ব্যয়সীমা তুলে দিয়ে ভোটার প্রতি ১০ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা। নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হিসেবে শোডাউন, পোস্টার ছাপানো এবং মাইকিং বন্ধ করা। এর বিকল্প হিসেবে লিফলেট, হ্যান্ডবিল এবং প্রার্থীদের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়াকে উৎসাহিত করা।

গণভোট : নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে গণভোটের বিধানটি আগামী সংসদে উত্থাপন করে পাস করানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয় নির্বাচন : জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার জন্য আইন সংশোধন করা। সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের এবং মেম্বার/কাউন্সিলরদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অর্থবহ ভূমিকা নিশ্চিত করার বিধান করা। স্থানীয় সরকারের সব পর্যায়ে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীর জন্য আসন সংরক্ষণের বিধান করা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের আগে শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগের বিধান করা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থীদের হলফনামার মাধ্যমে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে ভোটারদের জানার অধিকার নিশ্চিত করা। পার্বত্য এলাকার জেলা পরিষদের নির্বাচনের আয়োজন করা। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে জাতীয় বাজেটের ৩০ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার বিধান করা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto