দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদ
চার হাজার মাইলেরও বেশি উপকূলরেখা নিয়ে গঠিত কাস্পিয়ান সাগর। পাঁচটি দেশে ছড়িয়ে থাকা জলাশয়টি বিশ্বের বৃহত্তম হ্রদ। কাজাখস্তান, ইরান, আজারবাইজান, রাশিয়া ও তুর্কমেনিস্তানে বিস্তৃত হ্রদটি মাছ ধরা, কৃষি, পর্যটন ও পানীয় জলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তবে বাঁধ, অতিরিক্ত পানি উত্তোলন, দূষণ ও মানুষ সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হ্রদটি দ্রুতি শুকিয়ে যাচ্ছে। খবর সিএনএনের
জলবায়ু পরিবর্তনে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে বিশ্বের হ্রদগুলোও। আরাল সাগরের দিকে তাকালেই ভবিষ্যতের চিত্র স্পষ্ট। কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তানের মাঝের এই বিশাল হ্রদ একসময় পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ছিল। কিন্তু মানব ক্রিয়াকলাপ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এটা প্রায় হারিয়ে গেছে।
হাজার হাজার বছর ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা এবং বরফ গলে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ক্যাস্পিয়ান সাগরেও। তবে গত কয়েক দশকে হ্রদটির পতন ত্বরান্বিত হয়েছে। এক্ষেত্রে মানব ক্রিয়াকলাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কারণ দেশগুলো হ্রদে আলাদা জলাধার ও বাঁধ তৈরি করেছে। ১৩০টি নদীর সঙ্গে যুক্ত কাস্পিয়ান সাগরেরও একই হাল দীর্ঘ সময় ধরে।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য এশিয়া ও ককেশীয় স্টাডিজ বিশেষজ্ঞ ভ্যালি কালেজি জানান, রাশিয়া ৪০টি বাঁধ নির্মাণ করেছে, যার মধ্যে ১৮টি এখনও নির্মাণাধীন। ফলে কাস্পিয়ান সাগরে প্রবাহিত পানি কমে যাচ্ছে। কাস্পিয়ান সাগরের পানির স্তর নব্বইয়ের দশক থেকে কমতে থাকলেও ২০০৫ সাল থেকে তা দ্রুততর হয়ে প্রায় ৫ ফুট কমেছে।
জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস প্র্যাঞ্জে বলেন, ভবিষ্যতে হ্রদটির পানির স্তর আরও দ্রুত কমবে। তাঁর গবেষণা অনুসারে, দূষণের ওপর নির্ভর করে শতাব্দী শেষে পানির স্তর ৮ থেকে ১৮ মিটার কমে যেতে পারে। আরেকটি গবেষণা বলছে, ২১০০ সালের মধ্যে পানির স্তর ৩০ মিটার (৯৮ ফুট) পর্যন্ত কমতে পারে।