Bangladesh

ধরাছোঁয়ার বাইরে মাদক মাফিয়ারা

চট্টগ্রামের ১১ জেলায় নব উদ্যমে সক্রিয় হয়েছে ছোট-বড় পাঁচ হাজারের অধিক মাদক কারবারি। পুরোনো রুট এবং পুরোনো ডেরা ব্যবহার করেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে মাদকের অন্ধকার জগতে। নতুন রূপে মাদক কারবারিদের পালে হাওয়া লাগলেও প্রতিরোধে নেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মাদকবিরোধী কার্যকর অভিযান। মাদকবিরোধী অভিযানের ভাটার কথা অস্বীকার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ১১ জেলায় তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রতি মাসে গড়ে ৩০০-এর বেশি মামলা দায়ের করছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আমাদের জনবল ও পরিবহন সংকট রয়েছে। তার পরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মাদক নিয়ন্ত্রণে।’ একইভাবে সিএমপির জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহমুদা বেগম বলেন, ‘পুলিশ সিএমপির বিভিন্ন থানা এলাকায় নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে মাদকসহ বিভিন্ন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে ২৯৮ জন। চার হাজারের অধিক রয়েছে খুচরা মাদক ব্যবসায়ী। তালিকার বাইরে থাকা মাদক ব্যবসায়ীরাসহ চট্টগ্রামের ১১ জেলায় ছোট-বড় মাদক ব্যবসায়ী রয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ হাজার। গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের দুই-এক মাসের জন্য আত্মগোপনে চলে যায় মাদক ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন পর খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন তারা। তাদের কেউ কেউ অন্ধকার জগতে নতুন করে আবির্ভাব হওয়া ডনদের ছত্রছায়ায় নতুন করে শুরু করে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। আবার দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকা মাদক মাফিয়ারা জামিনে মুক্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণ নেন মাদক সাম্রাজ্যের। মাদকের অন্ধকার জগতে সক্রিয় হওয়া মাদক মাফিয়ার পুরোনো রুট ব্যবহার করেই কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইয়াবা পাচার করছে। পুরোনো ডেরা ব্যবহার করে করছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আগের মতো সক্রিয় না হওয়ায় অপ্রতিরোধ্যভাবেই চলছে মাদক পাচার ও বিকিকিনি।

এদিকে মাদকবিরোধী অভিযানের ভাটার চিত্র উঠে এসেছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পাওয়া তথ্যে। কারাগারের দেওয়া তথ্য মতে, ছয় থেকে সাত মাস আগেও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের মোট আসামির ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ছিল মাদক মামলার আসামি। বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশের মধ্যে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাসুদ হাসান জুয়েল বলেন, ‘চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে (গতকাল সকালের হিসাবে) পাঁচ হাজার ২০০ জন বন্দি ছিল। এর মধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ মাদক মামলার আসামি।’

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচ হাজার ৭৭৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয় চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায়। অভিযানে এক হাজার ৯৫ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৯৭৭টি মামলা দায়ের করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto