ধ্বংস ছাড়া কিছুই মিলছে না ফিলিস্তিনিদের
এক বছরেরও বেশি সময় পর জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ৩ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় তাদের ঘরবাড়ির অবশিষ্টাংশ দেখতে পাচ্ছেন। যাত্রাপথে ক্লান্তি ও পানিশূন্যতার কারণে কমপক্ষে দু’জন মারা গেছেন। নিজ নিজ বাড়ির খোঁজে এলাকায় ফিরে আসা এসব লোকজনের অপরিসীম সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর আলজাজিরা ও রয়টার্সের।
গাজার জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের কারণে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অবশেষে ৪৭০ দিন পর তারা নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে আসছেন। সোমবার থেকে ফিরতে শুরু করা এসব লোকজন ধ্বংসস্তূপ ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না। উত্তরাঞ্চলে ফেরা অনেকে তাদের আপনজন-প্রতিবেশীকে খুঁজে পেয়ে খুশি। তবে ১৫ মাসের টানা যুদ্ধের পর উত্তর গাজার ইসরায়েলি চেকপোস্ট থেকে মালপত্রসহ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে ফেরার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির কাছে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস পুনর্ব্যক্ত করেছে, বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ফিরতে শুরু করলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। জরুরি, তাৎক্ষণিক সহায়তা এবং আরও আশ্রয় উপকরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের কর্মকর্তা গ্লোরিয়া ল্যাজিক বলেন, সেখানে কিছুটা আশঙ্কাও আছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস অবস্থায় পাবে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রয়োজন।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক শিশুসহ দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওয়াফা সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে আল-জিসর এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে পাঁচ বছরের নাদিয়া মোহাম্মদ আল-আমাউদি নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নুসেইরাত শহরে আটকে থাকা একটি গাড়ি সরানোর চেষ্টা করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফা শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে সরে গেলেও অঞ্চলটি অত্যন্ত বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে এর মেয়র বিধ্বস্ত শহরে ফিরতে চাওয়া বাস্তুচ্যুতদের সতর্ক করেছেন। কারণ, ইসরায়েলি সৈন্যরা ফিলাডেলফি করিডোরে অবস্থান করছে।