নক্ষত্রসহ ৪০টির বেশি প্রাণী ও উদ্ভিদের নামকরণ করা হয়েছে এই ব্যক্তির নামে
অভিযাত্রা ও উদ্ভাবনের দুনিয়ায় স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো খুব আলোচিত নাম। প্রাকৃতিক জগৎকে আমাদের ঘরে ও শ্রেণিকক্ষে আনার জন্য পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন তিনি। লেখক, ব্রডকাস্টার ও প্রকৃতিবিদ স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো ১৯২৬ সালের ৮ মে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কেমব্রিজের ক্লেয়ার কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৫২ সালে বিবিসিতে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিবিসি টু চ্যানেলের নিয়ন্ত্রক হিসেবে ইউরোপে প্রথম টেলিভিশনে রঙিন সম্প্রচার তত্ত্বাবধান করেন তিনি। ৭০ বছর ধরে প্রাকৃতিক ইতিহাসের নানান ডকুমেন্টারি আর অভিযানে তাঁকে দেখা গেছে। লাইফ অন আর্থ, দ্য প্রাইভেট লাইফ অব প্ল্যান্টস এবং দ্য ব্লু প্ল্যানেটের মতো প্রাকৃতিক ইতিহাসনির্ভর অনুষ্ঠান তিনি উপস্থাপনা করেছেন। প্রায় ৪০টির বেশি প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে তাঁর নামে। শুধু তা–ই নয়, একটি নক্ষত্রের নামকরণও করা হয়েছে তাঁর নামে।
১৯৭৫ সালের পরে অ্যাটেনবরো অনুসন্ধানকারী হিসেবে প্রকৃতিতে ফিরে যান। আদিবাসীদের নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করেন। স্যার ডেভিডের আগমনের আগে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি এমন জনগোষ্ঠীর খোঁজ পান তিনি। ১৯৭৯ সালের পরে লাইফ অন আর্থ নামের আলোচিত সিরিজ তৈরি করেন তিনি। বিশ্বব্যাপী ৫০ কোটি মানুষ সেই সিরিজ দেখেছেন। দ্য প্রাইভেট লাইফ অব প্ল্যান্টস সিরিজের সময় তিনি বিশ্বের বৃহত্তম ফুলের গাছের খোঁজ পান, যার বৈজ্ঞানিক নাম অ্যামোরফোফালাস টাইটানাম। এত কঠিন নামের পরিবর্তে তিনি নাম রাখেন টাইটাম অরাম। এমন অনেক প্রজাতির নামকরণ করেন তিনি। পাশাপাশি অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণীর নামকরণ করা হয়েছে তাঁর নামে। এর মধ্যে রয়েছে উড়ন্ত বিটলের নাম। এ ছাড়া অ্যাটেনবোরোসরাস নামের একটি লম্বা গলার ডাইনোসরের নামকরণ করা হয় তাঁর নামে। তিনি প্রথমবারের মতো কমোডো ড্রাগনকে পর্দায় তুলে ধরেন। লোমশ অ্যাঙ্গলার মাছ কিংবা ডাম্বো অক্টোপাসসহ অনেক অচেনা ও অজানা প্রজাতির ভিডিও করেন তিনি।
স্যার ডেভিড সম্প্রচার প্রযুক্তি দুনিয়ায় বেশ আলোচিত নাম। ২০১৫ সালে তিনি গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ভিডিও ধারণ করেন। অস্ট্রেলিয়ান উপকূল থেকে একটি সাবমার্সিবলে এক হাজার ফুট নিচে ডুব দেন তিনি। প্রবালদের অবস্থার কথা সারা বিশ্বে তুলে ধরেন তিনি। এভাবেই সাত দশক ধরে বিশ্বকে রক্ষায় সোচ্চার ভূমিকা রেখে চলেছেন স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো।