Science & Tech

নক্ষত্রের উজ্জ্বলতার মাপকাঠি

নক্ষত্রের বর্ণ বা রং আমরা তখনই দেখতে পারি যখন সেগুলোর ভেতর আলোর বিষম বর্ণালি থাকে। কেউ নীল আলো বেশি নির্গত করে, লাল করেই না। কেউ আবার ঠিক উলটো। লাল করে, নীল একদমই নয়।

সে লাল আগুনে তপ্ত লোহার রঙের মতোই। 

নক্ষত্রের বর্ণ এদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা নির্দেশ করে। নীল বর্ণ নির্দেশ করে অতিউষ্ণ অবস্থা। এই অবস্থায় পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়।

লাল রঙের নক্ষত্র সেই তুলনায় বেশ শীতলই বলা চলে। এদের তাপমাত্রা ৩,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাতটি অক্ষরের একটা ক্রমে অধিকাংশ নক্ষত্রগুলোকে শ্রেণিকরণ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ও, বি, এ, এফ, জি, কে এবং এম—গরম থেকে শীতল অবস্থা নির্দেশ করে এগুলো।

উজ্জ্বলতা সাপেক্ষেও নক্ষত্রগুলোকে আলাদা নাম দেওয়া হয়েছে। সুপারজায়ান্ট নক্ষত্রগুলো খুবই উজ্জ্বল। দৈত্যাকার নক্ষত্রগুলোর উজ্জ্বলতা কম। এবং বামন নক্ষত্রের আরও কম। সূর্য একটা মধ্যম মানের ‘জি-টাইপ’ বামন নক্ষত্র।

১৯১০ সালে, এজনার হার্টজস্প্রাং ও হেনরি রাসেল স্বাধীনভাবে নিজেদের গবেষণা করেন। তাঁরা তাপমাত্রা অনুযায়ী নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা সাজিয়েছিলেন। যেটিকে বলা হয় ‘হার্টজস্প্রাং-রাসেল বা এইচ-আর লেখ’। একটা নক্ষত্রের পৃষ্ঠে কী রয়েছে তা খুব সহজেই উজ্জ্বলতা ও রং দিয়ে বোঝা যায়। আর এইচ-আর চিত্রের মাধ্যমে নক্ষত্রের অভ্যন্তরে কী ঘটছে তা প্রকাশ পায়। অধিকাংশ নক্ষত্র নীল উজ্জ্বল পট্টি থেকে লাল ম্লান পট্টির সীমায় অবস্থান করে। উজ্জ্বল প্রান্তে বসে আছে বড় বড় নক্ষত্রগুলো আর ম্লান অংশে ভরের হিসেবে ছোট্ট এমন (বামন) নক্ষত্রের স্থান।

নক্ষত্র-পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতা, বর্ণ এইচ-আর (হার্টজস্প্রাং-রাসেল) ডায়াগ্রামে সাজানো হয়েছে। নক্ষত্রের বাঁচা ও মরা দুটোই এই ডায়াগ্রাম থেকে বোঝা যায়।

পরিমণ্ডল
মূল ধারার নক্ষত্রগুলো নিজেদের হাইড্রোজেনকে হিলিয়ামে পরিবর্তন করে নিউক্লিয়ার শক্তি মুক্ত করে। একটা মূল ধারার নক্ষত্র নিজের কেন্দ্র বা কোরে হাইড্রোজেন ব্যবহার করে। কোরের চারপাশে এই হাইড্রোজেন একটা শেল বা খোলস তৈরি করে। এই নক্ষত্রটি এখন পারমাণবিক জ্বালানির পরবর্তী উৎস হিসেবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত। নক্ষত্র উত্তপ্ত হয়ে উজ্জ্বল হয়। হয় শীতলও। দৈত্যাকার যেমন হয়, তেমনই হয় সুপারজায়ান্টও। সুপারজায়ান্ট বিস্ফারিত হয়। কিন্তু দৈত্যাকার দেহ সংকুচিত হয়ে আসে, একসময় ম্লান শ্বেত বামন হিসেবে ধীরে ধীরে ডার্র ম্যাটারে পরিণত হয়। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button