Bangladesh

নভেম্বরে আদানির প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে এক-তৃতীয়াংশ 

ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের গঠিত একটি আঞ্চলিক বিদ্যুৎ কমিটির তথ্যানুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র।

গেল নভেম্বর মাসে ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি এক-তৃতীয়াংশ বা প্রায় ৩৩ শতাংশ কমেছে। ভারতের সরকারি তথ্যের বরাতে যা জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বকেয়া নিয়ে বিরোধের কারণে গত মাসে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে হঠাৎ করেই বাংলাদেশে সরবরাহ কমিয়ে দেয় আদানি।

ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের গঠিত একটি আঞ্চলিক বিদ্যুৎ কমিটির তথ্যানুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে ৪৫০ মিলিয়ন কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুৎ রপ্তানি করেছে গোড্ডা প্ল্যান্ট। বার্ষিক হিসেবের তুলনায় যা ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ কম।

ভারতের ইস্টার্ন রিজিওনাল পাওয়ার কমিটির তথ্য অনুযায়ী, আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানির মাসিক হিসেবে এটিই সবচেয়ে বড় পতন। গত বছরের ডিসেম্বরের পর যা আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন বিদ্যুৎ আমদানির ঘটনা। 

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদী একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর করে আদানি পাওয়ার। গোড্ডায় অবস্থিত আদানির এই প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হয়, তা আগস্টে হাসিনা সরকার পতনের আগের ১২ মাসে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৯ শতাংশ ছিল। চুক্তি অনুযায়ী, গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ মূল্য পুনর্বিবেচনা করতে বলছে বাংলাদেশ। দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা অন্যান্য সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাঝে আদানির বিদ্যুতের দাম সর্বোচ্চ।

শীতকালে বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদা সাধারণত কম থাকে, তবে বার্ষিক চাহিদা  ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে আদানির থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের এই বাড়তি বার্ষিক চাহিদা মেটাতে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে বাংলাদেশ।

নভেম্বরে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার। তার আগে টানা  ২১ মাস ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল-নির্ভরতা কমেছিল।

বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড অপারেটরদের তথ্য বিশ্লেষণ করে রয়টার্স আরও জানায়,  টানা পাঁচ মাস কমার পরে নভেম্বরে প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন-ও ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। অন্যদিকে, কয়লা-চালিত বিদ্যুতের উৎপাদন টানা তৃতীয় মাসের মতো হ্রাস পেয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button