নয়াদিল্লিতে ৪১ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত
ভারতে ভারী বৃষ্টি-বন্যায় ১৫ জনের মৃত্যু
ভারতের দিল্লিতে টানা কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। ভেঙে পড়েছে এক ডজনের বেশি বাড়ি। বৃষ্টির কারণে যানজট বেড়েছে। দেখা দিয়েছে জনভোগান্তি। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ১৯৮২ সালের পর থেকে দিল্লিতে জুলাই মাসে এত বৃষ্টি হয়নি। ছবিগুলো গত শনিবার তোলা।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সড়কে জমেছে হাঁটুপানি। মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় হেঁটে যাচ্ছেন এক নারী
সড়কে জমে থাকা হাঁটুপানিতে মোটরসাইকেল নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন দুজন
মুষলধারে বৃষ্টিতে সড়কে পানি জমেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অটোরিকশার ইঞ্জিন। সেই অটোরিকশা ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন এক চালক
জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিকল হওয়া মোটরসাইকেল আরোহীসহ ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন একজন
সড়কে থই থই পানি। এর মধ্যে পুলিশের ব্যারিকেডের ওপর বসে বাসের অপেক্ষায় মানুষ
বৃষ্টির পরে সড়কে জমে থাকা পানিতে খেলায় মেতেছে শিশুরা
মুষলধারে বৃষ্টির পর সড়কে জমে থাকা পানি পেরিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন দুজন
রিকশায় চড়ে সড়কে জমে থাকা পানি পার হচ্ছেন এক ব্যক্তি
জমে থাকা পানি পেরিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে খাবার সরবরাহের কাজে ছুটছেন এক সরবরাহকর্মী
সড়কে জমে থাকা পানিতে বন্ধ হয়ে গেছে গাড়ি। ঠেলে গাড়ি সরানোর চেষ্টায় এক ব্যক্তি
উত্তর ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে।
গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, রবিবার নয়াদিল্লিতে ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা গত ৪১ বছরের জুলাইয়ের হিসেবে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, দিল্লির রাস্তায় কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও তার চেয়ে বেশি। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে নয়াদিল্লিতে স্কুলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার থেকে বন্ধ থাকবে শহরের সব স্কুল।
বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার বরাতে গার্ডিয়ান জানায়, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার তোড়ে ছয়টি রাজ্যে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই পার্বত্য অঞ্চল। হিমাচল প্রদেশে অন্তত ৭০০ রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। স্থানীয় দুর্যোগ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু হিমাচলেই নিহত হয়েছেন ৬ জন।
সরকারি তথ্যানুযায়ী এরই মধ্যে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর উত্তর ভারতের বড় অংশজুড়ে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
এদিকে দিল্লি শহর প্লাবিত হওয়ায় সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। শহরটির কিছু এলাকার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। ওই সব এলাকার নর্দমাগুলোর পানি উপচে পড়েছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানির কারণে সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে।
গত শনিবার দিল্লির একটি বাড়ির সিলিং ভেঙে পড়ায় এক নারী নিহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। সারিতা গুপ্ত নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি জানি না, সরকার এ ব্যাপারে কী করছে। এটি এক বছরের বিষয় নয়, প্রতিবছরই এমনটা ঘটছে।’
গত কয়েক দিনে আসাম, নাগাল্যান্ডসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্যেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বন্যার কারণে আসামে হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে গত রোববার হিমাচল প্রদেশে বন্যার পানিতে গাড়ি ভেসে যাওয়ার ভয়ংকর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।