নিউইয়র্কে নতুন নিয়ম জারি, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা কী ভাবছেন?
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হোটেলের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিল ১২ বছর বয়সী সাল্লি হারনান্দেজ ও তার পরিবার। নতুন আবাসন বিধির আওতায় গেল বুধবার হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের বহিষ্কার করেছে। তাদের নতুন আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে।
নিউইয়র্কে নতুন আবাসনবিধি কার্যকর করার কারণে অনেককেই এখন এভাবে আশ্রয়ের খোঁজ করতে হচ্ছে। নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র না থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নিউইয়র্কে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কিছু মানুষ একই জায়গায় দুই বছর পর্যন্ত আছেন।
নগর কর্তৃপক্ষের নতুন বিধি অনুযায়ী, অভিবাসীরা একটি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬০ দিনের বেশি সময় থাকতে পারবেন না। আবার পুরনো আশ্রয়স্থলটি না ছাড়া পর্যন্ত তাঁরা নতুন জায়গার জন্য আবেদনও করতে পারবেন না। মেয়াদ শেষ হওয়ামাত্রই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয়স্থলটি ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হবে।
সেদিন থেকেই তাদের ভিন্ন আশ্রয় খুঁজতে হবে, প্রতিদিন নতুন করে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস মানুষের এই ঢেউ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। যেসব কোম্পানির বাসে করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা শহরটিতে ভিড় জমাচ্ছেন, সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীর আবাসনের খরচ বাবদ ৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
মেয়র ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও অর্থ সহায়তা চেয়েছেন। তিনি চান, অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষদের জন্য যেন কাজের অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়া আগের চেয়ে যেন সহজ হয়।
নিউইয়র্ক সিটি ঐতিহাসিকভাবেই উদার শহর হিসেবে পরিচিত। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, কেউ আবাসনের জন্য আবেদন জানালে তাঁকে আবাসন দেওয়া হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র শহর, যেখানে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।
বুধবার সাল্লির মতোই একই ভোগান্তিতে পড়েন ব্লাঙ্কা নামের এক নারী। ৩৫ বছর বয়সী ওই নারী মধ্য আমেরিকার নাগরিক। হোটেলের আশ্রয় কেন্দ্রে তাঁর থাকার অনুমতি শেষ হয়ে গেছে। এখন তাঁকেও নতুন আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে হচ্ছে।
এএফপিকে কাঁদতে কাঁদতে ব্লাঙ্কা বলেন, তাঁর ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সেদিন স্কুলে যেতে পারেনি। কারণ তার আশঙ্কা, ক্লাস শেষ হওয়ার পর হয়তো তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, থাকার জায়গা ও আশ্রয় পেতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন নয়, সেগুলো তৈরি করতে সহযোগিতা করার মতো কাউকে তিনি পাচ্ছেন না। কাজ না থাকায় আইনজীবীর খরচ জোগানোর মতো সামর্থ্য নেই বলেও দাবি তাঁর।
ব্লাঙ্কা বলেন, কাজ পেলে আমি আমাদের মেয়েদের খরচ জোগাতে পারব।