USA

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ডে প্যারেড অনুষ্ঠিত

২৫ বছর পর ২৬ মে রবিবার আবারও নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো বহুল প্রত্যাশিত ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’। তবে আয়োজকরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম না হওয়ায় প্যারেড পূর্ববর্তী শুভেচ্ছা-বক্তব্য পর্বটি হ-য-ব-র-ল অবস্থায় নিপতিত হয়েছিল। 

‘ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট’র উদ্যোগে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ৬৯ স্ট্রিট থেকে ৩৭ এভিনিউর ওপর দিয়ে ৮২ স্ট্রিট পর্যন্ত বিস্তৃত এ প্যারেডের মধ্যমণি ছিলেন সিটি মেয়র এরিক এডামস। মেয়র তার বক্তব্যে বাংলাদেশিদের সততা-কর্মনিষ্ঠা এবং মেধার প্রশংসা করে বলেন, আমি সেই কম্যুনিটির সাপোর্ট পাওয়ায় নিজেকে ধন্য মনে করি এবং সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি আমেরিকানদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করছি। বিপুল করতালির মধ্যে প্যারেডের মঞ্চে মেয়র এডামসকে উপস্থাপন করেন নিউইয়র্ক সিটির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে (চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার) অধিষ্ঠিত মীর বাশার। এসময় তিনি মেয়রকে ‘আইকন অব দ্য প্যারেড’র ব্যাজ পড়িয়ে দেন।  প্যারেডের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ মেয়রকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করার আগে প্যারেডের মার্শাল বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ বলেন, এরিক এডামস নানাবিধ কাজের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশিদের হৃদয় জয় করেছেন। তার মতো মেয়রের সান্নিধ্য পেয়ে আমরা সকলে অভিভূত। এর আগে প্যারেড কমিটির চেয়ারপার্সন শাহ শহিদুল হক সাঈদ, ডেমক্র্যাট ফাহাদ সোলায়মান, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ এ্যাটর্নী মঈন চৌধুরী, আবাসন ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, বিএনপি নেতা কাজী আজম, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বদরুল খান, প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যান্ড ন্যাশনাল হেলথকেয়ার চ্যাম্পিয়ন আব্দুল কাদের শিশির, স্টেট সিনেটর জেসিকা গঞ্জালেজ, কুইন্স বরোর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ইবনি ইয়ং এবং বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন। 

চিত্রনায়িকা মৌসুমী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আমরা একত্রিত হয়েছি প্যারেডের এ সুন্দর আয়োজনে। এই নিউইয়র্কে অনেক প্রবাসী দেখি নানা অনুষ্ঠানে। কিন্তু দেশের নামে কোন আয়োজনে সবাই কেন পিছিয়ে থাকে, সেটা অনেক খারাপ লাগে। আশা করি এর পরেরবার যখন আয়োজন হবে সবাই আসবেন, সে আমন্ত্রণ রইলো। এবং এটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা বাংলাদেশিরা এখানে আছি এবং কম্যুনিটি হিসেবে কত বড় তা সবাইকে দেখানো উচিত। 

উল্লেখ্য, প্যারেডের মান বাঁচিয়েছেন নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশি অফিসাররা। সিটি পুলিশের চৌকষ দুটি ঘোড়াসহ ৫ শতাধিক পুলিশ অফিসারের উপস্থিতি ছিল। এবারই প্রথম জ্যাকসন হাইটসের ব্যস্ততম সড়ক বন্ধ করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্যারেডের জন্যে। প্যারেডে অংশগ্রহণকারী প্রবাসীর অর্ধেকই ছিলেন পোশাক পরিহিত পুলিশ অফিসারেরা। সিটির বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরাও নিজ নিজ ব্যানারসহ এসেছিলেন। 

১৯৯৮ সালে অর্থাৎ ২৫ বছর আগে কুইন্সের লং আইল্যান্ড সিটির কুইন্স ব্রিজ থেকে ২১ স্ট্রিট ধরে সর্বশেষ একটি প্যারেডের  আয়োজন করেছিল ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন’। দ্য সিটি কলেজের আড়াই লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বকারি ‘ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট সিনেট’র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান বিশ্বাসের উদ্যোগে সে প্যারেডে গ্র্যান্ড মার্শাল ছিলেন সে সময়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কে এম শিহাবউদ্দিন। সেই প্যারেড মাইলখানেক পথ অতিক্রম করে এস্টোরিয়ার রেইনি পার্কে জড়ো হয় এবং সেখানে বাংলাদেশি খাবার আর পন্যের জমজমাট মেলা বসেছিল। এবারের প্যারেড শেষে সে ধরনের কোন মেলা ছিল না। তবে প্যারেড শুরু হবার আগে মূলমঞ্চে দেশের গান পরিবেশন করেছেন বিন্দু কণ্যা এবং শাহ মাহবুব। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button