Science & Tech

নিজ থেকেই ধ্বংস হবে প্লাস্টিক

প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা সারা বিশ্বেই বাড়ছে। প্লাস্টিকের স্থায়িত্ব প্রকৃতিতে অনেক দিন থাকে। ফলে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নানা ধরনের ক্ষতি করে থাকে প্লাস্টিক। প্লাস্টিকের দূষণ কমাতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এবার ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে নিজ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধ্বংস হতে সক্ষম এক ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়েগোর বিজ্ঞানীরা। নতুন ধরনের এই প্লাস্টিক উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের দূষণ কমানোর সুযোগ তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তারা। গবেষণাটি নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী জন পোকরস্কি বলেন, ব্যাকটেরিয়ার স্পোরযুক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারের পরে সহজে নির্মূল করা যাবে। পরীক্ষামূলকভাবে নতুন ধরনের প্লাস্টিক নিয়ে গবেষণাগারে কাজ চলছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাস্তব জগতে এই প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে। প্লাস্টিকের সঙ্গে যুক্ত ব্যাকটেরিয়ার নাম ব্যাসিলাস সাবটিলিস। এই ব্যাকটেরিয়া ব্যাপকভাবে খাদ্যশিল্পে ও প্রোবায়োটিক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্লাস্টিক তৈরির জন্য উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। সেই তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়াকে উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করাতে জেনেটিক্যালি বা জীনগতভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। পলিউরেথেন ও ব্যাকটেরিয়া স্পোর পাউডারকে উচ্চ তাপমাত্রায় একসঙ্গে গলানো হলে প্লাস্টিক ও ব্যাকটেরিয়া এক হয়ে যায়।

পলিউরেথেন প্লাস্টিক ফোনের কাভার থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করা কঠিন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের সঙ্গে প্লাস্টিক-বিনাশকারী ব্যাকটেরিয়ার স্পোর যুক্ত করে বিকল্প ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করা হয়েছে। এই প্লাস্টিক নিজেকে ধ্বংস করতে পারে। প্লাস্টিকের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া স্পোর সুপ্ত অবস্থায় থাকে। পরে নির্দিষ্ট রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে তারা আবার জীবিত হয়। তখন ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিক পণ্য ধীরে ধীরে ধ্বংস করতে থাকে। অর্থাৎ, এই প্লাস্টিক ব্যবহার শেষে মাটিতে বা নির্ধারিত স্থানে রাখলে ব্যাকটেরিয়ার কারণে নিজ থেকেই ক্ষয় হতে শুরু করবে। অনেকটা ঘুণপোকা যেভাবে কাঠ খেয়ে ফেলে সেভাবেই ব্যাকটেরিয়া প্ল্যাস্টিক খেয়ে ফেলবে।

বিজ্ঞানী হান সল কিম বলেন, আমরা প্রাকৃতিকভাবে প্লাস্টিক দূষণ কমানোর চেষ্টা করছি। যে কারণে আমরা ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করছি। ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারের একটি অতিরিক্ত সুবিধা হচ্ছে স্পোর ব্যবহারের কারণে প্লাস্টিকের শক্তি ও কার্যক্ষমতা বাড়ে। আমাদের প্রক্রিয়ায় তৈরি প্লাস্টিক বেশ শক্ত, ফলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button