Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

নিত্যপণ্যে ক্রেতার হাঁসফাঁস

আয়ের সঙ্গে সংগতি না থাকায় খাদ্যপণ্যের চড়া দামের চাপে ভোক্তা

বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বাজার আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। গত এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজ, ডাল, আটা, মুরগির ডিম, সোনালি মুরগি, মাছ ও বেশ কিছু সবজির দাম সর্বোচ্চ ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। আয়ের সঙ্গে সংগতি না থাকায় খাদ্যপণ্যের চড়া দামে দিশাহারা সাধারণ ক্রেতা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্রিয়তা ধারাবাহিক নয়।

ভোক্তারা এতে পণ্যের বাজারে প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছে না। তারা বলছে, বাজারে তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করছেন। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে অস্থিরতা আরো বাড়বে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৫৬ শতাংশ, জুন মাসে যা ছিল ৭.৩৯ শতাংশ।

বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় চলতি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরো বাড়তে পারে। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়াতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে এবার পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। শুধু ভারত থেকে নয়, ব্যবসায়ীরা যেখান থেকে আমদানি করতে চাইবেন, সেখান থেকেই অনুমতি দেওয়া হবে।

আমাদের মূল উদ্দেশ্য পেঁয়াজের দাম কমানো ও সরবরাহ বাড়ানো। এ জন্য যেখানে দাম কম পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। দাম কমাতে আমাদের যতটুকু আমদানি করা দরকার, ততটুকুই আমদানি করা হবে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশ নেই।

রাজধানীর খুচরা বাজার এবং সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির ১৪ আগস্ট ও ১৪ জুলাইয়ের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে এক মাসের ব্যবধানে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেড়ে ১৫০ টাকায় উঠেছে।

দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ বেড়ে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। দেশি মসুর ডালের দাম কেজিতে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে এখন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। খোলা আটার দাম কেজিতে ১২ শতাংশ বেড়ে ৪৫ টাকা। সোনালি মুরগির দাম এমনিতেই বাড়তি ছিল, নতুন করে ৭ থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে এখন ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সব ধরনের মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের রুই মাছের দাম এক মাসের ব্যবধানে ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বেড়ে প্রতিকেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা হয়েছে। সরবরাহসংকটে বাজারে এখন আলু ও পেঁপে ছাড়া সব ধরনের সবজি বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম কেজিতে ২৫ থেকে ৩৩ শতাংশ বেড়ে মানভেদে (লম্বা ও গোল বেগুন) ১০০ থেকে ১৪০ টাকা হয়েছে। রাজধানীর কোনো কোনো বাজারে গোল বেগুন ১৮০ টাকা কেজি।

এখন টমেটোর মৌসুম না হওয়ায় সবজিটির দাম চড়া। গত এক মাসে টমেটোর দাম কেজিতে ১৪ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়ে মানভেদে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।   

অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন করে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ধনী-গরিব-নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার বেশি হলে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষ সংসার চালাতে খুব হিমশিম খায়। কয়েক অর্থবছর ধরে চলা এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবনে।

রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় আয় তেমন বাড়েনি। এতে বাসা ভাড়া দিতে ও খাদ্যপণ্য কিনতে খুব কষ্ট হচ্ছে। পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় এখন পরিবার নিয়ে চলা দায়। ব্যয় কাটছাঁট করেও সামলাতে পারছি না। প্রতি মাসে ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে।’

রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের মুদি দোকানদার মো. সুজন মিয়া বলেন, ‘গত এক মাসে বাজারে পেঁয়াজ, ডিম, ডাল ও খোলা আটার দাম বেড়েছে। ১৩০ টাকা ডজনের ডিম ১৫০ টাকা হয়েছে। একইভাবে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। হঠাৎ দেশি মসুর ডালের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খোলা আটার দাম ৫০ কেজির বস্তায় ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।’

ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টারি কনজিউমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে প্রায় প্রত্যেকটি পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। চাল, ডাল, তেল, সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস-ডিম কোনো কিছুর দামই স্থিতিশীল নেই। শুধু নিম্নবিত্ত নয়, মধ্যবিত্ত শ্রেণিও আজ নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় হিমশিম খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, আমদানিনির্ভরতা, ডলারসংকট, সরবরাহ চেইনে ব্যাঘাত এবং অদক্ষ বাজার নিয়ন্ত্রণ সব মিলিয়ে এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনেক ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও মজুদদারির কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।’

খলিলুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা মূল্যস্ফীতির তীব্র চাপে জীবনযাপন করছি, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গত বছরের জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১৪ শতাংশ, যা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমলেও এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে। এ সময় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেকের জন্য আরো জটিল হয়ে উঠেছে। গত এক বছরে বহু মানুষের আয় কমেছে, অনেকে চাকরি হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে, আবার কারো আয় স্থির থাকলেও খরচ বহুগুণ বেড়ে গেছে। এতে দৈনন্দিন খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ভোক্তাদের জন্য অসহনীয় চাপ তৈরি করেছে।’

ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হলে বহুমুখী ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। প্রথমত, বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে; প্রশাসনিক পর্যায়ে কার্যকর নজরদারি, নিয়মিত মনিটরিং এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, অসাধু মজুদদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে; শাস্তির ভয় কার্যকর না হলে কৃত্রিম সংকট ও দাম বৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করা যাবে না। তৃতীয়ত, দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে আমদানিনির্ভরতা এবং বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমে। বিশেষ করে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ও সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে। চতুর্থত, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরো বিস্তৃত করতে হবে, যাতে নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ কর্মসূচির আওতায় পর্যাপ্ত সহায়তা পায়। এসব পদক্ষেপ একসঙ্গে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে দ্রব্যমূল্যের চাপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

বগুড়ায় গত দেড়-দুই মাস আগে যে বেগুন, করলা, পটোল, বরবটি ও কাঁচামরিচের যে দাম ছিল, এখন তা আকাশচুম্বী। দুই মাসের ব্যবধানে এসব পণ্য প্রতি মণে ৮০০-১০০০ টাকা বেড়েছে। তবে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছে, অতি বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। এতে দাম বেড়ে সব সবজি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।

উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় সবজির হাট মহাস্থান ঘুরে জানা গেছে, পাইকারিতে গতকাল বেগুন বিক্রি হয়েছে ২৬০০-২৮০০ টাকা মণ দরে। অথচ দুই মাস আগে এই বেগুন ছিল ১০০০-১১০০ টাকা। করলা ছিল ১২০০-১৪০০ টাকা মণ, এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩২০০ টাকা; বরবটি ছিল ৩২ টাকা কেজি, এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে; শসা আগে ছিল ৫০০-৬০০ টাকা মণ, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০০-১৮০০ টাকা দরে।

মহাস্থান হাটের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, টানা অতি বৃষ্টির কারণে একদিকে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, অন্যদিকে কৃষক ঠিকমতো সবজি আবাদ করতে পারেনি। এ জন্য সবজির বাজার চড়া।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d login
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
bacansport
slot toto