নেতানিয়াহুর কারণেই গাজায় শান্তিচুক্তি হচ্ছে না!
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সিনিয়র নেতা বলেছেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে’ অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে ‘ব্যক্তিগতভাবে বাধা’ সৃষ্টি করছেন। অস্ত্রবিরতি এবং বন্দী বিনিময় নিয়ে কায়রোতে নতুন করে আলোচনা শুরুর প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করেন। পর্যবেক্ষকেরা জানিয়েছেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু রাফায় হামলা করার ব্যাপারে ইসরাইল অনড় থাকায় নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই হামাস নেতা নেতানিয়াহুকে নিয়ে মন্তব্যটি করেন। গতকাল শনিবার মিসরের কায়রোতে কোনো সমঝোতা ছাড়াই আলোচনা শেষ হয়েছে। আজ রোববার আবার আলোচনা শুরু হতে পারে।
হামাসের ওই সিনিয়র কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, গাজায় যুদ্ধ অবসানের কথা সুস্পষ্টভাবে লেখা না না থাকলে তারা কোনো অবস্থাতেই অস্ত্রবিরতি চুক্তি করবেন না।
এর আগে শুক্রবার আরেক সিনিয়র হামাস নেতা হোসাম বাদরানও সর্বশেষ প্রস্তাবটি ভণ্ডুল করার জন্য নেতানিয়াহুকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, চুক্তি যাতে না হয়, সেজন্যই নেতানিয়াহু রাফায় হামলার কথা বলে আসছেন।
তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর রাফায় হামলা করার ব্যাপারে অটল থাকাটা আসলে সম্ভাব্য চুক্তির যেকোনো সম্ভাবনা ভণ্ডুল করে দেয়া।
এদিকে এক বিশ্লেষক আল জাজিরাকে বলেছেন, আলোচনাকে ভণ্ডুল হওয়া থেকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসা উচিত।
হামাস দলটি শনিবার কাতারে পৌঁছে। তারা কাতার, মিসর ও মার্কিন মধ্যস্ততাকারীদের সাথে সাক্ষাত করে। সর্বশেষ প্রস্তাবে ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আলোচনা এখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। কাতারি টেকনিক্যাল টিমটি সম্ভাব্য চুক্তির জন্য মিসরীয়দের সাথে আলোচনা করছে। বর্তমানে আলোচকরা হামাসকে এটাতে রাজি করাতে চেষ্টা করছেন যে তারা যেন প্রথম পর্যায়ে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে অনড় না থাকে।
এর আগে হামাসের সিনিয়র মুখপাত্র ওসামা হামদান আল জাজিরাকে বলেন, আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি, তা সুস্পষ্ট।
তবে তিনি বলেন, আমরা এখনো প্রধান বিষয় নিয়ে কথা বলছি। আর তা হলো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলের পূর্ণ প্রত্যাহার। আমরা আশা করছি, এ ব্যাপারে কিছু ভালো ও ইতিবাচক জবাব পাবো।
হামদান বলেন, অন্যতম আলোচ্য বিষয় হলো ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর রাফায় সেনাবাহিনী পাঠানোর ঘোষণা।
উল্লেখ্য, ইসরাইল বারবার করে বলছে যে হামাসের সাথে চুক্তি হোক বা না হোক, তারা রাফায় হামলা চালাবেই।
হামদান বলেন, নেতানিয়াহু সুস্পষ্টভাবে বলছেন যে তিনি রাফায় হামলা চালাবেন। যুদ্ধবিরতি হোক বা না হোক, তিনি তা করবেন। তিনি হামলা চালাবেনই। এর মানে হলো, কোনো যুদ্ধবিরতি হচ্ছে না। আর এর অর্থ হলো হামলা অব্যাহত থাকবে। আর তা আমরা এখানে যে আলোচনা করছি, তার পরিপন্থী।