International

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মন্ত্রিপরিষদেই ক্ষোভ, চ্যালেঞ্জ জানালেন আইসেনকোট, হতাশা বাইডেন প্রশাসনে

গাজায় যুদ্ধকৌশল নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চ্যালেঞ্জ জানালেন তারই যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য গাদি আইসেনকোট। তিনি বলেছেন, গাজায় সামরিক লক্ষ্য কি সে বিষয়ে সত্য কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। উল্লেখ্য, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে চাপ দিয়ে যাচ্ছে তা প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে তিনি বললেন, পুরোপুরি জয় না হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু যারা হামাসকে চরমভাবে পরাজিত করার কথা বলছেন, তারা সত্য বলছেন না বলে দাবি করেন গাদি আইসেনকোট। অবসরপ্রাপ্ত এই জেনারেলের এক ছেলে গাজা যুদ্ধে নিহত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। 

গাদি আইসেনকোট বলেছেন, ৭ই অক্টোবর নিজের দেশকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নিজের দায়িত্বের ব্যর্থতা প্রকাশ ঘটিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি কারো আর আস্থা নেই। দক্ষিণ ইসরাইলে আকস্মিক ওই দিন রকেট হামলা চালিয়ে হামাস হত্যা করেছে প্রায় ১৩০০ মানুষকে। জিম্মি করেছে ২৪০ জনকে।

বিজ্ঞাপন ওদিকে ইসরাইলে মন্ত্রিপরিষদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের মধ্যে কথা হচ্ছে কালেভদ্রে। এসব ঘটনা সেই সময়ে ঘটছে যখন ইসরাইল এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। 

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিষয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের বিষয় পরিষ্কারভাবে আলাদা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইলের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সমাধানের কোনোই পথ নেই। প্রায় এক মাসের মধ্যে শুক্রবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রথম কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস বলেছে, এ সময়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করেছেন বাইডেন। পরে ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। এ সময় একজন সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, নেতানিয়াহুকে ক্ষমতায় রেখে কি একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান অসম্ভব? জবাবে বাইডেন বলেছেন, না তা নয়। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের অনেক বিষয় আছে। জাতিসংঘের অনেক সদস্য দেশ আছে, যাদের নিজস্ব কোনো সেনাবাহিনী নেই। 

কিন্তু নেতানিয়াহু তার ক্যারিয়ারটিই খরচ করছেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে। গত মাসে তিনি বলেছেন, এই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বাধা দিতে পেরে তিনি গর্বিত। বাইডেন প্রশাসনের এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিকভাবে নেতানিয়াহুর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৫০০০। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সামরিক কৌশলে বার বার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে এই যুদ্ধে। তারা বার বার বলেছে নগ্ন বিমান হামলা চালানোর চেয়ে সুনির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা চালাতে। স্থল অভিযান বিলম্বিত বা পরিত্যক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য অর্থপূর্ণ আলোচনা শুরু করতে বলেছে। 

কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে উত্তেজনায় ভরা বৈঠকে এসব প্রস্তাব বার বারই প্রত্যাখ্যান করেছেন নেতানিয়াহু। এর ফলে ইসরাইলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের একটি বলয়ে হতাশা গভীর হয়েছে। এই যুদ্ধে ভয়াবহ মৃত্যুর ফলে ইসরাইলের মিত্ররা আশা করেন টেকসই একটি শান্তির একমাত্র পথ হলো দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক পরিকল্পনা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button