‘নৈতিক ভুল-ভ্রান্তির’ জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন চুন্নু

অতীতের ‘নৈতিক ভুল-ভ্রান্তির’ জন্য দেশবাসীর কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি বলেছেন, ‘গত প্রায় ৪ বছরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে অনেক ভুল-ভ্রান্তি আমার থাকতে পারে। সেগুলো আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’ রাজনীতি করতে গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে সব সময়ে হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি উল্লেখ করেন চুন্নু।
শনিবার রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় পার্টির ১০তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, “দলের প্রেসিডিয়ামের নেতৃত্বে ২০২৪ সাল থেকে তৃণমূলের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করে- সভা, বৈঠক এবং প্রতিনিধি সম্মেলন করে জেনেছি, তাদের চাহিদা, তাদের স্বপ্নটা কী।”
তিনি বলেন, “আমাদের স্বীকার করতে হবে, সব দিন আমাদের উজ্জ্বল ছিল না। দলের ভেতরে বিভক্তি, নেতৃত্বের সংকট এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে- সন্দেহ নাই। এর ফলে সাধারণ মানুষের আস্থায় কিছুটা হলেও ফাটল ধরেছে, যা মেরামত করা সময়ের দাবি।”
আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, “আমরা বিগত অনেকগুলো নির্বাচন করেছি। অনেক সময় অনেকে আমাদের হয়ত বিভিন্নভাবে কটূক্তি করেন। বিভিন্ন দলের সহযোগী বা স্বৈরসহযোগী হিসেবে আমাদেরকে আখ্যায়িত করেন।”
তিনি বলেন, “একটি কথাই বলব, আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে(আওয়ামী লীগের অধীনে) কোনো বেআইনি কাজ করিনি।
“যদি নৈতিকভাবে ভুল-ভ্রান্তি হয়ে থাকে, সেই জন্য আজকের দিনে এই কাউন্সিলে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাই।”
জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে চুন্নু বলেন, “আদালতের আদেশে আমাদের দলের চেয়ারম্যানের একগুঁয়েমি, দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপ, স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে আদালতের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তার ওপর।”
জাতীয় পার্টি কখনো চ্যালেঞ্জের কাছে মাথা নত করেনি দাবি করে তিনি বলেন, “সেই মুহূর্তে (নিষেধাজ্ঞার পর) প্রেসিডিয়াম- গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা পিছিয়ে যাব না। এগিয়ে যাব। সেই সিদ্ধান্তের ফলে আজকের এই ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশন।”
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত আছেন জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি দলের কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা, জাতীয় মহিলা পার্টির সভাপতি নাজমা আক্তার।