Hot

পণ্যের ঊর্ধ্বমুখিতা যেন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’: বাজার সিন্ডিকেটের নেপথ্যে রাজনীতি!

চিনি ও সয়াবিনের দাম কমানো হলেও এখনো বাজারে আগের দামে পণ্য দু’টি বিক্রি হচ্ছে :: ডিমের দাম বৃদ্ধির পর উল্টো পোল্ট্রি মালিকদের প্রচ্ছন্ন হুমকি ‘ডিম খেতে হলে’ খামার টিকিয়ে রাখতে হবে :: নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ডাল-ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ‘ফ্যামিলি কার্ডধারী‘ নিম্ন আয়ের পরিবারের মাঝে ১৩ আগস্ট টিসিবির পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। সেখানে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, সিÐিকেট ব্যবসায়ীরা দাম না কমালে বিদেশ থেকে ডিম আমদানি করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিলেই ডিম আমদানি শুরু হবে’। কিছুদিন আগে কাচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ার পর বাণিজ্যমন্ত্রী একই বক্তব্য ছিল ‘অসৎ ব্যবসায়ী সিÐিকেট দাম না কমালে ভারত থেকে কাচা মরিচ আমদানি করা হবে’। তারও আগে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মশলা, ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ার পর একই বক্তব্য ‘প্রয়োজনে বিদেশ (ভারত) থেকে আমদানি করা হবে’। এটা বাণিজ্যমন্ত্রীর কমন ডায়লগ। মাঝখানে সংসদের বাজেট অধিবেশনে তিনি নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বাজার সিÐিকেট খুবই শক্তিশালী। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে বিপদে পড়তে হবে’। প্রশ্ন হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার? চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ ও দামের তদারকি হচ্ছে কি? নাকি মহাসম্মেলন করে শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতার রাখার অঙ্গিকার করায় সিÐিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নমনীয়! বিভিন্ন সময় সিÐিকেট করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে কী রাজনীতি কাজ করছে?

দেশে পণ্যের উৎপাদন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক। রাজধানীর বাজারগুলোতে দেখা যায় প্রতিটি পণ্যের প্রচুর সরবরাহ। দোকানে দোকানে পণ্যের পসরা সাজিয়ে দোকানিরা ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন। তারপরও বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। এমনিতেই নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। সংসার চালাতে খরচ কাটছাট করতে হচ্ছে সীমিত আয়ের পরিবারগুলোতে। বাসভাড়া-বাসাভাড়া বেড়েছে, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল বেড়ে গেছে। এসবের বাড়তি অর্থ মেটাতে পরিবারের কর্তারা যখন হিমশিম খাচ্ছেন, তখন খাবার তথা খাদ্য দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখি যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে দেয়ার পর ভ্রাম্যমান আদালত কিছু দোকানে অভিযান চালায়। বেশি দামে পণ্য বিক্রির অপরাধে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। ডিমের নাম বৃদ্ধির পর একই চিত্র ভ্রাম্যমান আদালতে দোকানির জরিমানা করা হচ্ছে। এটাই যেন চিরায়ত নিয়তি এবং নিয়মে পরিণত হয়েছে। এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গুতে রাজধানীর মানুষ পর্যুদস্ত। মশার যন্ত্রণায় সীমাহীন দুর্ভোগে। একটি ডাবের দাম ১৮০ টাকা থেকে ২শ টাকা। ঔষুধের দাম দেড়গুণ থেকে তিনগুন বেড়ে গেছে। সংসারে অর্থের যোগান দিতে অস্বস্তি। সেখানে স্বস্তি নেই মাছ, গোশত, সবজিসহ নিত্যপণ্যের বাজারে। একেক সময় একেক পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরকারের দায়িত্বশীলরা যেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে, বিদেশ থেকে আমদানি করার হুমকি দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজার কিছুটা ওঠানামা করতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করে দাম অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে এবং বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। আগে থেকেই অনেক নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে আছে। এরই মধ্যে সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ডিম, পেঁয়াজ, সবজি ও মাছের দাম। নতুন করে ডিমের বাজারে অস্থিরতা ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের আমিষের মূল চাহিদা পূরণ করছে ডিম এবং ব্রয়লার মুরগি। কিন্তু এ খাতে প্রচুর অস্থিরতা বিরাজ করছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে। ভোক্তাকে কম দামে ডিম খাওয়াতে ডিম আমদানির সুযোগ রয়েছে। এখন আমরা যদি বর্ডার খুলে দেই এবং ভারত থেকে ৬ রুপিতে ডিম আসে, তাহলে দেশে একটি পোল্ট্রিও টিকতে পারবে না, একটি করপোরেট গ্রæপও কম্পিটিশন করতে পারবে না। আমরা আপনাদের (ব্যবসায়ী) ততক্ষণ প্রোটেকশন দেব, যতক্ষণ আপনারা বাজার অস্থির করবেন না। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে যদি ডিম প্রতি ৪ টাকা বেড়ে যায়, তাহলে তো প্রোটেকশন দিব না। কারণ সরকারের ব্যবসায়ীদের প্রোটেকশন দেওয়ার পাশাপাশি ১৭ কোটি মানুষের কথাও ভাবতে হয়।

মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম আবারও ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে গেছে। এক ডজন ডিমে দাম বেড়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও রাজধানীর খুচরা বাজারে ডজন প্রতি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। যা এখন ঠেকেছে রেকর্ড ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। ডিমসহ খাবারের নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ডাল-ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন।

জানা যায়, কিছুদিন আগে ব্রয়লার মুরগি পাইকারি বাজারে পাঠিয়ে রাতে দাম নির্ধারণ করে মোবাইলে খুচরা বিক্রেতাদের জানিয়ে দেয়া হতো। এখন ডিমের ক্ষেত্রেও তাই করছে সিÐিকেট। সরবরাহ প্রতিষ্ঠান থেকে ডিম কেনার পর সঙ্গে দেওয়া হয় খালি ক্রয় রসিদ। অতপর রাতে ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় মুঠোফোনে। সিন্ডিকেট সদস্যরা নিজেরা দাম নির্ধারণ করে গভীর রাতে জানিয়ে দেয় বাজারদর। পরদিন ওই দামেই বিক্রি করা হয় ডিম। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে ডিমের পাইকারি বাজারে এভাবেই চলছে ডিমের বেচাকেনা। এ ব্যাপারে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ক্রয় রসিদে নিজের ইচ্ছেমতো দাম বসিয়ে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভ করছেন।

শুধু ডিম নয়, বৃষ্টির অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোতে বাজারে চার ধরনের নিত্যপণ্যে অস্থিরতা রয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, সবজি ও মাছের দামও। বিশেষ করে সবজির মধ্যে টমেটোর দাম আকাশ ছুঁয়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে পণ্যের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে- এমন গুজবে অনেককে চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য কিনতে দেখা গেছে। এতে বাজারের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। এ সুযোগে দাম বাড়িয়ে চলছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দামও কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজও কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এর সঙ্গে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। আর টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। মাছের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ইলিশের ভরা মৌসুমে ৬০০ বা ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের ইলিশের কেজি এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাজারে রুই-কাতলার কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি রূপচাঁদা ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, আইড় ৮০০ টাকা, পোয়া এক হাজার টাকা, তপসী ১১০০ টাকা, বাইলা ১৪০০ টাকা, পুঁটি ১২০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ টাকা, চিড়িং ৭৫০ টাকা, টেংড়া ৬০০ টাকা, ফলি ৩০০ টাকা, বাছা ৪০০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, শিং ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ টাকা ও কই ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আন্তর্জাতিকবাজারে দাম কমে যাওয়ায় দেশের বাজারে চিনির দাম এবং বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমিয়েছে সরকার। চিনির দাম কেজিতে এবং সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ৫ টাকা করে কমেছে। গত রোববার বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রতিকেজি পরিশোধিত খোলা চিনির দাম হবে ১৩০ টাকা। বর্তমানে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। আর প্রতিকেজি পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম হবে ১৩৫ টাকা। বর্তমানে প্রতিকেজি প্যাকেটজাত চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমিয়ে ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত মাসে সয়াবিন লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে ১৭৯ টাকা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত জানায়। নতুন নির্ধারণ করা এই দাম গতকাল সোমবার থেকে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। কিন্তু রাজধানীরা একাধিক বাজার ঘুরে এবং পাড়া মহল্লার দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোথাও সয়াবিন তেল ও চিনির দাম কমানো হয়নি। বিক্রেতারা বলছেন, পুরনো পণ্য বিক্রি শেষ হওয়ার পর নতুন পণ্য এনে কম দামে বিক্রি করা হবে। অথচ পণ্যের দাম বেড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়।

গত শুক্রবার শনিরআখড়া বাজারে সাপ্তাহিক বাজার করেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। ডিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে তিনি বলেন, গত ১৫ জুলাই এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ীদের করণীয়’ শীর্ষক সম্মেলনে ৩১ ব্যবসায়ী বক্তব্য দেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা ও শিল্পোদ্যোক্তারা সরাসরি বলেছেন, আগামী মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে চান তারা। কয়েকজন সেøাগানে সেøাগানে একই দাবি জানান। দেশের শীর্ষস্থানীয় একজন ব্যবসায়ী গানে গানে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে দেখার অনুভ‚তি প্রকাশ করেন। সম্মেলনে কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই, মেট্রোপলিটন চেম্বার, ঢাকা চেম্বার, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, চট্টগ্রাম চেম্বারসহ দেশের বিভিন্ন চেম্বার ও সংগঠনের নেতারা এবং শিল্পোদ্যোক্তা ও শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকাররা বক্তব্য দেন। ওই সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় রাখার ওয়াদা করেন। ফলে সরকারের সংশ্লিষ্টরা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কেমন করে? তাছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ‘সিÐিকেটের সদস্যরা খুবই শক্তিশালী। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিপদে পড়তে হবে’ বক্তব্য অসাধু ব্যবসায়ীদের আরো বেপরোয়া করে তুলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন ভুক্তোভোগী বললেন, ভোটের কারণে সিÐিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এই ব্যবসায়ীরা ভোটের সময় সরকারি দল আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। বরং এজন্যই বাণিজ্যমন্ত্রী অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।

অস্বাভাবিক ভাবে ডিমের দাম বৃদ্ধির পর গতকাল সোমবার ডিমের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (ফার্ম ও করপোরেট), এজেন্ট-ডিলার ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেখানে সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বৃদ্ধি করা ডিম উৎপাদনকারী বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও ফার্মের প্রতিনিধি বাজার মালিক সমিতি ডিমের দাম বাড়ার পেছনে বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের কথা তুলে ধরেন। পিপলস পোল্ট্রি ফার্ম অ্যান্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল রহমান বলেন, খামার টিকলে আমরা ডিম পাবো, খামার না টিকলে ডিম পাবো না। ডিমের বাজারের এ অস্থিরতাকে দূর করতে খামারিদের টিকিয়ে রাখতে হবে। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, উৎপাদন খরচ সমন্বয় করে ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করতে হবে। তাহলে খামারিরা বাঁচবে। পাশাপাশি ডিম বিক্রিতে পাইকারি, খুচরা ও আড়তদাররা কত লাভ করবেন সেটিও নির্ধারণ করতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. শহীদুল আলম বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই ডিমসহ অন্যন্যা পণ্যের বাজারে এ অস্থিরতা কেটে যাবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button