Bangladesh

পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড!

পুরুষশূন্য মধুখালী এলাকা : ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর এলাকা পরিদর্শন নিহতদের স্বজনের অভিযোগ, এক বান্ডিল রড না দেয়ায় প্রাণ কেড়ে নিল দুই সহোদরের

মধুখালি ডুমাইনের নিহত দুই সহোদর ভাইয়ের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতাম। এক বান্ডিল রড না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্বজনরা। এমন অভিযোগের চাউর হয়ে উঠছে হতাহতদের স্বজনদের মধ্যে। বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন পিটুনিতে নিহত হওয়া দুই যুবকের বাবা মো. শাজাহান খান ও মা আয়শা বেগম।

নিহত আশরাফুল এবং আরশাদুল আপন দুই ভাই। বিবাহ সূত্রে বাবার দুই ঘরের প্রথম পক্ষের সন্তান আশরাফুল এবং আসাদুল। দুই ঘর মিলে ওরা মোট পাঁচ ভাই বোন এবং প্রথম পক্ষের আপন দুই ভাই। ২য় পক্ষে আরো তিন ভাইবোন থাকলেও কামাই-রোজগার করত শুধু ওরা দুইজনই। বাবা-মা প্রায়ই অসুস্থ থাকেন। বৃদ্ধ পিতা-মাতার মুখে হাসি ফোটাতে এবং ছোট ভাইবোনদের মানুষ করতে দুই ভাই মিলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। বাবার দুটি সংসার, তারপরও বোঝার উপায় নাই কে আপন কে পর।

পেশায় দুই ভাই নির্মাণ শ্রমিক। দীর্ঘদিন ধরে তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সেই সূত্র ধরে গত রোজার মধ্যে এবং ঈদের আগে মধুখালী ডুমাইন এলাকার পঞ্চপল্লীর প্রাথমিক বিদ্যালয় দ্বোতলা ভবন নির্মাণের কাজে যান তারা। আশরাফুল এবং আশরাদুলের সাথে কাজে যান আরো তিনজন শ্রমিক। এরা ওদের পূর্ব পরিচিত।
নিহত দুই সহোদরের সাথে শ্রমিক হিসেবে একই জায়গায় কাজ করতো মো. আনোয়ার হোসেন, মো. সিরাজুল ইসলাম, মোঃ নান্নু মন্ডল ও আরো একজন, যার নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

মধুখালী ডুমাইন পঞ্চপল্লী থেকে নিহত আশরাফুল এবং আরশাদুলের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। নিহতদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধ কিছুক্ষণ পরপরই বাবা-মা ভাই-বোন নানা ধরনের বিলাপ করে কান্না করছে। মা চিৎকার দিয়ে সন্তানদের কবরের ওপর আঁছড়ে পড়ছেন। বাবা কিছুক্ষণ পরপর উচ্চস্বরে চিৎকার করছেন। আর মায়ের আহাজারি তো থামছেই না। এক সাথে দুটি লাশ। দুটি গোসলের খাটিয়া। দুটি কবর। এটাই হলো কোলে-পিঠে করে মানুষ করা-বাবার শেষ খবর। ১০ মাস ১০ দিন জঠর যন্ত্রণায় কাবু হওয়া মা পেল এক সাথে দুই সন্তানের লাশ উপহার। এমন কথাই ছিল উপস্থিত সবার মুখে।

দুটি বিবাহযোগ্য ছেলে সন্তান হারোনোয় গোটা পরিবারের স্বজনরাও নিরব নিথর হয়ে গেছেন। কারোর মুখে কোনো কোন ভাষা নেই। নিরব নিথর হয়ে পড়ে আছে সকল স্বজনদের দেহ। কেউ কান্না করছেন। কেউ আবোল-তাবোল কথা বলছেন। গত দুদিন ধরে স্বজনদের মুখে একটু পানি ছাড়া কোনো খাবার দিতে পারেনি কেউ।

শত চেষ্টা করেও বৃদ্ধ বাবা-মাকে কোনোমতেই বোঝানো যাচ্ছে না। কারোর কথা মানছেন না তারা। সন্তানহারা মায়ের চিৎকার দেখে দেখে বাবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। আবার বাবার চিৎকার দেখে মা বেহুঁশ হয়ে পড়ছেন। সাথে ভাইহারা বোন, স্বজনহারা সকল আত্মীয় স্বজন বুক চাপড়ে কান্না করছেন।

শত শত নারী-পুরুষের ভিড় এ বাড়িতে। যারাই আসে নিথর দেহে দাঁড়িয়ে থাকেন। সন্তানহারা বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছেন গ্রামবাসী। কারো মুখে কোনো ভাষা নেই। গ্রামবাসীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসলো শান্তশিষ্ট আদলের দুটি ভাই ছিল আশরাফুল এবং আরশাদুল।

ছোটবেলা থেকে স্কুলের বারান্দা পেরিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার ভাগ্য না হলেও তারা আচার আচরণে ছিল খুবই ভদ্র। এলাকার কোনো মানুষ তাদের বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করার সাহসটুকু দেখায়নি। বাবা-মা ছোট ভাইবোনদের কাছে খুবই প্রিয় ছিল আশরাফুল এবং আসাদুল।

বাবা-মা ও ছোট ভাই বোনের আহাজারি : যদিও আশরাফুল ও আরশাদুল বাবার প্রথম পক্ষের আপন দুই সহোদর। ২য় পক্ষে এক ভাই দুই বোন। ওদের মধ্যে ছিল যথেষ্ঠ মিল মহব্বত। সৎ ভাই বোনকে মানুষ করতে হবে মা-বাবা যেন ক্ষুধায় কষ্ট না করে সেদিকে তাকিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ করে আর হাইস্কুলে যায়নি ওরা। গত ১০/১২ বছর ৪শ’ টাকা বেতনে রাজমিস্ত্রীর যোগালি খেটে বছর ৫ আগে পুরো রাজমিস্ত্রী হয় দুই ভাই। একজন গড়ার কাজ করেন, ছোটজন রডমিস্ত্রি। সুখের মুখ দেখতে না দেখতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের হাতে প্রাণ গেল দুই ছেলের। মা-বাবা চিৎকার করে বলছেন, আমার ছেলেরা বাঁচার জন্য বহু চেষ্টা করেও ছুটতে পারেনি। বাঁচাতে পারেনি প্রাণ। পরিবারের একমাত্র কামাইশোধ এবং উপার্জনের মানুষ ছিল ওরা দু’জন। এখন ছোট ভাই-বোনদের কে মানুষ করবে। পরিবার কে চালাবে।

বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না আশরাফুলের : দুই ভাই কাজ করে বেশ ভালই উপার্জন করছি আরাফুল এবং আরশাদুল। পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছেলের পছন্দের বউকে ঘরে তুলবেন খুব শিগগিরই। স্কুলের কাজ শেষ হলে হাতে একটু বেশি খরচের টাকা রেখে বিয়ে করবে আশরাফুল। বৃদ্ধ বাবা ঘুরে ঘুরে বাড়ীর এলোমেলো কাজগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছেন। কাছের আত্মীয় স্বজনদের ও নিমন্ত্রণ করার প্রস্তুতিও শেষ। বড় সন্তান বিয়ে দেওয়ার দুই বছর পর মেঝ ছেলে আরশাদুলকেও বিয়ে দিবেন মা। মাও পাকাপোক্ত কথা দিয়েছেন কোথাও।
শেষ পর্যন্ত আশা ভরশা সব কিছু হতাশায় পরিণত করে সব শেষ। বাবা-মা ছেলের বিয়ে নতুন বউ না পেয়ে, পেলো দুই সন্তানের জোড়া লাশ।

অপরদিকে, গুরুতর আহত শ্রমিক মোহাম্মদ সিরাজ ও আনোয়ার ও নান্নু মণ্ডলের বাড়িতেও চলছে কান্নাকাটি। কারণ নিহত দুই ভাইয়ের সাথে এরা দুজন গুরুতর আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

ইনকিলাবের সাথে কথা হয় সিরাজুলের নিকট আত্মীয় বোয়ালমারির গৌরীপুরের মো. হাসান মিয়ার সাথে। তিনি ইনকিলাবকে জানান, সিরাজুলকেও হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়। তার মাথায়, বুকে, পিঠে গুরুতর জখম আছে। তিনি আরো জানান, আমার দেখা মতে সিরাজুল এর দুটি পা ভাঙা। এখন আল্লাহই ভাল জানেন সে বাঁচাবে কিনা? আহত সিরাজুলের পাঁচটি ছেলে-মেয়ে। কাজ করলে ভাত খায়, কাজ না পেলে সন্ধ্যাবেলা না খেয়ে থাকে। চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।

মো. হাসান মিয়া আরো জানান, আমি জানতে পেরেছি গত রোজার ঈদের আগে নিহত আশরাফুল, আরশাদুল এর সাথে সিরাজুল যখন কাজ করতে যায় তখন ওই এলাকার কিছু যুবক এসে ওদের কাছে এক বান্ডিল রড অথবা একটু বেশি পরিমাণে টাকা দাবি করে। তারা রড অথবা টাকা দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে অজ্ঞাতনামা ওই যুবকদের সাথে নিহত আশরাফুল এবং আসাদুল শিরাজসহ অনেকের সাথে কথার কাটাকাটি হয়। এর মধ্যে আসাদুল এবং আশরাফুলের সাথে তাদের তর্ক হয় বেশি। নিহত দুই যুব তার বাবাকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানিয়েছিল এবং আমার সাথে শেয়ার করেছেন। এ কারণে ঈদের আগেই কাজ বন্ধ করে আশরাফুল এবং আরশাদুলকে বাবা তাদের বাড়িতে ডেকে নেন।

অপরদিকে, ইনকিলাবের সাথে কথা হয় নিহত দুই যুবকের আপন চাচা আব্দুর রাজ্জাক খানের সাথে। তিনি ইনকিলাবকে জানান, আমরা জানতে পেরেছি মধুখালী ডুমাইনের পঞ্চপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাজ করার সময় ওদের কাছে স্থানীয় কয়েক যুবক এক বান্ডেল রড অথবা একটু বেশি পরিমাণে টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে ওদের সাথে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। আশরাফুল এবং আশাদুলকে হুমকিও দেয় তারা। বিষয়টি ওর বাবার সাথে আলাপ করছেন আমি শুনেছি।

পরে ওদের আর কাজে যেতে দেইনি আমরা। শেষ পর্যন্ত নির্মাণাধীন কাজের ঠিকাদারের সাথে কথা বলে ওদেরকে আবারো কাজে পাঠানো হয়। শেষ পর্যন্ত আমার দুটি ভাতিজা লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। এ বিচার এখন কার কাছে দেবো।

তবে কে বা কারা তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে এবং এই ঘটনাটি আগের থেকে সাজানো কিনা এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তবে তিনি একটা কথা বলেছেন যারা আহত আছে এবং চিকিৎসা নিচ্ছে তাদেরকে আল্লাহ যদি ফিরিয়ে আনেন হয়তো তাদের মুখ থেকে শোনা যাবে ওই যুবকদের নাম কী অথবা তারা দেখলে চিনতে পারেন কিনা।

মন্দিরে আগুন নাটক কেন? : নিহত ও আহতদের পরিবার মনে করেন, তাদের স্বজনরা এতটাই নিরীহ এ ধরনের কাজ করার মানসিকতাই এদের নাই এবং ওরা করতেই পারে না। তাদের ধারণা, ঘটনার আগেই পূর্বশত্রুতা এবং কথার কাটাকাটির জের এক বান্ডিল রড দিতে অস্বীকার করা অথবা সমপরিমাণ বকশিস না দেয়া নিয়ে ঘটনার দিন একটু বেশি পর্যায়ে কিছু ঘটনা ঘটে। মারামারি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে হয়তোবা। এক পর্যায়ে ওই ক্ষুব্ধ যুবকরা ওদের ওপর অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনে কাতর হয়ে পড়ে সবাই। মোটা দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করায় ওরা দুই ভাই ছুটতেই পারেনি। এর মধ্যে দুই জন প্রচণ্ড রক্তাক্ত জখম হয়ে দৌড়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে। ওই স্থান থেকে প্রধান সড়কে উঠে পুলিশের সাহায্যে মধুখালি থানা গেলে প্রাণে রক্ষা পান তারা। পুলিশ তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন বলে গুরুতর আহত সিরাজুলের স্বজনরা ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেন। আহতের এক যুবকের আত্মীয় হাসান জানান, আমি গোপনে একজনের শুনেছি অতিরিক্ত নির্যাতনে আশরাফুল এবং আরশাদুল ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং নিজেরা বাঁচার জন্য মন্দিরে আগুন লাগার নাটকের সূত্রপাত করে। নিহত ও আহত যুবকদের স্থানীয় সুশীল সমাজের এবং শিক্ষিত সমাজ মনে করেন আহত যুবকদের কাছ থেকেই জানা যাবে এক বান্ডিল রড অথবা সমপরিমাণ টাকা চাওয়া যুবকরা কারা? তাদের পরিচয় কী? তাদের দেখতে কেমন। যতদুর তারা জানতে পারছেন ওই যুবকদের বাড়ী নির্মাণাধীন ভবনের একদম কাছে। এদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলেই মন্দিরে আগুন নাটকের অবসান ঘটবে।

পরুষশূন্য পঞ্চপল্লী ও ডুমাইন এলাকা : এ ঘটনায় পৃথক পৃথক তিনটি মামলা আমলে নিয়েছেন ফরিদপুর জেলা পুলিশ। পুলিশি ভয়ে এবং গ্রেফতার আতঙ্কে পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। সরেজমিন অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে এলাকায় অঘোষিত কারফিউ চলছে।
নিছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে তিন বাহিনী : ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার এবং জেলা পুলিশ সুপার মো. মোর্শেদ আলমের তাৎক্ষণিক বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পূর্বের ঘটনা ছাড়া কোন ধরনের অঘটন ঘটেনি। ডুমাইন পঞ্চপল্লীতে জেলা পুলিশ বাহিনীর নিছিদ্র নিরাপত্তায় এলাকায় সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রশংসা করছেন। এলাকার শান্তি রক্ষার স্বার্থে মধুখালি ডুমাইনে জেলা পুলিশসহ বিজিবি, র‌্যাব এবং বিশেষ পুলিশ দিনরাত টহল জোরদার রেখেছেন।

ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর এলাকা পরিদর্শন : উল্লেখিত ঘটনাস্থলে গতকাল শনিবার দুপুরে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানসহ সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেন এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। পরে তিনি বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসকের হলরুমে এক সামাজিক-সম্প্রীতি কমিটির সভায় তিনি বক্তব্য দেন। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি সকল ধর্মের মানুষকে শান্তি সম্প্রীতি বজায় রেখে চলার অনুরোধ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একে আজাদ, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ঝর্না হাসান, এসপি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার গভীররাতে মধুখালি ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী এলাকায় মন্দিরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ এনে আপন দুই সহোদর আশরাফুল ও আরশাদুলকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা পিটিয়ে হত্যা করে। গুরুতর আহত হয় তাদের সঙ্গে নির্মম নির্যাতনের শিকার আরো তিনজন নির্মাণ শ্রমিক।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d