Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলছে ৩৩ হাজার মামলা

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণ মামলার বিচারে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার পরও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। আইনি মারপ্যাঁচে অধিকাংশ অপরাধী আদালত থেকে খালাস পাচ্ছে। বিচারের পাশাপাশি মামলার তদন্তেও হয় কালক্ষেপণ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ ধরনের মামলার বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা বলা হলেও তা হচ্ছে না। প্রায় ৩৩ হাজার মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে অধস্তন আদালতে বিচারাধীন। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা থাকায় আসামিরাও আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিও উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অধস্তন আদালতে ১ লাখ ৫১ হাজার ৩১৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে অধস্তন আদালতে বিচারাধীন ৩২ হাজার ৯৭২টি মামলা। উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে অন্য ১ হাজার ৬০৭টি মামলা। এদিকে পুলিশের কাছে তদন্তাধীন ২০ হাজার ১৩৫টি মামলা, যা মোট মামলার ৩৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।

দেশে ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ২০২০ সালে আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হয়। এর পাঁচ বছর পরও ধর্ষণের ঘটনা কমেনি। সম্প্রতি মাগুরায় শিশু ধর্ষণসহ বিভিন্ন জেলায় ধর্ষণের আটটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এ নিয়ে উত্তাল সারাদেশ। বিচারের ধীরগতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকেও ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সরকার, আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিজ নিজ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে উদাসীনতাকেও দায়ী করছেন অনেকে।

এ প্রসঙ্গে ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘আইনগুলো জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়ে থাকে। ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধানও সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী আইনে যুক্ত করা হয়েছিল। আইনে মামলার তদন্ত ও বিচারের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া রয়েছে। উচ্চ আদালতেরও অনেক নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু কোনোভাবে সেগুলো কার্যকর হচ্ছে না। এতে নারী ও শিশু নির্যাতনকারীরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। এ জন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী।’

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক মামলাগুলোর বিচারে সরকার বিশেষ আদালত স্থাপন করেছে। অতীতেও হয়েছে। কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতনের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করেই সংশ্লিষ্টরা দায় এড়িয়েছে। এটিকে কীভাবে আরও কার্যকর করা যায়, সেটি অনেকাংশেই উপেক্ষিত। আইনে অনেক কঠোর ব্যবস্থা থাকলেও বিচারের জন্য সেটা কি কার্যকরের উপায় আছে? বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতায় বরং আসামিরা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে।’ তাঁর মতে, জামিনের সঙ্গে অপরাধীকে আর্থিক দণ্ডারোপ করা প্রয়োজন। অর্থাৎ, জামিনের সঙ্গে অফেরতযোগ্য কোর্ট ফি দেওয়ার শর্তারোপ করা উচিত। সেটা ৫ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এতে জামিন বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আসবে এবং অপরাধীরাও আইনের অপব্যবহার করতে পারবে না।

বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অনেকগুলো অপরাধের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। গণদাবির মুখে আইন সংশোধন করে ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এটি মনে রাখা দরকার, আইনে শাস্তি যত কঠিন হবে, এর প্রয়োগ ততই জটিল হবে। এতে বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেয়।’ তাঁর মতে, অপ্রিয় হলেও সত্য, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় শাস্তির বিধান কমানো উচিত। তাতে বিচারের গতি কিছুটা হলেও বাড়বে এবং যে আদেশ বা রায় হবে, সেটা কার্যকর হবে। বিচারপ্রার্থীরা বিচার পাবেন। শাস্তি কমলে আইনের প্রয়োগের ধাপগুলো সহজতর হবে। 

আইনে যা আছে

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত আইন ২০১৩ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালকে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করতে হবে। একই আইনে কয়েকটি ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, ট্রাইব্যুনাল যদি ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার কারণসংবলিত একটি প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করবেন, যার একটি অনুলিপি সরকারকেও দিতে হবে। তা ছাড়া এ ক্ষেত্রে পাবলিক প্রসিকিউটর ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকেও ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে কারণ উল্লেখপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ রকম দাখিলকৃত প্রতিবেদনগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিবেচিত হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই আইন অনুযায়ী পুলিশ যদি অভিযোগ গ্রহণ না করে, সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি বিচারের জন্য অভিযোগ নিতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আইনের ধারাগুলো ছাপার অক্ষরেই ‘শোভাবর্ধন’ করছে। এর কোনো প্রয়োগ নেই। 

২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল যদি ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে কারণসংবলিত প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করবেন। আইনটি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও তদন্ত কর্মকর্তাদের (পুলিশ) প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে দু-চারটির বেশি নজির নেই।

জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা জজ মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’

বর্তমান চিত্র

পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে ১৭ হাজার ৫৭১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। অথচ এর আগের পাঁচ বছরের চিত্র অনেকটা ভিন্ন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ২১ হাজার ৭৬৪টি, ২০২০ সালে ২২ হাজার ৫১৭, ২০২১ সালে ২২ হাজার ১৩৬, ২০২২ সালে ২১ হাজার ৭৬৬ এবং ২০২৩ সালে ১৮ হাজার ৯৪১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) তথ্য অনুসারে, ২০২০-২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৫৮ জন নারী ও মেয়েশিশু নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৬ হাজার ৩০৫ জনকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যাদের ধর্ষণ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৪৭১ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে, যা মোট ঘটনার ৫৫ শতাংশেরও বেশি। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৯ নারী ও কন্যাশিশুকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ২০৭ জনকে যৌন সহিংসতার পর হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু। এ ছাড়া অন্তত ৫০ জন ভয়াবহ সহিংসতায় মানসিক যন্ত্রণা (ট্রমা) সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৪০১ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ‑পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৪ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন সাতজন। ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছেন ১০৯ জন। এর মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টার পর হত্যা করা হয় একজনকে।

বিচারাধীন মামলা 

তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ১৫ হাজার ২১৩টি নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। ঢাকায় এসব মামলা বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনালের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। আদালতের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ঢাকার ৯টি ট্রাইব্যুনালে ৯৯২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি মামলা বিচারাধীন চট্টগ্রামে। এই জেলায় সাতটি ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার বিচার করা হয়। এসব ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ৭ হাজার ৭৯৪টি মামলা বিচারাধীন। চট্টগ্রামের সাতটি ট্রাইব্যুনালে গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, তিন  মাসে ৫৩৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারাধীন মামলার সংখ্যার বিচারে দেশের সবচেয়ে কম মামলা রয়েছে পঞ্চগড়ে। এই জেলায় ২৫৫টি মামলা বিচারাধীন। 

ঝুলে থাকে তদন্ত

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতনের মোট মামলার ২০ হাজার ১৮৩টি পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য রয়েছে। আইন অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশের তদন্ত নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না। বর্তমানে পুলিশের কাছে সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ১ হাজার ৫৫৬, নরসিংদীতে ১ হাজার ৫৭৪ ও রংপুরে ১ হাজার ১১৫টি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আইনশৃঙ্খলার ভঙ্গুর অবস্থার কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে হওয়া মামলাগুলোর বিচার হচ্ছে না। অনেক ঘটনা প্রকাশ্যেই আসছে না। পুলিশ রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে ব্যস্ত। অথচ সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন-সংক্রান্ত মামলাগুলো তদন্তের জন্য আলাদা পুলিশ নিয়োগের ব্যবস্থা থাকা উচিত। নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন, ধর্ষণ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে আরও সোচ্চার হতে হবে। 

ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার বিচারে ধীরগতি প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে তদন্তের সময় ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে। আর ধর্ষণের মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে। অংশীজনের সঙ্গে কিছু পরামর্শ করে বিষয়টি শিগগির চূড়ান্ত করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, নতুন সংশোধনীতে বলা হবে, তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে যাকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তাকেই তদন্ত কাজ শেষ করতে হবে এবং তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই। তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা যাবে না। একইভাবে ধর্ষণের মামলাও ৯০ দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে। বিচার শেষ হয়নি, এমন অজুহাতে কাউকে জামিন দেওয়া যাবে না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto