International

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জঙ্গি হামলার পর নিহত অন্তত ৬০

রোববার ও সোমবারের হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১২ জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে জানান তিনি।

পাকিস্তানের অস্থিতিশীল বেলুচিস্তান প্রদেশে থানা, রেললাইন ও মহাসড়কে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের একাধিক হামলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর পালটা অভিযানে ৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২৬ আগস্ট) স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। এটি জাতিগত বিদ্রোহীদের দ্বারা কয়েক বছরের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে বড় হামলা।

এ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশটির বিচ্ছিন্নতার জন্য কয়েক দশক ধরে চেষ্টা করছে। বেলুচিস্তানে একটি কৌশলগত বন্দর এবং সোনা ও তামার খনির মতো চীনা-নেতৃত্বাধীন কিছু বড় প্রকল্প রয়েছে।

‘এসব হামলা পাকিস্তানে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা,’ এক বিবৃতিতে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি।

রোববার ও সোমবারের হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে ১২ জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে জানান তিনি।

সবচেয়ে বড় হামলায় একটিতে মহাসড়কে বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকে আক্রমণ চালিয়েছে জঙ্গিরা। এতে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। আগুন দেওয়া হয়েছে ৩৫টি গাড়িতে।

রোববার রাতে সশস্ত্র লোকজন বেলুচিস্তানের একটি মহাসড়ক অবরোধ করে যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।

এরপর তাদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করার পরে তাদেরকে গুলি করে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একজন সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট আইয়ুব আচাকজাই।

মুসাখাইল এলাকায় মহাসড়কে ট্রাকসহ ৩৫টির মতো গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

ওই এলাকার ডেপুটি কমিশনার হামিদ জহির বলেন, ‘সশস্ত্র ব্যক্তিরা কেবল যাত্রীদেরই হত্যা করেনি বরং কয়লা বহনকারী ট্রাকের চালকদেরও হত্যা করেছে।’

রেলওয়ে কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ বলেছেন, প্রাদেশিক রাজধানীকে পাকিস্তানের বাকি অংশ ও প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সংযোগকারী একটি রেল সেতুতে বিস্ফোরণের পর কোয়েটার সঙ্গে রেল চলাচল স্থগিত করা হয়।

পুলিশ বলেছে, এটি রেলওয়ে সেতুতে হামলার স্থানের কাছে ছয়টি অজ্ঞাত লাশ পেয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, বেলুচিস্তানে পুলিশ ও নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে পৃথক হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা অন্তত ১০ জনকে হত্যা করেছে।

জঙ্গিগোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব হামলা দায় স্বীকার করেছে।

এছাড়া একটি বড় আধাসামরিক ঘাঁটিতে হামলাসহ আরও কয়েকটি হামলা চালানোরও দাবি করেছে এটি, যদিও পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এখনও এসব হামলার কথা নিশ্চিত করেনি।

বিএলএ হলো বেশ কয়েকটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এটি কয়েক দশক ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।

গোষ্ঠীটির দাবি, পাকিস্তান সরকার বেলুচিস্তানের গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অন্যায়ভাবে শোষণ করে। এটি চীনের বহিষ্কার এবং প্রদেশটির স্বাধীনতা চায়।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ নিরাপত্তা বাহিনী এসব হামলার প্রতিশোধ নেবে এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনবে বলে অঙ্গীকার করেছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button