International

পাপুয়া নিউগিনিতে দাঙ্গায় নিহত ১৫, জরুরি অবস্থা জারি

রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনির রাজধানী পোর্ট মোর্সবিতে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ ও সরকারি চাকরিজীবীরা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন। এরপরই রাজধানীতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ লোকজন সেখানকার বাড়িঘর, গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন, দোকানপাট ভাঙচুর করেন।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এর জের ধরে রাজধানী থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে লে শহরেও দাঙ্গা শুরু হয়। এসব সহিংসতা ও দাঙ্গায় ১৫ জন নিহত হন।

এই পরিস্থিতিতে রাজধানীতে ১৪ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারেপ আজ বৃহস্পতিবার বলেছেন,  ‘যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ব্যবস্থা নিতে’ এক হাজারের বেশি সৈন্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সর্বশেষ বেতন চেকে দেখা যায় তাঁদের বেতন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। এরপরই পুলিশ ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা বুধবার পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ ধর্মঘট করেন। যদিও কর্তৃপক্ষ বলেছে এটি (বেতন কমানো) ভুলে হয়েছে।

আগে থেকেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রটি উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্বের সংকটে ভুগছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারেপ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ‘আইন ভঙ্গ করে বিশেষ কিছু আদায় করা যায় না।’

যদিও সৈন্য মোতায়েনের পর এবং পুলিশ পুনরায় কাজ শুরু করলে বেশির ভাগ সহিংসতার ঘটনাই বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে দমন করা হয়। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এখনো উত্তেজনা’ বিরাজ করছে।

সহিংসতা ও দাঙ্গার সময় অনেকে রাস্তায় নেমে এসে ভাঙচুর করে

সহিংসতা ও দাঙ্গার সময় অনেকে রাস্তায় নেমে এসে ভাঙচুর করে

পোর্ট মোর্সবি জেনারেল হাসপাতাল নিশ্চিত করেছে রাজধানীতে আটজন নিহত হয়েছেন। আর অন্য সাতজন দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লেতে নিহত হয়েছেন বলে বলা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন বিবিসিকে বলেন, পুলিশের অনুপস্থিতিতে রাজধানীর উপকণ্ঠে লোকজন দোকানপাটে ভাঙচুর এ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালান।

ন্যাশনাল ক্যাপিটাল ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর পউস পার্কোপ রেডিওতে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের দেশে নজিরবিহীন দাঙ্গা দেখছি, এর আগে আমাদের দেশ ও শহরের ইতিহাসে এ ধরনের কোনো কিছুই ঘটেনি। লুটপাট করছে ‘সুযোগসন্ধানীরা’। বিক্ষোভকারী কিছু পুলিশের দ্বারাও কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

বেতনের প্রসঙ্গে জেমস বলেন, কম্পিউটারের ভুলের কারণে এমনটা হয়েছে। ভুলে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত কেটে নেওয়া হয়েছিল। পরের মাসের বেতনেই এই ভুল ঠিক করে দেওয়া হবে।

ক্ষুব্ধ লোকজন অনেক বাড়িঘর ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়

ক্ষুব্ধ লোকজন অনেক বাড়িঘর ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়

তবে প্রেসিডেন্টের এই উত্তর অনেক বিক্ষোভকারীকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অনেকে পার্লামেন্ট ভবনে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর কম্পাউন্ডের বাইরে একটি গাড়িতে আগুন দেন এবং একটি ফটক গুঁড়িয়ে দেন।

অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, সরকার আয়কর বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button