হুমকির মুখে পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত রাশিয়ার
রাশিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। রবিবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান আন্দ্রেই কার্তাপোলভ জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকি বাড়লে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় পরিবর্তন করতে পারে মস্কো। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, যা ১৯৬২ সালের কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর সবচেয়ে বড় সংঘাত হিসেবে ধরা হচ্ছে। গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিতে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্দ্রেই কার্তাপোলভ, যিনি একসময় সিরিয়ায় রাশিয়ান বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন এবং বর্তমানে ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির একজন আইনপ্রণেতা বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালায় নির্দিষ্ট পরিবর্তনের আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
রাশিয়ার ২০২০ সালের পারমাণবিক নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাপকভাবে পারমাণবিক বা গণবিধ্বংসী অস্ত্রের হামলার মুখে পড়লে অথবা প্রচলিত অস্ত্রের হামলায় যখন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে, তখনই কেবল প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
বর্তমানে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের প্রায় ৮৮ শতাংশ পারমাণবিক অস্ত্র এই দুই দেশের হাতে রয়েছে। উভয় দেশই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণ করছে। এদিকে চীনও দ্রুত তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার বাড়াচ্ছে।
এ মাসে পুতিন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনে পারমাণবিক সংঘাতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে বিজয় নিশ্চিত করতে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার দরকার নেই। তবে প্রয়োজনে রাশিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্তের জায়গা বদলাতে পারে। এটি রাশিয়ার কট্টরপন্থীদের পক্ষ থেকে পুতিনের ওপর চাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত সপ্তাহে পুতিন আবার বলেছেন, মস্কোকে পারমাণবিক অস্ত্রের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হতে পারে, কারণ রাশিয়ার প্রতিপক্ষরা নতুন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে হাঁটছে।