পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালাতে পারেন পুতিন
পশ্চিমা দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে দেয় এবং সেগুলো রুশ ভূখণ্ডে আঘাত হানে, তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিশোধ হিসেবে ব্রিটিশ সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করতে পারেন, এমনকি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষাও চালাতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা এখন নতুন ও বিপজ্জনক এক পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়াশিংটনে বৈঠকে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মার্কিন এটিএসিএমএস এবং ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করেছেন, যা রাশিয়ার ভেতরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
পুতিন বৃহস্পতিবার পশ্চিমাদের সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনকে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হলে রাশিয়া ও পশ্চিমের মধ্যে যুদ্ধের ধরন বদলে যাবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে এর একটি ‘উপযুক্ত’ প্রতিক্রিয়া হবে, যদিও সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ করেননি। তবে, পুতিন ইতিপূর্বে বলেছিলেন যে রাশিয়া পশ্চিমের শত্রুদের অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে এবং পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে।
হামবুর্গের ইনস্টিটিউট ফর পিস রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির অস্ত্র বিশেষজ্ঞ উলরিখ কুহন মনে করেন, পুতিন পারমাণবিক বার্তা দিতে একটি পরীক্ষা চালাতে পারেন। কুহনের মতে, যদি রাশিয়া পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়, তবে তা হবে অত্যন্ত বিপজ্জনক এক মুহূর্ত। তিনি সতর্ক করে বলেন, পুতিন যদি পশ্চিমা সমর্থনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিক্রিয়া না দেখান, তবে তাকে দুর্বল হিসেবে দেখা হতে পারে।
অস্ট্রিয়ার ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গেরহার্ড ম্যাংগটও বলেন, পারমাণবিক সংকেত দেওয়ার জন্য রাশিয়া হয়তো পরীক্ষা চালাতে পারে, যদিও এটি সম্ভব হলেও অত্যন্ত অস্বাভাবিক। রাশিয়ার জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনজিয়া শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করতে দেওয়া হয়, তবে ন্যাটো সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াবে।
পশ্চিমা দেশগুলো এখনো নিশ্চিতভাবে জানে না পুতিনের ‘রেড লাইন’ কোথায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমা অস্ত্র ও স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে ইউক্রেনকে সহায়তা করা রাশিয়ার স্বার্থের প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাশিয়া পারমাণবিক পরীক্ষা করবে, নাকি ব্রিটিশ সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানবে, তা সময়ই বলবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পুতিন হয়তো ইউক্রেনের ওপর হামলা বাড়ানোর মতো পদক্ষেপ নেবেন বা ইউরোপে হাইব্রিড যুদ্ধের কার্যক্রম আরও তীব্র করবেন।