Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

পিটার হাস্‌কে নিয়ে অস্বস্তির কথা বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছিল হাসিনা সরকার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের সম্পর্ক ‘টানাপড়েন’, ‘তিক্ততা’র পর্যায় পার হয়ে প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল! উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে গিয়ে দলবদ্ধভাবে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌কে টার্গেট করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ধারণা ছিল আগের মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নানাভাবে হেনস্তার ধারাবাহিকতায় পিটার হাস্‌কেও ঘায়েল করতে পারলে বাইডেন প্রশাসনকে বাগে আনা যাবে। অবশ্য দিল্লিকে দিয়ে ওয়াশিংটনকে ম্যানেজ করার চেষ্টা আগে থেকেই চলছিল। ঢাকা ও ওয়াশিংটনের দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র বলছে, পিটার হাস্‌-এর সঙ্গে কাজ করতে সরকারের অস্বস্তির বিষয়টি ২০২৩ সালের অক্টোবরেই বাইডেন প্রশাসনকে জানানো হয়। সেই সময়ে দেশের রাজনীতি ছিল উত্তাল। বিরোধীরা ২৮শে অক্টোবরের কর্মসূচি বাস্তবায়নে ছিল তৎপর। ওই কর্মসূচি ঠেকাতে সরকার ছিল মরিয়া। ওই সময়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ বাড়াতে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে পেট্রোবাংলার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি চলছিল। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো প্রতিনিধিকে ওই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানো হবে এমন গোঁ ধরেছিল শেখ হাসিনা সরকার। কূটনৈতিক চ্যানেলে সেই বার্তা পাঠানো হয়েছিল ওয়াশিংটনে। কিন্তু না, বাইডেন প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌কে ছাড়া ওই চুক্তিই হবে না। অবশেষে সরকার কৌশলগত কারণে অর্থাৎ চুক্তির স্বার্থে ৮ই নভেম্বর ঢাকার চুক্তি সই অনুষ্ঠানে পিটার হাস্‌কে বিশেষ অতিথি করতে বাধ্য হয়। মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি (এসপিএ) ছাড়াও মহেশখালী এলএনজি টার্মিনালের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পায়রা বন্দর এলাকায় আরেকটি ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণ বিষয়ে টার্ম শিট সই হয় সেই অনুষ্ঠানে। এতে সেই সময়ের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, হাসিনা সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ছাড়াও এক্সিলারেট এনার্জি, জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএল’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ২৩শে জুলাই ঢাকা মিশন শেষ করেছেন পিটার হাস্‌। অক্টোবরে ওয়াশিংটনে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছেন, এরইমধ্যে ঢাকাও ঘুরে গেছেন। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, নির্বাচনের পূর্বের ৩ মাস অর্থাৎ অক্টোবর টু ডিসেম্বর পিটার হাস্‌ এবং তার টিম নিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের অস্বস্তি চরমে উঠেছিল। তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ আসছিল দলের বিভিন্ন ফোরাম থেকে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের সভা থেকেও রাষ্ট্রদূতকে অবাঞ্ছিত করার দাবি উঠেছিল। ফরেন সার্ভিস একাডেমির ওই সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা আমেরিকা এবং তার রাষ্ট্রদূতের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। উদ্দেশ্য প্রথমত: বাইডেন প্রশাসন যেন সমালোচনা থামাতে পিটার হাস্‌কে নিজে থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। জনগণের অর্থে নিয়োগ করা লবিস্টরা ওয়াশিংটনে সেই লবিং করছিলেন। দ্বিতীয় টার্গেট ছিল নির্বাচন পর্যন্ত পিটার হাস্‌ যেন ঢাকায় তেমন তৎপরতা না দেখান। সে বিষয়ে বিভিন্ন মারফত দফায় দফায় অনুরোধ যাচ্ছিলো বাইডেন প্রশাসনের কাছে। এ নিয়ে যে ওয়াশিংটনে ‘পিটার হাস্‌-এর মুরুব্বিদের সঙ্গে সরকারের কথা হয়েছে’ তা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রাজধানীতে সভা করে মিস্টার কাদের বলেন, তিনি (ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত) কী করবেন? ভিসা নীতি দেবেন, নিষেধাজ্ঞা দেবেন? তার মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে। আমেরিকার মুরুব্বি যারা, তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ। উচ্চপর্যায়েও কথাবার্তা হয়েছে। তলে তলে সব (সমঝোতা) হয়ে গেছে।’ মার্কিন দূতের ঢাকার তৎপরতা নিয়ে কাদের সেদিন আরও বলেন, ‘তারা দৌড়ায় পিটার হাস্‌-এর কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে যায়, দুপুরে লাঞ্চ করতে যায়, সন্ধ্যার পর নাশতা করতে যায়। আমি জানি না, হাস্‌ সাহেব ফখরুলকে কী স্বপ্ন দেখিয়েছেন? তবে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। ফখরুল সাহেব, দিল্লি বহুদূর।’ রাষ্ট্রদূতকে নিবৃত্ত করতে আওয়ামী লীগ সরকারের বহুমুখী তৎপরতার সঙ্গে অনেকে নভেম্বরে পিটার হাস্‌-এর আচমকা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি মেলানোর চেষ্টা করেন। সরকারকে জানিয়ে ১৬ই নভেম্বর ছুটি কাটাতে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন পিটার হাস্‌। বিষয়টি সেদিনই গণমাধ্যমে আসে। যদিও সরকার আগে থেকেই জানতো। বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাসের নজিরবিহীন তৎপরতার মধ্যে পিটার হাসের বিদেশ সফর নিয়ে তখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ১০দিন ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফিরেন পিটার হাস্‌, তখনো তাকে নিয়ে সরকারের অস্বস্তি কিংবা বিরোধীদের সমালোচনা কোনোটাই থামেনি। দিন যত গড়াতে থাকে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি দিল্লির সমর্থন ততই প্রকাশ্য হতে থাকে। একপর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে ওয়াশিংটন ঘোষিত ভিসানীতি এবং মার্কিন দূতের অব্যাহত আহ্বান অগ্রাহ্য করে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায় শেখ হাসিনা সরকার। তারা লবিস্ট নিয়োগ করে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দুনিয়া থেকে ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে মর্মে সার্টিফিকেট যোগাড়ে’ পর্যবেক্ষক ভাড়া করেন। তবে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। দুনিয়া এটা বুঝতেছিল যে, বাংলাদেশে একতরফা একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ভোটের দু’দিন আগে ঢাকায় থাকা বিদেশি মিশনের কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা জানাতে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে রাশিয়া, চীন, জাপান, বৃটেন, জার্মানিসহ অনেক দেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকলেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌ সেগুনবাগিচায় আগাম বার্তা পাঠিয়ে তাতে অংশগ্রহণে অপারগতা জানান। অবশ্য ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাও সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন না। উভয় দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের জুনিয়র সহকর্মীরা। ৭ই জানুয়ারির আলোচিত নির্বাচনের পর পুনঃনির্বাচিত হাসিনা সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে নেয়ার বার্তা দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এটাও ফলাও করে আত্মতৃপ্তি নেয়ার চেষ্টা করে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথা শেখ হাসিনার সরকার। নির্বাচনের পর তখনো রাষ্ট্রদূত নীরব। দু’মাসের মাথায় রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌ নির্বাচন নিয়ে নিজের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। বলেন, ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলেছিল, যা বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে। কিন্তু তা ঘটেনি। কিন্তু তারপরও আমরা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে সেই ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করবো। আমি এরই মধ্যে নতুন সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছি। সেখানে তিনি এটাও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনো বাংলাদেশ ও বিশ্বের সর্বত্র গণতন্ত্রের বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে। তিনি বলেন, “সহজ করে বলতে গেলে, আমরা বিশ্বাস করি, দেশের মানুষের কল্যাণে গণতন্ত্র হলো স্থায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের সর্বোত্তম উপায়। আমরা সাহসী নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকারকর্মীদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবো। যেসব গণমাধ্যমকর্মী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিয়মতান্ত্রিক দমন ও হয়রানির শিকার হন, তা অবসানের আহ্বান আমরা অব্যাহত রাখবো। বাক্‌ ও সমাবেশের স্বাধীনতা যাতে বজায় থাকে, সে ব্যাপারে আমরা চাপ অব্যাহত রাখবো। আমরা আরও উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক সমাজের পথকে সুগম করতে অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানানো অব্যাহত রাখবো।” তার সেই বক্তব্যকেও ভালোভাবে নেয়নি সরকার। তাছাড়া মার্চে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে পৃথক নৈশভোজে মিলিত হন পিটার হাস্‌। এটা প্রকাশ্যে আসার পর তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব। তার প্রেক্ষিতেই চটজলদি ব্যবস্থা নেয়া হয়। সে সময় কেবলমাত্র মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে টার্গেট করেই সব রাষ্ট্রদূতের পুলিশ প্রটেকশন প্রত্যাহার করার নির্দয় সিদ্ধান্ত আসে। ভারত সহ বিভিন্ন দেশের প্রতি এমন আচরণে কূটনৈতিক পল্লীতে সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও সেগুনবাগিচার সংশ্লিষ্টরা একধরনের তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন। যদিও নিরাপত্তাহীনতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিজের ফ্ল্যাগটি গোপন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বাইডেন প্রশাসন গত মে মাসে ঢাকায় নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ঘোষণা দেয়। সেটাকেও আগের রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তৎকালীন হাসিনা প্রশাসন। বলা হয়, ২০২৫ সালে আমেরিকায় নতুন সরকার আসার আগে নতুন রাষ্ট্রদূত যোগদান করতে পারবেন না। এটা জেনেও বছরের ৭ মাস বাকি থাকতে নতুৃন দূত পাঠানোর ঘোষণা নাকি শেখ হাসিনা সরকারের অনুরোধেই হয়েছে! বিদায়ী মার্কিন দূতকে নিয়ে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়ে যখন তিনি বিদায়ী সাক্ষাৎ চাননি। জুলাই আন্দোলন নিয়ে (২১শে জুলাই) সরকারের ব্রিফিংয়ের দু’দিনের মাথায় প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কারও সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ ছাড়াই পিটার হাস্‌ ঢাকা ছেড়ে যান।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto