পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশ!
কমিউনিটি পুলিশিং ডের অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশের চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর তা বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। বিশেষ করে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যে কারণে এবার কমিউনিটি পুলিশিং ডে দেশের কোনো থানা এলাকায় না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি চাঁদাবাজি যেন না হয় সেটাও কঠোর মনিটরিংয়ে রাখতে বলা হয়েছে।
অপরাধ দমন করতে থানা-পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক পুলিশ হিসেবে কমিউনিটি পুলিশ গঠন করা হয়। এলাকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও পরিস্থিতির উন্নতির জন্যই মূলত কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। থানা-পুলিশ তাদের কাজের মনিটরিং করে।
এলাকার অরাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিকে সভাপতি করে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কমিটি গঠন করা হয়। তাদের কাজের উৎসাহ দিতে প্রতি বছরই ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ উদযাপন করে আসছে পুলিশ সদর দপ্তর। ১৯৯৩ সালে ময়মনসিংহে প্রথম উদযাপন পালন করা শুরু হয়।
অভিযোগ উঠেছে, কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ‘অনুদান’ নিচ্ছেন। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
কমিউনিটি পুলিশিং ডে অনুষ্ঠানের কথা বলে চার দিন আগে তিনটি কোম্পানির কাছে ১০ লাখ টাকা ‘অনুদান’ দাবি করার অভিযোগে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এরপরই এমন অনুদান নেওয়া বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। যে কারণে এবার কমিউনিটি পুলিশিং ডে দেশের কোনো থানা এলাকায় না করে শুধু জেলা, মেট্রোপলিটন ও ইউনিটগুলোতে করা হবে। আগামী ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠানটি করার কথা থাকলেও বিএনপির কর্মসূচি থাকায় তা পিছিয়ে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ জড়িত। আবার কেউ কেউ থানা-পুলিশের হয়ে ফুটপাত থেকে চাঁদা আদায়ও করছে। কমিউনিটি পুলিশের অফিসগুলোও বেশিরভাগ সময় তালাবদ্ধ থাকছে। মাঝেমধ্যে খুললেও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আড্ডাস্থলে পরিণত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ সেøাগান নিয়ে যাত্রা করেছিল কমিউনিটি পুলিশ কার্যক্রম। এরপর থেকেই পুলিশের এই সামাজিক উদ্যোগ পদে পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছিল। কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বিরোধ মিটিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এখন এই সংস্থাটিকে শক্তিশালী করতে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
বর্তমানে ঢাকাসহ সারা দেশে কমিউনিটি পুলিশের কমিটির সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫২৯। সদস্যসংখ্যা ৮ লাখ ৯৪ হাজার ২০৬। এলাকাভিত্তিক বিটের সংখ্যা ৬ হাজার ৫২৫। গত এক বছরে কমিউনিটি পুলিশ ও বিট পুলিশের মাধ্যমে সামাজিক ও পারিবারিক বিরোধ মেটানো হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৪৪টি।
সংস্থাটির মূলমন্ত্র হচ্ছে ‘শান্তি-শৃঙ্খলা সর্বত্র’। কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে সমাজকে নিরাপদ রাখবে এমনটাই আশা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, জনগণকে সচেতন করা, আইনি সহায়তা দেওয়া, পুলিশ ও জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে কমিউনিটি পুলিশ। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ শনিবার ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ পালন করা হয়। কিন্তু এবার এই দিন বিএনপির কর্মসূচি থাকায় তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তা গতকাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সারা দেশে একযোগে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন করা হচ্ছে। এ সময় তারা প্রায়ই অভিযোগ পান অনুষ্ঠান করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি, শিল্পপতি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুদান নেওয়া হয়। এই নিয়ে পুলিশ বিব্রত। এবারও অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক করার পরপর অনেকেই ‘অনুদান’ তোলা শুরু করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওই তিন কর্মকর্তা বলেন, আইজিপি এই বিষয়ে কঠোর। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশিং ডে উদযাপনের নামে কোনো ধরনের অনুদান নেওয়া বা চাঁদাবাজি করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। আর এই কারণে এবার থানা এলাকায় অনুষ্ঠান করা হবে না। শুধু মহানগর ও জেলা ও পুলিশের ইউনিটগুলোতে অনুষ্ঠান করা হবে। কোনো অনুদান নিয়ে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে ইউনিটপ্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপারদের (এসপি) জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা বলেন, এসব অনুষ্ঠান করতে বেশি টাকা লাগে না। নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ খরচ করতে বলা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তারা বলেন, কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের কোনো বেতন দেওয়া হয় না। তারা সামাজিকভাবে কাজ করেন। এলাকার প্রভাবশালী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কমিটির প্রধান করা হয়।
থানা-পুলিশের পাশাপাশি মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলার এসপিরা কমিউনিটি পুলিশের কর্মকাণ্ড নজরদারি করেন। তারপরও তাদের কেউ কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই কমিউনিটি পুলিশিংয়ে যুক্ত অনেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কয়েকজন সদস্যের শাস্তিহওয়ার নজিরও আছে।
সূত্র জানায়, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের পক্ষ থেকে চাপও থাকে। সালিশের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে অনেক বিরোধ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হলেও আস্থা কম থাকায় কমিউনিটি পুলিশের আহ্বানে সহজে সাড়া দিতে চায় না মানুষ। যদিও সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে হত্যা, ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতিসহ আমলযোগ্য অপরাধ ছাড়া আমল অযোগ্য সব ঘটনাই সামাজিকভাবে মীমাংসা করার সুযোগ রয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আওতায় ওপেন হাউজ ডে, মতবিনিময় ও অপরাধ বিরোধ সভা, উঠান বৈঠক এবং দৃশ্যমান টহলের মাধ্যমে অপরাধপ্রবণতা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ হলো সমাজে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই অপরাধীকে চিহ্নিত করা, অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। এ ক্ষেত্রে শতভাগ সফল আমরা।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজকে আরও কীভাবে সুন্দর করার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তাদের কার্যক্রমের ফলে সমাজে বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং অনেক কমেছে। এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। কমিউনিটি পুলিশের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখতে হবে। তারা যাতে কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।’
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, আইনগত সহায়তার প্রয়োজনে পুলিশ বা থানায় যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষের। বাকিরা পুলিশের সংস্পর্শে আসে না। তাদের মধ্যে অনেকেই কমিউনিটি পুলিশের সহায়তা চায়।
পুলিশ বাহিনীতে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক এই আইজিপি বলেন, কমিউনিটি পুলিশ যেন কোনো অপরাধ সংঘটিত করতে না পারে সেজন্য নজরদারি করা হয়। এখনো তা বলবৎ আছে।
তবে তিনি বলেন, অনুষ্ঠান করতে গেলে অনুদান তুলতে হবে কেন? একটি অনুষ্ঠান করতে তো বেশি টাকা লাগে না। পুলিশ সদর দপ্তর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, দেশের সব জেলা, মেট্রোপলিটন, রেলওয়ে, হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ইউনিট স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করবে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের ধারণা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এটা কোনো নতুন উদ্ভাবন নয়। ১৮৯৮ সালের সিআরপিসির ২২ ধারায় বলা আছে, সরকার সময়ে সময়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন দ্বারা নাগরিকদের ‘জাস্টিস অব পিস’ নিয়োগ দিতে পারবে।
গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, কমিউনিটি পুলিশের বেশিরভাগ অফিস তালাবদ্ধ থাকে। প্রতি মাসে একবার বৈঠক করার কথা থাকলেও অনেক জায়গায় তা করা হয় না। সেগুনবাগিচা ও উত্তরা জসীমউদ্দীন রোডে দুটি কমিউনিটি পুলিশের অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়।
স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার বলেন, প্রায়ই এসব অফিস বন্ধ থাকে। মাঝেমধ্যে খুললেও রাজনৈতিক নেতারা বসে আড্ডা দেন। কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা এলাকায় কাজও করেন না। রাস্তায় যানজট লেগে থাকলেও তারা এগিয়ে আসেন না। তবে কিছু সদস্য থানা-পুলিশের হয়ে ফুটপাত থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলেন। তারা পুলিশের ভয় দেখিয়ে এলাকায় দাবড়ে বেড়ান।
Quality articles is the key to interest the people to go to see the website,
that’s what this web site is providing.
My blog – vpn special
Thanks a lot for sharing this with all of us you actually
recognize what you are speaking about! Bookmarked. Please also visit my website =).
We will have a link exchange contract between us
my page … vpn special coupon code 2024 (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
Spot on with this write-up, I absolutely
think this website needs a great deal more attention. I’ll probably be back again to see more,
thanks for the info!
My site: vpn meaning
Hi, I do think this is a great blog. I stumbledupon it 😉 I am going to revisit
yet again since I book marked it. Money and freedom is the best
way to change, may you be rich and continue to
help other people.
Review my blog … vpn special coupon code
Please let me know if you’re looking for a article writer for your blog.
You have some really good articles and I think I would
be a good asset. If you ever want to take some of the load
off, I’d love to write some material for your blog
in exchange for a link back to mine. Please shoot me an e-mail if
interested. Regards!
Feel free to surf to my web-site vpn ucecf
Howdy! I know this is somewhat off topic but I was wondering
which blog platform are you using for this website?
I’m getting sick and tired of WordPress because I’ve had issues with hackers and I’m looking at options for
another platform. I would be fantastic if you could point me in the direction of a good platform.
Feel free to surf to my blog … facebook vs eharmony to find love online
Excellent post. I was checking continuously this weblog
and I’m inspired! Very helpful info particularly the closing phase 🙂 I take
care of such information a lot. I was seeking this certain info for a very long time.
Thank you and best of luck.
Feel free to visit my webpage … eharmony special coupon code 2024
This paragraph offers clear idea in support of the new people of blogging, that genuinely how to do running a
blog.
Look at my site – nordvpn special coupon code 2024