পৃথিবীর কেন্দ্র উত্তপ্ত হলেও সমুদ্রের তলদেশ হিমশীতল কেন

বিশাল সাগর-মহাসাগরে রয়েছে প্রাণবন্ত এক প্রাণের জগৎ। সমুদ্র যত গভীর হয়, ততই ভিন্ন জগৎ দেখা যায়। সমুদ্রের গভীরতা বেশি হলে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। ফলে তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের কাছাকাছি আর পানির চাপ থাকে অনেক বেশি। আর তাই সেখানে সাধারণ প্রাণীর পক্ষে টিকে থাকা অসম্ভব।
অন্যদিকে পৃথিবীর কেন্দ্র প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত। বলা যায়, পৃথিবীর কেন্দ্র একটি প্রজ্বলিত অগ্নিগোলক। সেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গলিত লোহা ও নিকেলের উত্তপ্ত কেন্দ্র পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে। পৃথিবীর অভ্যন্তর উত্তপ্ত আর সমুদ্রের তলদেশ ঠান্ডা হওয়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর গঠন, তেজস্ক্রিয় পদার্থ ও তাপ স্থানান্তরের জটিল প্রক্রিয়ার রহস্য।
পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকা পদার্থ ক্রমাগত ভাঙনের ফলে কেন্দ্র এখনো উত্তপ্ত। ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো তেজস্ক্রীয় আইসোটোপ সেখানে ধীরে ধীরে ভেঙে শক্তি নির্গত করছে, যা পৃথিবীর অভ্যন্তরকে উত্তপ্ত রাখে। এই তাপ ধীরে ধীরে বাইরের দিকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে সমুদ্রের উপরিভাগ সূর্যের আলোর মাধ্যমে উত্তপ্ত হয়। পানির তাপ পরিবাহিতা কম হওয়ার কারণে এই উষ্ণতা খুব বেশি গভীরে প্রবেশ করতে পারে না। গভীর সমুদ্রের পানি মূলত মেরু অঞ্চলের বরফ গলা পানি ও শীতল স্রোতের মাধ্যমে আসে, যার কারণে সেখানে হিমাঙ্কের তাপমাত্রা দেখা যায়। প্রাকৃতিকভাবে পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপ ও সমুদ্রের গভীরের শীতলতার বিপরীতমুখী শক্তি পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ ও জীববৈচিত্র্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরের তাপ টেকটোনিক প্লেটের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
পৃথিবীর এমন রহস্যময় ভারসাম্যের অনেক রহস্য এখনো আবিষ্কার করা যায়নি। আর তাই বিজ্ঞানীরা এখনো পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপপ্রবাহের সঠিক পরিমাণ ও গভীর সমুদ্রের স্রোতের জটিল গতিপথ জানার চেষ্টা করছেন।
Way cool! Some very valid points! I appreciate you penning this write-up and the rest
of the site is very good.