Science & Tech

পৃথিবীর মতো চাঁদেও নির্দিষ্ট ‘টাইম জোন’ বানাবে হোয়াইট হাউস

নাসার যোগাযোগ ও নেভিগেশন কর্মকর্তা কেভিন কগিন্স বলেন, ‘চাঁদে স্থাপন করা পারমাণবিক ঘড়ি পৃথিবীর ঘড়ির চেয়ে ভিন্ন গতিতে ঘুরবে। সে কারণে চাঁদ বা মঙ্গলের মতো প্রতিটি মহাজাগতিক বস্তুর নিজস্ব টাইমকিপিং সিস্টেম থাকা যৌক্তিক।’ 

পৃথিবীর মতো চাঁদের জন্যও একটি টাইম জোন তৈরি করার জন্য মার্কিন মহাকাশ সংস্থা ‘নাসা’কে নির্দেশ দিয়েছে হোয়াইট হাউস। চাঁদে চলা নতুন এ সময়কে ডাকা হবে ‘কো-অর্ডিনেটেড লুনার টাইম (এলটিসি)’ নামে। ২০২৬ সালের মধ্যে চাঁদের নতুন এ টাইম জোন তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির। 

চাঁদে বিভিন্ন মহাকর্ষীয় শক্তির ক্ষেত্র কাজ করার কারণে, পৃথিবীর তুলনায় সেখানে সময় প্রায় ৫৮.৭ মাইক্রোসেকেন্ড দ্রুত চলে প্রতিদিন। খুব বেশি কিছু মনে না হলেও, মহাকাশযানের সাথে সামঞ্জস্যতা করার ক্ষেত্রে সময় উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখে।

মার্কিন সরকার আশা করছে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে চাঁদে পৌঁছানোর মধ্যে সমন্বয় সহজতর করার জন্য নতুন এ টাইম জোন কাজে দেবে। 

স্কটল্যান্ডের অ্যাস্ট্রোনমার রয়্যাল, প্রফেসর ক্যাথরিন হেইম্যানস বিবিসি রেডিও ফোরের টুডে প্রোগ্রামকে বলেছেন, ‘আমাদের মহাবিশ্বের মাধ্যাকর্ষণের মৌলিক তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সময় ভিন্নভাবে চলে। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কিছুটা দুর্বল। আর সেখানে সময়ও চলে ভিন্ন ভাবে।’

বর্তমানে আমাদের গ্রহের চারপাশে স্থাপিত শত শত পারমাণবিক ঘড়ি দ্বারা পৃথিবীতে সময় পরিমাপ করা হয়। পরমাণুর পরিবর্তিত শক্তির অবস্থা পরিমাপ করে ন্যানোসেকেন্ডে সময় রেকর্ড করতেই ব্যবহার করা হয় এই পারমাণবিক ঘড়িগুলো। তবে চাঁদে যদি এই পারমাণবিক ঘড়ি স্থাপন করা হয়, তবে তা পৃথিবীর ঘড়ির তুলনায় ৫০ বছরের ব্যবধানে প্রায় এক সেকেন্ড দ্রুত গতিতে চলবে।

নাসার যোগাযোগ ও নেভিগেশন কর্মকর্তা কেভিন কগিন্স বলেন, ‘চাঁদে স্থাপন করা পারমাণবিক ঘড়ি পৃথিবীর ঘড়ির চেয়ে ভিন্ন গতিতে ঘুরবে। সে কারণে চাঁদ বা মঙ্গলের মতো প্রতিটি মহাজাগতিক বস্তুর নিজস্ব টাইমকিপিং সিস্টেম থাকা যৌক্তিক।’ 

তবে শুধু নাসা নয়, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিও চাঁদে নতুন টাইম জোন তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করছে। সুতরাং নতুন একটি সময় ব্যবস্থা তৈরি করতে হলে দেশগুলোকে একমত হতে হবে এবং একটি কেন্দ্রীভূত সমন্বয়কারী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ঠিক যেভাবে বর্তমানে পৃথিবীর টাইম জোন নির্ধারণের জন্য আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ ব্যুরোর ওপর নির্ভর করা হয়।

বর্তমানে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সমন্বিত সর্বজনীন সময় বা কো-অর্ডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইম ব্যবহার করা হয় কারণ এটি পৃথিবীর কাছাকাছি নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। আরেকটি বিষয়ে যা নিয়ে দেশগুলোকে একমত হতে হবে তা হলো নতুন সময়সীমা কোথা থেকে শুরু হবে এবং কোন পর্যন্ত তা প্রসারিত করা হবে।

১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৭ এর পর  চাঁদের পৃষ্ঠে আবারও ফিরে যাওয়ার প্রথম অভিযান হবে আর্টেমিস-৩। এটি চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। চাঁদের এই অংশে সূর্যের আলো কখনো পৌঁছায় না বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন। এখানের গর্তগুলোতে রয়েছে পানি ও বরফের বিশাল ভাণ্ডার।

এই মিশন পরিচালনার জন্য অত্যন্ত নির্ভুলতার সাথে সময় নিরূপণ করতে হবে। কারণ কয়েক ন্যানোসেকেন্ড তারতম্যের কারণেও নেভিগেশনে সমস্যা হতে পারে আর এতে মহাকাশযানের ভুল কক্ষপথে প্রবেশের ঝুঁকি থেকে যায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d online