পোপের শক্তিকেন্দ্র ও বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র

রোম ১৮৭০ সালে দখল করে নেয়া হয় এবং পরে এটি ইতালির রাজধানী হয়ে ওঠে। সে সময় পোপ নবম পায়াস নিজেকে ‘ভ্যাটিকানের বন্দী’ বলে ঘোষণা দেন। এ দাবি পরবর্তী পোপরাও ধরে রাখেন, যতদিন না ইতালিয় সরকারের সাথে সমঝোতা হয়।
ক্যাথলিক চার্চের সদর দফতর ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র, যার নিজস্ব পত্রিকাসহ রয়েছে লাতিন ভাষায় জাতীয় সংগীত ও সর্বোচ্চ নেতা পোপ।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, প্রাচীন প্রাচীরঘেরা এ নগররাষ্ট্রে বসবাস করেন প্রায় ৯০০ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পোপ নিজে, লাল টুপি পরিহিত কার্ডিনাল, সন্ন্যাসিনী, পুরোহিত, কূটনীতিক, উদ্যানকর্মী, রাঁধুনি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মতো সাধারণ কর্মচারীরা।
ভ্যাটিকানের ফটকে পাহারা দেয় সুইস গার্ড। বিশ্বের প্রাচীনতম সেনাবাহিনীর এই সদস্যরা নীল, লাল ও হলুদ রঙের পরিচিত ডোরাকাটা পোশাক পরে থাকে। সাথে রয়েছে ভ্যাটিকানের নিজস্ব পুলিশ বাহিনীও।
এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন পোপ, সাদা পোশাকের এই রাজকীয় ব্যক্তিত্ব রাষ্ট্রের প্রধান ও বিশ্বের ১৪০ কোটি ক্যাথলিকের ধর্মীয় নেতার ভূমিকায় সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।
ভ্যাটিকান আগে তথাকথিত পাপাল স্টেটসের অংশ ছিল। শত শত বছর ধরে পোপের শাসনাধীন ইতালির কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে ছিল পাপাল স্টেটস। ১৯ শতকের ইতালির একত্রীকরণ আন্দোলনের সময় এসব অঞ্চল জয় করা হয়।
রোম ১৮৭০ সালে দখল করে নেয়া হয় এবং পরে এটি ইতালির রাজধানী হয়ে ওঠে। সে সময় পোপ নবম পায়াস নিজেকে ‘ভ্যাটিকানের বন্দী’ বলে ঘোষণা দেন। এ দাবি পরবর্তী পোপরাও ধরে রাখেন, যতদিন না ইতালিয় সরকারের সাথে সমঝোতা হয়।
১৯২৯ সালে পোপ পায়াস একাদশ ও ইতালির স্বৈরশাসক বেনিতো মুসোলিনির মধ্যে স্বাক্ষরিত ল্যাটেরান চুক্তির মাধ্যমে ভ্যাটিকান সিটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে ইতালি ভ্যাটিকান অঞ্চলের ওপর পোপের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে।
স্বর্গের চাবি
৪৪ হেক্টর আয়তনের এই নগররাষ্ট্রের সর্বময় শাসক পোপ। নগররাষ্ট্রটির এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলই উদ্যান। রাষ্ট্রের সরকার হলো ‘পবিত্র আসন’ (হলি সী)। এটি আন্তর্জাতিক আইনে একটি সার্বভৌম আইনগত সত্তা।
ক্যাথলিক চার্চ পরিচালনা করে রোমান কুরিয়া। এটি গঠিত হয়েছে স্টেট সেক্রেটারিয়েট, ১৬টি দিকাস্টেরি বা মন্ত্রণালয়, ছয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি অ্যাকাডেমি ও সংস্থার সমন্বয়ে।
ভ্যাটিকানে নাগরিকত্ব ‘জুস অফিসি’ পদ্ধতির ভিত্তিতে প্রদান করা হয়, অর্থাৎ বাসস্থান ও চাকরির ভিত্তিতে। এখানকার আইনব্যবস্থা ইতালির অনুরূপ এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছোট আকারের একটি আদালতে বিচার করা হয়।
এ ধরনের বিচার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভ্যাটিকানের পত্রিকা লোসারভাতোরে রোমানো এবং প্রায় ৪০টি ভাষায় কার্যক্রম পরিচালনাকারী ভ্যাটিকান মিডিয়া।
ভ্যাটিকানের কর্মীরা করমুক্ত বেতন পান এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। তবে তারা কোনো শ্রমিক সংগঠন গঠন বা তাতে যোগ দিতে পারেন না। তারা ভ্যাটিকানের সুপারমার্কেট, ডাকঘর, ফার্মেসি ব্যবহার করতে পারেন এবং বিশ্বের ক্ষুদ্রতম জাতীয় রেলপথের মাধ্যমে রোমে যাতায়াত করতে পারেন।
ভ্যাটিকানের ব্যাংক ইনস্টিটিউট ফর রিলিজিয়াস ওয়ার্কস একসময় নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ছিল। এখন এর সংস্কার করা হয়েছে এবং এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে।
ভ্যাটিকানের জাতীয় সংগীত ‘পন্টিফিক্যাল মার্চ’ বিশ্বের একমাত্র সংগীত যা লাতিন ভাষায় গাওয়া হয় আর রাষ্ট্রের পতাকায় রয়েছে হলুদ ও সাদা দুটি অংশ, যার ওপর খচিত রয়েছে সেন্ট পিটারের স্বর্গের চাবি।
নয়া দিগন্ত অনলাইন
ক্যাথলিক চার্চের সদর দফতর ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র, যার নিজস্ব পত্রিকাসহ রয়েছে লাতিন ভাষায় জাতীয় সংগীত ও সর্বোচ্চ নেতা পোপ।
ভ্যাটিকান সিটি থেকে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্রাচীন প্রাচীরঘেরা এ নগররাষ্ট্রে বসবাস করেন প্রায় ৯০০ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন পোপ নিজে, লাল টুপি পরিহিত কার্ডিনাল, সন্ন্যাসিনী, পুরোহিত, কূটনীতিক, উদ্যানকর্মী, রাঁধুনি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মতো সাধারণ কর্মচারীরা।
ভ্যাটিকানের ফটকে পাহারা দেয় সুইস গার্ড। বিশ্বের প্রাচীনতম সেনাবাহিনীর এই সদস্যরা নীল, লাল ও হলুদ রঙের পরিচিত ডোরাকাটা পোশাক পরে থাকে। সাথে রয়েছে ভ্যাটিকানের নিজস্ব পুলিশ বাহিনীও।
এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন পোপ, সাদা পোশাকের এই রাজকীয় ব্যক্তিত্ব রাষ্ট্রের প্রধান ও বিশ্বের ১৪০ কোটি ক্যাথলিকের ধর্মীয় নেতার ভূমিকায় সর্বময় ক্ষমতা প্রয়োগ করেন।
ভ্যাটিকান আগে তথাকথিত পাপাল স্টেটসের অংশ ছিল। শত শত বছর ধরে পোপের শাসনাধীন ইতালির কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে ছিল পাপাল স্টেটস। ১৯ শতকের ইতালির একত্রীকরণ আন্দোলনের সময় এসব অঞ্চল জয় করা হয়।
রোম ১৮৭০ সালে দখল করে নেয়া হয় এবং পরে এটি ইতালির রাজধানী হয়ে ওঠে। সে সময় পোপ নবম পায়াস নিজেকে ‘ভ্যাটিকানের বন্দী’ বলে ঘোষণা দেন। এ দাবি পরবর্তী পোপরাও ধরে রাখেন, যতদিন না ইতালিয় সরকারের সাথে সমঝোতা হয়।
১৯২৯ সালে পোপ পায়াস একাদশ ও ইতালির স্বৈরশাসক বেনিতো মুসোলিনির মধ্যে স্বাক্ষরিত ল্যাটেরান চুক্তির মাধ্যমে ভ্যাটিকান সিটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে ইতালি ভ্যাটিকান অঞ্চলের ওপর পোপের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে।
স্বর্গের চাবি
৪৪ হেক্টর আয়তনের এই নগররাষ্ট্রের সর্বময় শাসক পোপ। নগররাষ্ট্রটির এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলই উদ্যান। রাষ্ট্রের সরকার হলো ‘পবিত্র আসন’ (হলি সী)। এটি আন্তর্জাতিক আইনে একটি সার্বভৌম আইনগত সত্তা।
ক্যাথলিক চার্চ পরিচালনা করে রোমান কুরিয়া। এটি গঠিত হয়েছে স্টেট সেক্রেটারিয়েট, ১৬টি দিকাস্টেরি বা মন্ত্রণালয়, ছয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি অ্যাকাডেমি ও সংস্থার সমন্বয়ে।
ভ্যাটিকানে নাগরিকত্ব ‘জুস অফিসি’ পদ্ধতির ভিত্তিতে প্রদান করা হয়, অর্থাৎ বাসস্থান ও চাকরির ভিত্তিতে। এখানকার আইনব্যবস্থা ইতালির অনুরূপ এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছোট আকারের একটি আদালতে বিচার করা হয়।
এ ধরনের বিচার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভ্যাটিকানের পত্রিকা লোসারভাতোরে রোমানো এবং প্রায় ৪০টি ভাষায় কার্যক্রম পরিচালনাকারী ভ্যাটিকান মিডিয়া।
ভ্যাটিকানের কর্মীরা করমুক্ত বেতন পান এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। তবে তারা কোনো শ্রমিক সংগঠন গঠন বা তাতে যোগ দিতে পারেন না। তারা ভ্যাটিকানের সুপারমার্কেট, ডাকঘর, ফার্মেসি ব্যবহার করতে পারেন এবং বিশ্বের ক্ষুদ্রতম জাতীয় রেলপথের মাধ্যমে রোমে যাতায়াত করতে পারেন।
ভ্যাটিকানের ব্যাংক ইনস্টিটিউট ফর রিলিজিয়াস ওয়ার্কস একসময় নানা কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ছিল। এখন এর সংস্কার করা হয়েছে এবং এটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে।
ভ্যাটিকানের জাতীয় সংগীত ‘পন্টিফিক্যাল মার্চ’ বিশ্বের একমাত্র সংগীত যা লাতিন ভাষায় গাওয়া হয় আর রাষ্ট্রের পতাকায় রয়েছে হলুদ ও সাদা দুটি অংশ, যার ওপর খচিত রয়েছে সেন্ট পিটারের স্বর্গের চাবি।