Hot

প্রকল্পে দুর্নীতির লাগাম টানার উদ্যোগ: এডিপির নীতিমালায় আসছে কঠোরতা

পরিকল্পনা সচিবের সভাপতিত্বে হচ্ছে প্রকল্প বাছাইয়ে নতুন কমিটি * তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দিতে হবে * আইএমইডির প্রতিবেদন-২০২২-২৩ অর্থবছরের ৭৮৬ প্রকল্পে অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়

বিভিন্ন প্রকল্প ঘিরে দুর্নীতির নানা ছক থাকে। এমন অভিযোগ নতুন নয়। দুর্র্নীতির কারণে অনেক প্রকল্পের পরিণতির কথাও অনেকের জানা। তবে সরকার এখন থেকে প্রকল্পের নামে যে কোনো ধরনের দুর্নীতির লাগাম টানতে চায়। যেনতেন প্রকল্প নিয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধির প্রবণতা বন্ধ করার কৌশল নিয়েও ভাবছে সরকার। এক্ষেত্রে নতুন প্রকল্প গ্রহণের শুরুতেই কড়াকড়ি আরোপের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসাবে প্রকল্পে প্রয়োজনীয়তা ও আউটকাম (কার্যকর ফলাফল) ভালো না হলে সেটি গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রের।

জানা যায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে লাগাম টানার বিষয়ে কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহে শুরু হয়েছে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের কাজ। আর্থিক সংকট, ডলার সংকট, সময় ও অর্থের অপচয় রোধ, ইচ্ছা করে প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢিলামিসহ প্রকল্প ঘিরে নানা কিসিমের অনিয়ম বন্ধে সরকার এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। এর ফলে এখন থেকে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে প্রকল্প ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ থামাতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তৈরির ক্ষেত্রেও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। অপরদিকে মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমইডির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৭৮৬ প্রকল্পের অগ্রগতি মোটেই সন্তোষজনক নয়। এর মধ্যে ১১০ প্রকল্পের টাকা ব্যয় না হওয়ার বিষয়টিও রয়েছে আলোচনায়।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের গতি বাড়ানোবিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেটি নিয়মিত করা হবে। সেই সঙ্গে নীতিমালা সংশোধনসহ অন্যান্য বিষয়েও কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইচ্ছা করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢিলামি করা হলে সেটি অবশ্যই অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যে পড়বে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ইচ্ছা করলেই একা অনেক কিছু করতে পারে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা বাড়াতে একটি রূপরেখা তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর জন্য প্রকল্প পরিচালকদের প্রশিক্ষণসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার এনইসি বৈঠকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, এ অর্থবছরের মূল লক্ষ্য হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সরকারি ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণ এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা।

সাবেক পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের সভার সিদ্ধান্তগুলো খুবই কার্যকরী ও বাস্তবসম্মত। কিন্তু কথা হলো শুধু বাছাই কমিটি করলেই হবে না, এক্ষেত্রে কমিটিকে কঠোর হতে হবে। তদবিরে যাতে নতুন প্রকল্প নেওয়া না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকেও সতর্ক হতে হবে।

সূত্র জানায়, পরিকল্পনা কমিশনের সভায় নানা বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী ও কমিশন চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এরপর চারটি বিষয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনটিই হলো প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদনসংক্রান্ত। কমিশনের সভার সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করা। এজন্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে হবে এবং এ উদ্দেশ্যে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা। দ্বিতীয়ত, এডিপি বা সংশোধিত এডিপিতে নতুন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে বেশকিছু বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান। এর মধ্যে সম্ভাব্য প্রাক্কলিত ব্যয়, অর্থায়ন, আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে প্রকল্পের রিটার্ন এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রকল্পে প্রভাব অন্যতম। এছাড়াও আছে প্রকল্প থেকে সাধারণ মানুষ কীভাবে উপকৃত হবেন, সেটি বিবেচনায় রেখে সুফল অর্জনের জন্য বিকল্প বিনিয়োগের সম্ভাবনার দিক পর্যালোচনা করে প্রকল্প নির্বাচন করা। অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণের প্রবণতা পরিহার করা। তৃতীয়ত, দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতি রেখে প্রয়োজনীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্বাচনের সুবিধার্থে পরিকল্পনা কমিশনের সব সদস্যের (সচিব) সমন্বয়ে কার্যক্রম বিভাগের সদস্যের (পরিকল্পনা সচিব) সভাপতিত্বে একটি প্রকল্প বাছাই কমিটি করা। এছাড়া সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকার সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার কথাও বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটি পুনর্গঠনসহ কার্যক্রম বিভাগের জারি করা পরিপত্রের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে।

জানা যায়, এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৬ মার্চ মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের পর্যালোচনাসভা। কার্যক্রম বিভাগের সদস্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের কাজ চলছে।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপির তৈরির নীতিমালা তৈরির কাজ করছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপি তৈরির সময় খাতওয়ারি বরাদ্দ বিভাজন, অনুমোদিত প্রকল্প, বরাদ্দহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প যুক্ত করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিষয়টি যুক্ত থাকছে। প্রকল্পভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে যেনতেন প্রকল্পে বরাদ্দ না দিয়ে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত এবং অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দে অগ্রাধিকারের বিষয়টি প্রধান্য পাচ্ছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু অনুমোদিত ও এএমএসে (এডিপি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্প এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে। অনুমোদনের আদেশ ও প্রশাসনিক আদেশ জারি হয়নি-এমন নতুন অনুমোদিত প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। চলতি উন্নয়ন প্রকল্পের সময়ানুগ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ নিশ্চিত করার পরই কেবল অপরিহার্য নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের জন্য স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ প্রস্তাব করতে হবে। এছাড়া আগামী অর্থবছরে এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত অননুমোদিত নতুন প্রকল্প যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত তালিকাভুক্ত কোনো প্রকল্প আগামী অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও কাঙ্ক্ষিত সুফল পেতে এডিপিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে-এমন প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির কার্যক্রম দ্রুত করতে হবে। মেয়াদ বৃদ্ধি ছাড়া এসব প্রকল্পে আগামী এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। এডিপিতে বরাদ্দহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকা যোগ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প প্রস্তাব করতে হবে।

এদিকে মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমইডির নতুন এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আওতায় ১ হাজার ৬৮৬টি প্রকল্পের মধ্যে ৩৫১টি প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়, যা মোট প্রকল্পের ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ। এছাড়া ৪৩৫টির বাস্তব অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়, যা মোট মোট প্রকল্পের ২৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। এছাড়া ১১০টি প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি অর্জিতই হয়নি বলে এতে বলা হয়। তবে ৩০৪টি প্রকল্পের আর্থিক ও ২২৫টি প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি সন্তোষজনক। পাশাপাশি ৫৭৯টি প্রকল্পের আর্থিক ও ৩৮৭টি প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি মোটামুটি সন্তোষজনক।

এ প্রসঙ্গে আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ওই প্রতিবেদনে যেসব বিষয় উঠে এসেছে আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি। তারা উত্তরও দিচ্ছে। এতে দেখা যায়, কিছু বাস্তব কারণ আছে; আবার অদক্ষতা, সক্ষমতার অভাব, ঢিলামিসহ নানা কারণও রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সুপারিশ হচ্ছে-প্রকল্প বাস্তবায়নে কেউ গাফিলতি করলে তাকে তিরস্কার করা এবং ভালো করলে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের গতি বৃদ্ধি এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প না নেওয়ার বিষয়ে বারবার নির্দেশনা দিচ্ছেন। এসব নিয়ে কাজ হচ্ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor