Bangladesh

প্রকাশ্যে নয় গোপনে পাবে নতুন দলগুলো

সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসন ভাগাভাগিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। এর মধ্যে ৩টি দলকে ৭টি আসন দেওয়ার বিষয় চূড়ান্ত করা হয়েছে। জাতীয় পার্টিকে ২৬ আসন দেওয়ার বিষয়টিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট (বিএনএম), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও তৃণমূল বিএনপি আগামী নির্বাচনে কী পাচ্ছে এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন চলছে। গুঞ্জন বলছে প্রকাশ্যে আসন রফা না করা হলেও গোপনে এই তিন দলের কিছু হেভিওয়েট প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার পরিবেশ করে  দেবে আওয়ামী লীগ। তৃণমূল বিএনপি : নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে এ রকম হাঁকডাক দিয়ে মাঠে নামে এ দলটি। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দলের মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। দলটি ঘোষণা দিয়েছিল, বেশ কয়েকটি আসনে তাদের একাধিক প্রার্থী থাকবে। সাবেক বেশ কয়েকজন এমপিও তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। সব মিলিয়ে দলটি ২৯০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও সব শেষ ১৪৬টি আসনে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন সাবেক সংসদ সদস্য। তারা হলেন মৌলভীবাজার-২ আসনে এম এম শাহীন, লক্ষ্মীপুর-১ আসনের এম এ আউয়াল, সাতক্ষীরা-৪ আসনের এইচ এম গোলাম রেজা, ঝিনাইদহ-২ আসনে নুরুদ্দিন আহমেদ ও মেহেরপুর-২ আসনে আবদুল গণি। এর বাইরে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ), নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা হুদা মুন্সীগঞ্জ-১ ও মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে নির্বাচন করবেন। যদিও গুঞ্জন রয়েছে- আওয়ামী লীগের সঙ্গে নতুন এই দলটির আসন রফা হয়েছে। এই রফা অবশ্য প্রকাশ্যে না, অনেকটা গোপনে। তবে আসন একবারে ছেড়ে না দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাঠে থাকবে। সেখানে নির্বাচনি পরিবেশটা এমনভাবে রাখা হবে যেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়। এর মধ্যে শমসের মবিন চৌধুরীর সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) ও দলটির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ)। এ ছাড়াও দলটির কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য জয়ী হওয়ার তালিকায় থাকতে পারেন। সব মিলিয়ে ৩-৪ আসন পেতে পারে দলটি। এ বিষয়ে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগামী নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত বা সমঝোতা হয়নি। আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করার অঙ্গীকার করেছেন, তাই আমরা নির্বাচনে এসেছি। আমরা ১৪৬ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। আরও কিছু প্রার্থী আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সংসদে আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা রাখতে পারব।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) : নির্বাচনি কার্যক্রমের শুরু থেকে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয় ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। প্রথমে কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্যকে ভাগিয়ে দলে ভেড়ায় তারা। চমক দিয়ে সূচনা করলেও আসনভিত্তিক প্রার্থী ঘোষণার দিন মাত্র ৮২ জনকে মনোনয়ন দেয় দলটি। এর মধ্যে সবশেষ মনোনয়ন ফরম দাখিল করেন ৬০ জন। তবে এর মধ্যে ছয়জন সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন, ফরিদপুর-১ আসনে শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, বরগুনা-২ আসনে অধ্যাপক আবদুর রহমান, সাতক্ষীরা-৪ আসনে এইচ এম গোলাম রেজা, নীলফামারী-১ আসনে জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, জামালপুর-৪ আসনে মামুনুর রশিদ এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়ান শামসুল আবেদিন। এর বাইরে দলটির মহাসচিব মো. শাহ্জাহান চাঁদপুর-৪, সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২ ও আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। যদিও গুঞ্জন রয়েছে, দলটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রকাশ্যে আঁতাত না করলেও গোপনে কিছু আসন ভাগাভাগির কাজ করেছে। বিএনএমের প্রার্থীদের আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাঠে থাকবে। কিন্তু মাঠের পরিবেশ এমনভাবে রাখা হবে যেন বিএনএমের প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হন। এর মধ্যে দলটির মহাসচিব মো. শাহ্জাহানসহ ৩-৪ জন হেভিওয়েট প্রার্থী জয়ী হতে পারেন। এ বিষয়ে বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান বলেন, এমন গুঞ্জনের বিষয়টি এখন পর্যন্ত আমি শুনিনি। যেহেতু আমি দলটির মহাসচিব, সে হিসেবে সরকারের সঙ্গে আঁতাত হলে অবশ্যই আমি জানব। এ রকম কোনো বিষয়ে কথা হয়নি। এখন পর্যন্ত আপিল করাসহ ৬০ জনের বেশি প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। পরিবেশ ভালো থাকলে অনেকে জয়ী হবেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) : নির্বাচনে অংশ নেওয়া নতুন আরেক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) প্রথমে ঘোষণা দিয়েছিল- ৩০০ আসনেই তারা প্রার্থী দেবে। কিন্তু পরে ১৩০ জনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে। তবে সবশেষ ৮২ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। নির্বাচনি মাঠে লিবারেল ইসলামিক জোট গঠন করলেও মাঠে একাই দৌড়াচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। এর মধ্যে দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী চট্টগ্রাম-২ ও ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়ন জমা দেন। গুঞ্জন রয়েছে, দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে জয়ী হওয়ার জন্য মাঠের পরিবেশ করবে আওয়ামী লীগ। যদিও ওই আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তাকে এবার মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। বর্তমানে দলটির পক্ষ থেকে খাদিজাতুল আনোয়ারকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাঠে থাকলেও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যানকে জিতিয়ে আনা হবে বলে শোনা যায়। গুঞ্জনটির অনেকটা সত্যতা মিলে গতকাল দলটির চেয়ারম্যান ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ৩০ মিনিটের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। ওই  বৈঠকে আসন ভাগাভাগি হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীকে কয়েকবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে দলটির দফতর সম্পাদক মো. ইবরাহীম মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো কথা হয়নি। আর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের কী সভা হয়েছিল সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। আর ৮২ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৫-২০ জন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন তারা জয়ী হবেন আশা করি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d