প্রণোদনা প্রত্যাহারে বহুমুখী ঝুঁকি
দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশ যে প্রতিষ্ঠানটির হাত ধরে এসেছিল, সেই দেশ গার্মেন্টস নিট মুনাফার জন্য পুরোপুরি নির্ভরশীল সরকারের নগদ সহায়তার ওপর। পোশাক রপ্তানির বিপরীতে সরকারের প্রণোদনা না পেলে কোম্পানিটি লোকসানে পড়ে যায়। শুধু দেশ গার্মেন্টস নয়, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের একটি বড় অংশই প্রণোদনায় টিকে আছে। আমদানিতে বন্ড সুবিধা ও সস্তা শ্রমিক পেয়েও খাতটি চার দশকেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনকে সামনে রেখে সরকারের প্রণোদনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় লাখো-কোটি টাকা বিনিয়োগের পুরো খাতটিই এখন অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে পড়েছে।
সস্তায় পোশাক বিক্রি করেই বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এর পেছনে সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে সরকারের নগদ সহায়তা। কিন্তু কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ব্যাপক হারে কমিয়ে দেওয়ায় তৈরি পোশাক খাত অস্তিত্ব সংকটে পড়ার শঙ্কায় পড়েছে। রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। বর্তমানে পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় এমনিতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কমে গেছে। দীর্ঘদিন প্রণোদনায় টিকে থাকা খাতটি এখন নগদ সহায়তা ছাড়া কীভাবে টিকে থাকবে, তার হিসাব-নিকাশ করছেন উদ্যোক্তারা। প্রণোদনা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গত ৩০ জানুয়ারি সরকার তৈরি পোশাক শিল্পসহ রপ্তানিতে অবদান রাখা সব খাতে দেওয়া নগদ সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। তৈরি পোশাকের প্রচলিত বাজারে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। তবে উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রকৃতপক্ষে সহায়তা কমেছে ৮০ শতাংশ। রপ্তানির প্রধান প্রধান বাজারগুলোতে যখন আয় কমে যাচ্ছে, তখন নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় শ্রমনির্ভর খাতটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়বে তৈরি পোশাক শিল্পের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যাদের অধিকাংশই নারী।
শুধু তৈরি পোশাক শিল্পই নয়, এ খাতটির মূল্য সংযোজনে অবদান রাখা স্পিনিং মিল, টেক্সটাইল মিল, ডায়িং কারখানা ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের অন্যান্য খাতও হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ী নেতারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বিটিএমএর তথ্যানুযায়ী, তাদের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৩০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২২-২৩ হিসাববছরে ৪৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার তৈরি পোশাক রপ্তানি করে ৩৩ লাখ টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী দেশ গার্মেন্টস। মূলত এই নগদ সহায়তার অর্থই কোম্পানিটি নিট মুনাফা হিসেবে রাখতে পেরেছে। কর পরিশোধের পর সর্বশেষ হিসাববছরে নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং কোম্পানি ২০২০-২১ হিসাববছরে পণ্য রপ্তানি করে নগদ সহায়তা পেয়েছে ১৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ওই বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা ছিল ১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এর মানে হচ্ছে, নগদ সহায়তা না পেলে ওই হিসাববছরে কোম্পানিটি লোকসানে পড়ত। ২০২২-২৩ হিসাববছরে নগদ সহায়তা বাড়ায় কোম্পানিটির নিট মুনাফাও বাড়ে। একই হিসাববছরে তৈরি পোশাক শিল্পের আরেক প্রতিষ্ঠান তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ নিট মুনাফা করে ৭ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটি পণ্য রপ্তানি থেকে নগদ সহায়তা পায় ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর্গন ডেনিমস লিমিটেড নিট মুনাফা করে ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটি ৪৫৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে ৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘যে প্রণোদনা দেওয়া আছে সেটি এ বছরের জুন পর্যন্ত আমাদের জন্য ঘোষিত। এর ওপর ভিত্তি করে আমরা যে ক্রয়াদেশগুলো নিই, সেগুলো সাত-আট মাস পর্যন্ত পরিকল্পনা করা থাকে।’ হঠাৎ করে এ সুবিধা তুলে নেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘জানুয়ারির ৩০ তারিখ ঘোষণা দিয়ে বলল কার্যকর হবে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে। আমরা তো এক-দুই কিংবা ছয় মাস আগে থেকেই ক্রয়াদেশ নিয়ে ফেলেছি। কারও কারও আগামী জুন পর্যন্ত ক্রয়াদেশ নেওয়া আছে। এই ক্রয়াদেশ নেওয়া হয়েছে নগদ সহায়তা হিসাব করেই। ক্রেতারাও এটি জানেন। এখন হঠাৎ করে সহায়তা তুলে দিলে যে লোকসান হবে, তার দায় কে নেবে।’
ফারুক হাসান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাঁচটি এইচএস কোডে যারা রপ্তানি করবে তারা প্রণোদনা পাবে না। অথচ এই পাঁচ এইচএস কোডেই রপ্তানি হয় ৫৬ শতাংশ। মোটের ওপর ঘুরেফিরে ৮০ শতাংশই কমানো হলো।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানির মতো বাজারে প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক। সে কারণে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত এ তিনটি নতুন বাজারে উৎপাদন খরচের কমেও রপ্তানি করা হয়েছে। এটি শুধু বাজার বাড়ানোর জন্য, ক্রেতাদের ধরে রাখার জন্য। মোটকথা যাতে কারখানা চালু রাখা যায়। কারখানা বন্ধ হলেই শ্রম অসন্তোষ তৈরি হয়, কর্মসংস্থানেও ঘাটতি দেখা দেয়। কর্মসংস্থানের ঘাটতি হলে বড় সমস্যা হয়। সেই তিনটি দেশকেই অপ্রচলিত বাজারের তালিকা থেকে বের করা দেওয়া হয়েছে। ফারুক হাসানের ভাষায়, ‘এর মাধ্যমে আমাদের শাস্তি দেওয়া হলো আমরা কেন ভালো করলাম, কেন বিদেশি মুদ্রা আনলাম।’
তৈরি পোশাক শিল্পে মূল্য সংযোজনের অংশ হিসেবে দেশে শত শত টেক্সটাইল, স্পিনিং ও ডায়িং মিল গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) তথ্যানুযায়ী, সংঠনটির সদস্য সংখ্যা ১ হাজার ৭৮০। এর মধ্যে সুতা, ফেব্রিক, ডায়িং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিং কারখানা রয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, টেক্সটাইল খাতে প্রাথমিক বিনিয়োগ প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বা ১৫ বিলিয়ন ডলার। এ খাতেও লাখ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে। জিডিপিতে (মোট দেশজ উৎপাদন) এ খাতটির অবদান প্রায় ১৩ শতাংশ। তৈরি পোশাক শিল্প সংকটে পড়লে রসদ সরবরাহকারী ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের এসব শিল্পেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
দেশের টেক্সটাইল মিলগুলো ইতিমধ্যেই সংকটের মধ্যে পড়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এসব কোম্পানির উৎপাদন ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। আমদানি করা প্রস্তুত পণ্যের সঙ্গে দামের প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে কোনো কোনো কোম্পানি উৎপাদন পর্যায়েই লোকসানে পড়েছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নও এসব কোম্পানির লোকসান আরও বাড়িয়েছে। এর ভালো উদাহরণ হচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্পিনিং মিলগুলো। ম্যাকসন্স স্পিনিং মিলস ও মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড নামের দুটি কোম্পানি উৎপাদন পর্যায়েই বিপুল লোকসানের মধ্যে পড়েছে। ২০২২-২৩ হিসাববছরে স্কয়ার টেক্সটাইল, মতিন স্পিনিং মিলসের মতো বড় কোম্পানির মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘প্রণোদনা কমানোর মাধ্যমে কার্যত স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্পকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের টেক্সটাইল শিল্পে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ মিলিয়ন কেজি সুতার প্রয়োজন হয়। কোনো শিল্পে টান পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই সেটির সরবরাহ করতে পারে আমাদের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ। কেউ চাইলেই হঠাৎ করে চীন থেকে সুতা বা কাপড় আমদানি করে চালাতে পারবে না। তার জন্য সেটি অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। রপ্তানি আয়ের ২৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অবদান ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের। অর্থনীতিতে এত অবদানের পর এবারও ব্যবসায়ীদের ওপরই খড়গটা এলো।’
তিনি বলেন, টেক্সটাইল খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আছে ২২ বিলিয়ন ডলারের। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ঋণ আছে ২০ হাজার কোটি টাকার। প্রণোদনা প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্তের কারণে পুরো শিল্পই এখন বন্ধ হওয়ার হুমকিতে রয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৫৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে প্রায় ৪৭ বিলিয়ন ডলার এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। গত অর্থবছরে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল তৈরি পোশাক রপ্তানিতে। কিন্তু চলতি অর্থবছরের শুরুতে ভালো প্রবৃদ্ধি থাকলেও রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে চাহিদা কমে যাওয়ায় গত অক্টোবর থেকে টানা তিন মাস নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, যা দেশের পুরো রপ্তানিতেই প্রভাব ফেলে।
গত ৩০ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার অনুযায়ী, তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তার হার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ক্রাস্ট লেদার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনার পুরোটাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন বাজারগুলোতে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রণোদনার হার ১ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ, কৃষিপণ্যসহ আরও অন্যান্য খাতের প্রণোদনাও কমানো হয়েছে।
অন্যদিকে প্রধান তিনটি নতুন বাজার অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানে রপ্তানিতে ৪ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হতো। নতুন সার্কুলারে এসব বাজারকে প্রচলিত বাজারের তালিকায় আনা হয়েছে, যে ক্ষেত্রে নগদ সহায়তার হার হলো শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, সরকার ৪৩টি খাতে রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে। রপ্তানি শিল্পে সরকার যে প্রণোদনা দেয় পরিমাণের দিক থেকে পোশাক খাতই সবচেয়ে বেশি পায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, নগদ প্রণোদনার ৬৫ শতাংশ বা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার মূল সুবিধাভোগী হলো তৈরি পোশাক ও বস্ত্রশিল্প।
টেক্সটাইল শিল্পে প্রণোদনার প্রভাব সম্পর্কে ফারুক হাসান বলেন, ‘স্থানীয় সুতার দাম বেশি হলেও এতদিন আমরা তা কিনেছি। এখন তো আমরা আর কিনব না। ১০ সেন্ট বেশি হলেও সেটি বাইরে থেকে আনা হবে। অথচ এই মুহূর্তে ২০ থেকে ৩০ সেন্ট বেশি হলেও স্থানীয় সুতা কিনি। আমি প্রণোদনা না পেলে এখানে তো প্রতিযোগিতা থাকবে না। লোকসান দিয়ে তো স্থানীয় সুতা কেনার কোনো মানে হয় না।’
রপ্তানি প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ অন্যায় অভিহিত করে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রপ্তানি প্রণোদনা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে কথাটা ঠিক নয়, বরং বলা উচিত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে বলা হলো এ খাতের পণ্যের অর্ধেক কমানো হয়েছে, পরবর্তীকালে পাঁচটি ক্যাটাগরি দেওয়া হলো ওই পাঁচটার মোট রপ্তানিই হলো আমাদের নিটওয়্যার। প্রথম কথা হলো, এটির বিশাল নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। দ্বিতীয়ত, জানুয়ারির ৩০ তারিখ প্রজ্ঞাপন দিয়ে বলা হলো জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হবে, যা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়।’
তার মতে, ১ জানুয়ারি বা তার পরে যে পণ্য শিপমেন্ট গিয়েছে সেগুলোর কী হবে। সরকার বলেছিল এ সুবিধা ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত থাকবে। সেটির ওপর ভিত্তি করে ক্রয়াদেশ নেওয়া হয়েছিল, শিপমেন্টও সেভাবে করা হয়েছিল। এখন জানুয়ারির ৩০ তারিখে এ ঘোষণার কারণে বিশাল ক্ষতি হবে। মোট রপ্তানিই হুমকির মুখে পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, ক্রাস্ট লেদার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনার পুরোটাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর ফিনিশড লেদারে এটি ১০ থেকে ৩ শতাংশ কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের চামড়া শিল্পের মোট রপ্তানির ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই ক্রাস্ট লেদার। মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ রপ্তানি হয় ফিনিশড লেদার। কাজেই ক্রাস্ট লেদারের ওপর থেকে রপ্তানি প্রণোদনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এ খাতকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ক্রাস্ট লেদারের ১০ শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনাকে মাথায় রেখেই ক্রয়াদেশ নেওয়া রয়েছে বেশিরভাগ রপ্তানিকারকদের। পরিবেশ-কমপ্লায়েন্স ইস্যু ও এলডব্লিউজি সনদের কারণে ইউরোপের বাজারে প্রবেশাধিকার না থাকায় কোনো রকমে চীননির্ভর হয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন এ খাতের রপ্তানিকারকরা।