প্রাচীন মহাবিশ্বের রহস্যের সমাধানের পথে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা
মহাবিশ্বের বৃহত্তম গ্যালাক্সির উদ্ভব সম্ভবত ১২ বিলিয়ন বছর আগে গ্যালাক্সির সংঘর্ষের কারণে হয়েছিল। গবেষকরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ‘আন্তর্গ্যালাক্টিক রহস্য’ সমাধানের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ড. আন্নাগ্রাজিয়া পুগলিসি ও তার দল এক গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন, দুটি ডিস্ক-আকৃতির গ্যালাক্সির সংঘর্ষের ফলে বিপুল গ্যাস কেন্দ্রে জমা হয়ে লক্ষ লক্ষ নতুন নক্ষত্রের জন্ম দিয়েছিল।
ড. পুগলিসি বলেন, এই মহাজাগতিক সংঘর্ষগুলি ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল। ওই সময় মহাবিশ্ব ছিল তার অতি সক্রিয় বিবর্তনের পর্যায়ে। আমাদের গবেষণার ফলাফল জ্যোতির্বিজ্ঞানের দীর্ঘদিনের রহস্যের সমাধানকে আরও কাছাকাছি নিয়ে গেছে।
চীনের পার্পল মাউন্টেন অবজারভেটরি এবং চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সের সাথে কাজ করে, গবেষকরা চিলির আটাকামা মরুভূমিতে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম রেডিও টেলিস্কোপ আলমা ব্যবহার করে ১০০ টিরও বেশি নক্ষত্র-গঠনের গ্যালাক্সি বিশ্লেষণ করেছেন।
গবেষণার প্রধান ড. চিং-হুয়া তান বলেছেন, এই গবেষণায় দূরবর্তী এবং অত্যন্ত উজ্জ্বল গ্যালাক্সি থেকে নির্গত আলোর বণ্টন বিশ্লেষণের জন্য নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি প্রথম বাস্তব প্রমাণ যে, নক্ষত্র-গঠনের তীব্র পর্বগুলোর মাধ্যমেই স্ফেরয়েড আকৃতির গ্যালাক্সির উদ্ভব ঘটে।
তিনি আরও জানান, এই গ্যালাক্সিগুলি অত্যন্ত দ্রুত গঠিত হয়। গ্যাস কেন্দ্রে প্রবাহিত হয়ে ব্ল্যাক হোলকে জ্বালানি যোগায় এবং এর ফলে নক্ষত্রের জন্ম হয়, যা আমাদের মিল্কিওয়ের তুলনায় ১০ থেকে ১০০ গুণ দ্রুত ঘটে। গবেষকরা তাদের এই আবিষ্কারকে জেমস ওয়েব এবং ইউক্লিড স্যাটেলাইট, চীনা স্পেস স্টেশন থেকে প্রাপ্ত ডেটার সাথে একত্রিত করবেন। এর ফলে গ্যালাক্সির নক্ষত্রীয় উপাদানগুলির একটি সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে।
ড. পুগলিসি বলেন, এর মাধ্যমে আমরা প্রাচীন গ্যালাক্সি গঠনের বিষয়ে আরও গভীর ধারণা লাভ করব এবং মহাবিশ্ব কীভাবে সময়ের সাথে সাথে বিবর্তিত হয়েছে তা বুঝতে পারব।