Hot

প্রেসিডেন্টের অপসারণ: আমেরিকা-সেনাসদর বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির সায় নেই

প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাড়া মিলছে না। এ ইস্যুতে সেনা প্রশাসন থেকেও মতামত দেয়া হয়েছে। অপসারণ ইস্যুতে সায় নেই বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রেরও। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করতে মাঠে নামা ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কী করবেন? 
সাহাবুদ্দিনের অপসারণ বা পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে। ইতিমধ্যে প্রধান প্রধান দলগুলোর সঙ্গে তাদের বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এসব বৈঠকে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার বিষয়ে নিজেদের মত তুলে ধরেছেন ছাত্রনেতারা। বিপরীতে বেশির ভাগ দল প্রেসিডেন্ট অপসারণের পর সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরির বিষয়টি সামনে এনেছে। এ ছাড়া অপসারণের পর বিকল্প কী হবে সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিপক্ষে। ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সরাসরি সিদ্ধান্ত না জানিয়ে দলটির নেতারা দলীয় ফোরামের আলোচনার কথা বলেছিলেন। সর্বশেষ সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনায় এই ইস্যুটি ছিল। বৈঠক সূত্র দাবি করেছে, এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্টকে অপসারণে কোনো উদ্যোগ না নিতে স্থায়ী কমিটির নেতারা একমত হয়েছেন। নেতারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে। এতে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে সরকারের কাছেও নানা পক্ষ থেকে বার্তা দেয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে ইস্যুটি নিয়ে না ভাবার পরামর্শ এসেছে এসব পক্ষ থেকে। বলা হচ্ছে, সরকারের সামনে অনেক কাজ। প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার উদ্যোগ নেয়া হলে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে সেটা সামাল দেয়ার জন্য সরকারকে সময় ব্যয় করতে হবে। এতে তাদের মূল কাজ ব্যাহত হতে পারে। 

যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভ গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সূত্রের দাবি সাক্ষাতে চলমান নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। প্রেসিডেন্ট ইস্যুটিও আলোচনায় এসেছিল। এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দূত তাদের নিজেদের অভিমত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, নানা গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে সরকার এগোচ্ছে। এই মুহূর্তে নতুন ইস্যু সামনে আনলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। 

সেনা প্রশাসনের তরফেও প্রধান উপদেষ্টাকে মতামত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফরের সময়ে সেনাসদরের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এ ইস্যুতে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে। তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করলে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে। এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক তা তারা চান না। 

রাজনৈতিক বিভিন্ন পক্ষ থেকেও প্রধান উপদেষ্টাকে মতামত জানানো হচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে জোরালো দাবি তুলেছিলেন প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিষয়ে। ওই বৈঠকে ছাত্রনেতারা সরকারের দোসর দাবি করে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। নানামুখী চাপ থাকায় প্রফেসর ড. ইউনূস ওই বৈঠকে সরাসরি কোনো মত দেননি। বরং তিনি ছাত্রদের এ ইস্যুতে নমনীয় মনোভাব পোষণ করতে বলেন। অপসারণ ইস্যু নয়া সংকট বয়ে আনতে পারে- এটাও তাদের বলেছিলেন। 

বৈঠকে তিনি রাজনৈতিক ঐকমত্যের বিষয়টি সামনে আনেন। এজন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেন ছাত্রনেতাদের। ওই বৈঠকের পরই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য দলের সঙ্গে তাদের বৈঠক শেষ হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে ছাত্রনেতারা বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, তারা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসেছেন। পুরো বিষয় নিয়ে তারা সরকারের কাছে সুপারিশ দেবেন। প্রেসিডেন্ট ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠনের পরামর্শ দেয়ার কথাও জানান তিনি। নাগরিক কমিটির এ নেতার সর্বশেষ বক্তব্য থেকেও এ ইস্যুতে তাদের নমনীয়তার ইঙ্গিত মিলে। এর আগে তারা বলে আসছিলেন, যেকোনোভাবেই হোক প্রেসিডেন্টকে সরে যেতে হবে। 

দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টকে অপসারণের বিষয়ে একমত প্রকাশ করা হলেও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রাখা হয়। এ ছাড়া তাকে সরালে বিকল্প কী হবে- এটা নিয়েও ভাবতে বলা হয়েছে। যেসব দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে এর মধ্যে বিএনপি এখনই প্রেসিডেন্টকে অপসারণে সায় দেয়নি। বিএনপি’র জোটসঙ্গী ১২ দলীয় জোটের নেতারাও একই মনোভাব পোষণ করেছেন। জামায়াতে ইসলামী ছাত্রদের দাবির পক্ষে মত দিলেও সরাসরি কোনো অবস্থান জানায়নি। ইসলামী আন্দোলন প্রেসিডেন্টকে অপসারণের পক্ষে বললেও প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুই বলেনি। প্রেসিডেন্টকে অপসারণ ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে মত দেয় গণতন্ত্র মঞ্চ। তারা এও মনে করে, নৈতিক দায় থেকে প্রেসিডেন্টকে নিজে থেকে সরে যাওয়া উচিত ছিল। গণঅধিকার পরিষদের দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৈঠকে গণঅধিকারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনৈতিক সংলাপ আহ্বানের পরামর্শ দেয়া হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto