প্লুটোর বুকে হৃদয় আঁকা হয়েছিল যেমন করে
![](https://miprobashi.com/wp-content/uploads/2024/04/1714098050-18e2999891374a475d0687ca9f989d83-780x470.webp)
মহাজাগতিক বস্তু প্লুটোর গায়ে রয়েছে একটি হৃদয় আকৃতির চিহ্ন। ২০১৫ সালে নাসার নিউ হরাইজনস মহাকাশযানের তোলা ছবিতে প্রথমবার ধরা পড়ে এটি। তখন থেকেই চিহ্নটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কৌতূহল জাগিয়ে আসছে। এত দিনে সংশ্লিষ্ট গবেষকরা মনে করছেন, ‘বামন গ্রহটির’ এই হৃৎপিণ্ড তৈরি হওয়ার রহস্য সমাধান করতে পেরেছেন তাঁরা।
বিষয়টি প্লুটোর জন্ম সম্পর্কেও নতুন তথ্য জোগাতে পারে।
১৯৩০ সালে প্লুটোর অস্তিত্ব আবিষ্কার করা জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লাইড টমবোয়ের সম্মানে তার গায়ের ওই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যটিকে টমবো রেজিও বলা হয়। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, হৃৎপিণ্ডটির পুরোটা এক উপাদানে গড়া নয়। টমবো রেজিওর উচ্চতা, ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং বিশেষ আকৃতি ও প্লুটোর বাকি অংশের তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল সাদা রং বিজ্ঞানীদের যাবতীয় ব্যাখ্যাকে অস্বীকার করে আসছে।
‘হৃৎপিণ্ডটির’ বাঁ দিকে রয়েছে স্পুিনক প্ল্যানিশিয়া নামের একটি গভীর অববাহিকা। সেখানেই প্লুটোর নাইট্রোজেন বরফের বেশির ভাগের উপস্থিতি। বিশাল এই অববাহিকাটি ৭৪৫ মাইল চওড়া এবং এক হাজার ২৪২ মাইল লম্বা। এটি আয়তনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
তবে খুদে এই ‘গ্রহের’ বাকি শরীরের তুলনায় এ অংশের উচ্চতা দুই থেকে আড়াই মাইল কম। এই স্পুিনক প্লানিশিয়ার ওপর নতুন গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল সিদ্ধান্তে এসেছে, একটি বিপর্যয়কর ঘটনাই প্লুটোর বুকে ওই হৃদয় তৈরি করেছে। জটিল গাণিতিক বিশ্লেষণের পর গবেষকরা এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে প্লুটোর সৃষ্টির গোড়ার দিকে প্রায় ৪৩৫ মাইল ব্যাসের একটি গ্রহজাতীয় বস্তুর সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছিল। আর তাতেই ওই হৃদপিণ্ডের ছাপ্পা লেগে যায় শরীরে। নেচার অ্যাস্ট্রনমি জার্নালে গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে।
১৯৩০ সালে আবিষ্কৃত প্লুটো ছিল ‘কুইপার বেল্টের’ প্রথম পরিচিত বস্তু। আবিষ্কারের পরপরই এটিকে সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার জন্য অবশেষে ২০০৬ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহের নতুন সংজ্ঞা দেয়। এতে সৌরজগতের গ্রহের তালিকা থেকে বাদ পড়ে প্লুটোর মতো ‘বামন গ্রহ’। তবে এখনো কিছুসংখ্যক জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্লুটো ও অন্যান্য বামন গ্রহকে বিবেচনা করেন গ্রহ হিসেবেই।