ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবির গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো
ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরের বেশির ভাগই মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে নতুন করে তিন সপ্তাহের স্থল অভিযানের পর গত বৃহস্পতিবার সেনা প্রত্যাহার করে নেয় ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার গাজার জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ইসরায়েলের ২০ দিনের অভিযানে জাবালিয়া শহরের বেশির ভাগ অংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে এক হাজারের বেশি বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর গাজার আরও কিছু এলাকা থেকেও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার শুরু করার খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে তাল আজ-জাতার, বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুন। এসব এলাকায় থাকা সাংবাদিকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনা সরে যাওয়ার পর এসব এলাকায় হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ শুরু করেছেন জরুরি পরিষেবা বিভাগের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাদের আংশিক প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এখন বাসিন্দারা সেখানে ফিরতে শুরু করেছেন। বাসিন্দারা বলেন, ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা দেখে তাঁরা স্তম্ভিত। বাড়িঘর ও সরকারি স্থাপনা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধ্বস্ত সড়কে গলিত মরদেহ পড়ে আছে। কিছু মরদেহ কুকুরে খেয়েছে।
একজন বাসিন্দা আল-জাজিরাকে বলেন, ‘জাবালিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা দেখুন। ইসরায়েলিরা আমাদের শেষ করে দিয়েছে। তারা মূলত আমাদের ওপর তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে।’
আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘গোটা এলাকা উধাও হয়ে গেছে। লোকজন তাঁদের বাড়িঘর খুঁজে পাচ্ছেন না। এমনকি আমরা আমাদের আত্মীয়স্বজনদের খুঁজে পাব কি না, জানি না। এটা অপরাধ।’
জাবালিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তারা বলেছে, সেনারা পূর্ব জাবালিয়ায় তাঁদের অভিযান সম্পন্ন করেছেন। নতুন অভিযানের জন্য তাঁরা প্রস্তুত হচ্ছেন।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ অভিযানের সময় প্রায় ৫০০ যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়। সাতজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ টানেল ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে রাফা শহরে আরও ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলি হামলায় রাফায় বেসামরিক লোকজনের মৃত্যু বাড়ছে।