ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অনড় ড. ইউনূস সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করার মতো কোনো শক্তি নেই

‘বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খাওয়া’ মতো বেসম্ভব ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক দল জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ-পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবিতে রাজনৈতিক অঙ্গন ‘গরম’ করছে। একই সাথে সংস্কারের অজুহাতে তারা নির্বাচন পেছানোর বাহানা তুলছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ম্যানেজ করতে দেশি-বিদেশি শক্তিকে দূতিয়ালিতে নামিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একাধিক সদস্য ও সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেছেন এমন কিছু ব্যক্তি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে বাতাস দিচ্ছেন। কিন্তু দেশের সাড়ে ১২ কোটি ভোটার ভোট দেয়ার জন্য আছেন মুখিয়ে। বিএনপিসহ অর্ধশতাধিক রাজনৈতিক দল প্রচলিত পদ্ধতিতে ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার। অর্থনীতির জাদুকর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত সময় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ব্যাপারে অনড়। তিনি সব পক্ষকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের টার্গেট করেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে ‘নির্বাচনের পথনকশা’ ঘোষণা করা হবে। মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে গত ১৩ আগস্ট কুয়ালালামপুর মালয়েশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি; যাতে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। আমরা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং ক্ষমতার প্রকৃত মালিক জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ গতকালও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। এটি বিলম্বিত করার মতো কোনো শক্তি নেই। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
‘রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত’-মন্তব্য করে ১৩ আগস্ট জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘আমরা চাই ঘোষিত সময়ে নির্বাচন হোক। যারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে, নির্বাচন পেছালেই তাদের লাভ। ভাবখানা পদ-পদবিতে থেকে খাচ্ছি-দাচ্ছি, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ভোগ-বিলাস করছি, বেশ আছি। নির্বাচন হলে এ সুযোগ-সুবিধা থাকবে না। আর দলগুলো যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারাও বর্তমান অবস্থান-মর্যাদা বেশি পাচ্ছি, সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছি, ভোট হলে সব শেষÑ এ চিন্তা থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে। তবে আমার মনে হয়, ড. ইউনূস ঘোষিত ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন করার কথা বিএনপিকে দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনের টাইমফ্রেম থেকে পেছাবেন না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচন পেছানোর দাবির আন্দোলনে বাতাস দিলেও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি প্রতিদিনের প্রশাসনিক কাজকর্মের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি দেখভাল করছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনকে বাসভবনে ডেকে নিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করবে এমন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গত ২৮ জুলাই ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রেস সচিব শফিকুল আলম নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করেন। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে এমন দেড় লাখ পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে পরবর্তী তিন মাস পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ চলবে। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬০ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করা হবে। একজন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের আগে জেলার প্রশাসনে লটারির মাধ্যমে ডিসি, এসপি নিয়োগ দেয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথম নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর। জাতীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘সংস্কারের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন দেয়া হবে। অতঃপর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা নিজ নিজ কাজে ফিরে যাবেন।’ পরে জাতীর উদ্দেশে দেয়া একাধিক ভাষণে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন লাইনে উঠে গেছে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ ট্রেন থামবে না।’ দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকার এবং বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী-এমপি ও দাতাদেশ-সংস্থার প্রতিনিধিরা ঢাকা সফরে এসে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি নির্বাচন বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, ‘স্বল্প সংস্কার হলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি, বড় সংস্কার হলে ডিসেম্বর নির্বাচন দেয়া হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার উপর নির্ভর করছে নির্বাচন।’ এরই মধ্যে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় হাত দেয়। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট জমা দেয়ার পর ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে সভাপতি করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনের সহসভাপতি করা হয় সংবিধান সংশোধন কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজকে। এ কমিশন দুই দফায় দিনের পর দিন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিক বৈঠক করে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করে। ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্নের পথে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দিনের পর দিন বৈঠক করছে; তখন হঠাৎ করে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন থেকে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি তোলা হয়। একই সঙ্গে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করে।
সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালানোর পর ভারত নানাভাবে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অতঃপর হিন্দুত্ববাদী ভারত পতিত আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে নেয়ার নীলনকশা করে। কারণ হাসিনা এবং তার মন্ত্রী-এমপিরা পালিয়ে গেলেও দেশের মোট ভোটের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কর্মী-সমর্থক ভোটার রয়েছে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে ওই ভোটারদের ভোটে আওয়ামী লীগ ৫০ থেকে ৬০ আসন পেতে পারে। চাণক্যনীতি গ্রহণ করে দিল্লি ‘বাঘে-মহিষে একঘাটে পানি খাওয়া’র কৌশল গ্রহণ করে। সেটি বাস্তবায়নে ইঙ্গ-মার্কিন শক্তি তাদের ভাষায় মর্ডারেট ইসলামী দল জামায়াতকে টোপ দিলে তারা সে ফাঁদে পা দেয়। বিএনপিকে ঠেকিয়ে আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোগ জামায়াত হঠাৎ করে নির্বাচন পেছানোর দাবির পাশাপাশি পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করে। এত হাসিনার ১৫ বছর শাসনামলের সুবিধাভোগী ইসলামী আন্দোলন এবং নির্বাচন পেছানোর দাবিতে মিল থাকায় এনসিপি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হয়। এ নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আজিজ বলেন, আওয়ামী লীগ ফিরে এলে প্রথমেই জামায়াত-ইনসিপিকে সাইজ করবে। তারপরও তারা কেন সংসদে আওয়ামী লীগকে ফেরাতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি করছেÑ তা রহস্যজনক।
মূলত ১৩ জুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘লন্ডন বৈঠকে’ পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়ে রাজনীতিতে যে টানাপড়েন, অনিশ্চয়তা ও দোদুল্যমানতা ছিল; লন্ডন বৈঠকে তা অনেকটা কেটে যায়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে ঘোষণা আসে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে আগামী বছরের রমজান মাসের আগে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে। ওই যৌথ সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে জামায়াত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক বর্জন করে। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে বেপরোয়া হয়ে উঠে জামায়াত। ১৯৪২ সালে জন্মের পর থেকে গণমানুষের বিপরীত ¯্রােতে চলতে অভ্যস্ত দলটি হাসিনার ১৫ বছরের সুবিধাভোগী ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতের এক্সটেনশন এবি পার্টি এবং এনসিপিকে নির্বাচন পেছানো এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের সঙ্গী হিসেবে পায়। অবশ্য পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যাপারে বিরোধিতা না করলেও পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি থেকে এখনো সরে আসেনি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারকে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ যে সংবিধানে মধ্য দিয়ে শপথ নিয়েছে। সেই সংবিধানোর আলোকে বর্তমান নির্বাচন করতে হবে। গত ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের আকাক্সক্ষায় জাতীয় সনদের একটি খসড়া আমরা রাজনৈতিক দলকে দিয়েছি। আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবে তারা যেন এই সনদ বাস্তবায়ন করে। তিনি বলেন, সুজনের রহস্যজনক জরিপ করা হয়নি। এ কথা ঠিক নয়।’ তিনি জানান, তার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার হাতে জমা দেয়া প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে প্রদর্শন করেছে যে, আনুপাতিক হারে নিম্নকক্ষের নির্বাচন হলে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এতে করে নির্বাচনের পর কোনো দলের পক্ষে এককভাবে সরকার গঠন করা সম্ভব হবে না। ফলে বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছোট দলগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে যেতে পারে। যা সরকারের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দেবে। তাই নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব প্রবর্তনের বিপক্ষে সুপারিশ করা হলো। আবার সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন উচ্চকক্ষ গঠন করে পিআর পদ্ধতিতে এর আসন বণ্টনের সুপারিশ করেছে, যা কথায় কথায় সংবিধান সংশোধনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করবে।
এদিকে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা ততই বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক আগ্রহ নতুন নয়, কিন্তু এবারের সক্রিয়তা ও সময়সীমা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি যেমন কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিফলন, তেমনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যও একটি বার্তা। ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, ভারত-চীন-রাশিয়ার নতুন মেরুকরণÑ সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তাদের এক ধরনের প্রভাব তৈরি করতে চায়। ঢাকায় কর্মরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি দেশে জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, এমনকি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মার্কিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের এ তৎপরতার তীব্র সমালোচনা করেছে প্রখ্যাত রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমরের জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। দলটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দিয়েছে।
জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘ড. ইউনূস ঘোষিত সময়ে নির্বাচন করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসাননি, তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন আল্লাহ। মার্কিনিরা বিশ্বের অনেক দেশে সরকার গড়া-ফেলার কাজ করলেও কোনো সুবিধা করতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসের সিদ্ধান্ত নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।’