Science & Tech

ফের সংঘর্ষের পথে মহাজাগতিক দুই তারকাপুঞ্জ, মিলতে পারে ডার্ক ম্যাটার

প্রায় ২.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত দুটি বিশাল গ্যালাক্সি ক্লাস্টার (মহাজাগতিক তারকাপুঞ্জ) পুনরায় মুখোমুখি সংঘর্ষের পথে রয়েছে। এগুলো আগেও একবার একে অপরকে আঘাত করেছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ঘটনাটি মহাবিশ্বের গঠন ও ডার্ক ম্যাটার (অদৃশ্য পদার্থ) নিয়ে গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।

এই গ্যালাক্সি জোড়ার নাম PSZ2 G181। এদের প্রত্যেকটি ক্লাস্টারে রয়েছে হাজার হাজার গ্যালাক্সি, বিশাল পরিমাণ ডার্ক ম্যাটার, এবং আগের সংঘর্ষ থেকে তৈরি হওয়া অত্যন্ত উত্তপ্ত গ্যাস।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার চন্দ্র এক্স-রে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির XMM-Newton টেলিস্কোপ এই ঘটনার চিত্র ধারণ করেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুরো গ্যালাক্সি ক্লাস্টারটি দেখতে অনেকটা বেগুনি রঙের বিশাল চিনেবাদামের মতো, যার দুই প্রান্ত ফোলানো এবং মাঝখানটা সরু। চারপাশে বাঁকা অর্ধচন্দ্রের মতো গঠন লক্ষ্য করা গেছে, যেগুলোকে বিজ্ঞানীরা ‘শক ফ্রন্ট’ (ধাক্কার ফলে সৃষ্ট মহাশব্দীয় তরঙ্গ) হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

প্রথম সংঘর্ষে সৃষ্ট এই শক ফ্রন্টগুলো বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে সরে গেছে, যা এই ধরণের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দূরত্বে সরে যাওয়া ধাক্কার তরঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এতে বোঝা যায়, গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের সংঘর্ষ কতটা ব্যাপক ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রথম সংঘর্ষের পর এখন দুটি ক্লাস্টার ধীরগতিতে আবার একে অপরের দিকে ফিরে আসছে। ফলে দ্বিতীয়বারের মতো ভয়াবহ মহাজাগতিক ধাক্কার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

গবেষণার প্রধান লেখক আন্দ্রা স্ট্রোয়ে জানিয়েছেন, বড় গ্যালাক্সি ক্লাস্টারে এমন সংঘর্ষ আমরা প্রায়ই দেখি। কিন্তু তুলনামূলক ছোট গঠনের মধ্যে এমন বড় মাত্রার সংঘর্ষ খুবই বিরল। তাই এটি পর্যবেক্ষণ করতে পারা বিজ্ঞানীদের জন্য এক বিরল সুযোগ।

এই সংঘর্ষ থেকে বিজ্ঞানীরা ডার্ক ম্যাটার কীভাবে আচরণ করে, সেটাও নতুনভাবে বোঝার চেষ্টা করবেন। পাশাপাশি এটি মহাবিশ্বের গঠন ও বিকাশ নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরতে পারে বলে ধারণা করছেন গবেষকেরা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto