ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে জাহাজ টেনে নিল ঘুড়ি
ঘুড়ির সাহায্যে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কার্গো জাহাজ
এক হাজার বর্গমিটারের একটি ঘুড়ি। সমুদ্রের ৩০০ মিটার ওপর দিয়ে ঘুড়িটি উড়ে যাচ্ছে। আর মহাসমুদ্রে চলছে বিশালাকার একটি জাহাজ। ভাবছেন, ঘুড়ির সঙ্গে জাহাজটির সম্পর্ক কী? সম্পর্ক আছে। কারণ, সেই জাহাজ জ্বালানি দিয়ে চলছিল না। ওই ঘুড়িই বিশাল জাহাজটিকে টেনে নিচ্ছিল।
বাতাসের শক্তি কাজে লাগিয়ে ঘুড়ির সাহায্যে অনেককে সমুদ্রের ওপর উড়তে দেখা যায়। সেই একই ধারণা কাজে লাগিয়ে জাহাজ টেনে নিয়ে গেছে ঘুড়ি। ঘুড়ির মাধ্যমে জাহাজ টেনে নিয়ে যাওয়ার বিশেষ ওই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস।
ঘুড়ির সাহায্যে জাহাজ টেনে নেওয়ার সফল পরীক্ষা চালানোর পর এয়ারবাস জানিয়েছে, এর মাধ্যমে কার্গো জাহাজ টেনে নিলে জ্বালানির ব্যবহার কম হবে। একই সঙ্গে এটি পরিবেশবান্ধবও। কারণ, ঘুড়ির সাহায্যে জাহাজ টেনে নেওয়া হলে কার্বন নিঃসরণ গড়ে ২০ শতাংশ কম হবে।
ঘুড়ি নিয়ে জাহাজ টানার এই ধারণা প্রথম মাথায় আসে এয়ারবাসের দুই প্রকৌশলীর, ২০১৬ সালে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এয়ারসিস নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। কয়েক বছরের গবেষণার পর এর পরীক্ষা শুরু করে। ঘুড়ির মাধ্যমে একটি কার্গো জাহাজ ফ্রান্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে।
কার্গো জাহাজ মূলত চলে জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) হিসাবে, পৃথিবীতে মোট কার্বন নিঃসরণের প্রায় ৩ শতাংশই হয় কার্গো জাহাজ থেকে।
বিষয়টি উল্লেখ করে এয়ারবাসের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এয়ারসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ভিনসেন্ট বারনেটেটস বলেন, এ জন্য কার্গো জাহাজে এমন রূপান্তর খুব জরুরি
কার্গো জাহাজের বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্রিন অ্যামোনিয়া নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে সেটি অনেক বেশি ব্যয়বহুল। এ ক্ষেত্রে বারনেটেটসের যুক্তি, গ্রিন অ্যামোনিয়া ব্যবহারের জন্য অবকাঠামো তৈরিতে আরও কয়েক দশক প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে আমরা বিকল্প কী করতে পারি? তাই আমরা বাতাসের শক্তি ব্যবহার করে এ প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছি।’