বন্দুকের মুখে মুসলিম নাগরিকদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত, দাবি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর

গত ২৫ মে হাজেরা খাতুনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় এবং পরদিন রাতের আঁধারে ১৪ জন মুসলিমসহ একটি ভ্যানে করে বাংলাদেশ সীমান্তে পাঠিয়ে দেয়।
ভারত সরকার বেআইনিভাবে ভারতীয় মুসলিমদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, সম্প্রতি ভারতে হাজার হাজার মানুষ (যাদের বেশিরভাগই মুসলিম ও সন্দেহভাজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী) পুলিশি অভিযানে আটক হয়েছেন। তাদের অনেককেই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী ও বাংলাদেশে পাঠানো ব্যক্তিদের অনেকেই বলছেন, অনেক ভারতীয় নাগরিককেও বেআইনিভাবে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। যারা এর প্রতিবাদ করেছেন, তাদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দিয়েছে বলেও একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভারত যাদের বাংলাদেশে পাঠিয়েছে, তাদের মধ্যে থেকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবি এমন প্রায় ২০০ জনকে পুনরায় ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে, যাদের কাছে বৈধ ভারতীয় নাগরিক হওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ ছিল। এসব ব্যক্তি বিপজ্জনক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে নিজ দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের জ্যেষ্ঠ গবেষক তাসকিন ফাহমিনা বলেন, ‘ভারত যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে মূলত মুসলিম ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাচাই-বাছাই ছাড়া এভাবে পুশ ইন (ঠেলে পাঠানো) বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ভারত সরকারকে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এসব চিঠির কোনো জবাব মেলেনি।
বাংলাদেশে পাঠানোর পর পুনরায় যাদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন ৬২ বছর বয়সি হাজেরা খাতুন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার মেয়ে জরিনা বেগম বলেন, তাদের কাছে প্রমাণ করার মতো যথেষ্ট কাগজপত্র আছে যে তার মায়ের পরিবারের দুই প্রজন্ম ভারতে জন্মগ্রহণ করেছে। ‘তাহলে তিনি কীভাবে বাংলাদেশি হতে পারেন?’ প্রশ্ন তার।
গত ২৫ মে হাজেরা খাতুনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় এবং পরদিন রাতের আঁধারে ১৪ জন মুসলিমসহ একটি ভ্যানে করে বাংলাদেশ সীমান্তে পাঠিয়ে দেয়। হাজের খাতুন জানান, সেখানে বিএসএফ সদস্যরা তাদের জোর করে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য করে।
হাজেরা বলেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছে যেন আমরা পশু। আমরা বলেছিলাম, আমরা ভারতীয়, কেন বাংলাদেশে যাব? কিন্তু তারা বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বলেছিল—’ওপাশে না গেলে আমরা তোমাদের গুলি করব। এরপর সীমান্তের ভারতীয় অংশে চারটি গুলির শব্দ শুনে আমরা ভয় পেয়ে যাই এবং দ্রুত সীমান্ত পার হই।’
বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করার পর একপর্যায়ে তারা বিজিবির হাতে আটক হন। খাতুন জানান, তাদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকায় বাংলাদেশ সরকার তাদের ফিরিয়ে দেয়। পরে ট্রাকে করে তাদের সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ভারতে ফিরে যেতে বলা হয়।
হাজেরা বলেন, ‘আমরা ফিরে আসার সময় খুব ভয় লাগছিল। জঙ্গল, নদী পেরিয়ে হাঁটতে হয়েছে … আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম, ভেবেছিলাম বিএসএফ যদি আমাদের আবার ধরে, তাহলে মেরে ফেলবে। মনে হচ্ছিল আমরা মরেই যাব।’
অবশেষে গত ৩১ মে হাজেরা নিজ বাড়িতে ফেরেন। তার পরিবারের লোকেরা জানান, যখন হাজেরা বাড়িতে ফেরেন, তখন তিনি মানসিকভাবে প্রচণ্ড খারাপ অবস্থায় ছিলেন।
গত এপ্রিলে কাশ্মীরে বন্দুকধারীর হামলায় ২৫ জন হিন্দু পর্যটক ও এক গাইড নিহতের ঘটনার পর কথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’বিরুদ্ধে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকারের চলমান দমন-পীড়নমূলক অভিযানের মাত্রা বেড়েছে। বিজেপি সরকার ‘বহিরাগতদের’ দেশছাড়া করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পর ১১ বছরে বিজেপি সরকার তাদের হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডার অংশ হিসেবে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মুসলিমকে নিপীড়ন, হয়রানি ও নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামে সবচেয়ে বেশি মুসলিমকে লক্ষ্যবস্তু ও নির্বাসন করা হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যটি বহুদিন ধরেই ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। মানবাধিকারকর্মীদের মতে, রাজ্যটিতে সম্প্রতি আটক প্রায় ১০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
মানবাধিকারকর্মীরা আসামে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের’ বহিষ্কারের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
আসামে মুসলিমদের বিদেশি শনাক্তকরণে গঠিত আদালতে (‘ফরেন ট্রাইব্যুনাল’) হাজির হয়ে প্রমাণ করতে হয় যে তারা ভারতের নাগরিক। এ প্রক্রিয়ায় শুধু মুসলিমদেরই নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বাধ্য করা হয়। হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য ধর্মের মানুষদের এ থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এ সপ্তাহে আসামের কট্টরপন্থী বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ”’অবৈধ বিদেশিদের’ বিতাড়িত করাই এখন রাজ্যের নীতিতে পরিণত হয়েছে। এ প্রক্রিয়া আরও জোরালো ও দ্রুততর হবে।”
বাংলাদেশে পুশ ইন করা সব ভারতীয় নাগরিকই আবার দেশে ফিরতে পারেননি। এখনো বাংলাদেশে আটকে আছেন ৬৭ বছর বয়সি মালেকা বেগম। তাকে গত ২৫ মে আসাম থেকে আটক করা হয়।
মালেকা বেগম। ছবি: জাকির হোসেন/দ্য গার্ডিয়ান
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম থেকে ফোনে কথা হলে মালেকা বেগম বলেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং একা একা হাঁটাচলা করতে পারেন না। গত ২৭ মে রাতে তাকে ২০ জন মুসলিম পুরুষের সঙ্গে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়। বিএসএফ সদস্যরা বন্দুকের মুখে তাদের সীমান্ত পার হতে বাধ্য করে।
মালেকা বেগমের ছেলে ইমরান আলী বলেন, তার মায়ের ভারতীয় নাগরিক হওয়ার যথাযথ কাগজপত্র আছে। এমনকি তার সাত ভাই-বোনেরও প্রমাণ আছে। তাকে বাংলাদেশে পাঠানো সম্পূর্ণ বেআইনি। এখন কীভাবে তাকে ফিরিয়ে আনব বুঝতে পারছি না। তিনি অসুস্থ ও বয়স্ক। আমরা খুব উদ্বিগ্ন’।
এ বিষয়ে জানতে অনুরোধ করার পরও আসাম পুলিশ ও বিএসএফ কোনো মন্তব্য করেনি।
What’s up it’s me, I am also visiting this web site on a regular basis, this site is truly fastidious
and the users are truly sharing pleasant thoughts.
I’m curious to find out what blog system you are using? I’m having some minor
security problems with my latest site and I’d like to find something more risk-free.
Do you have any recommendations?
Hmm is anyone else encountering problems with the images on this
blog loading? I’m trying to find out if its a problem on my end or if it’s the blog.
Any suggestions would be greatly appreciated.
It’s actually a great and useful piece of info. I am happy that you shared this helpful information with us.
Please stay us up to date like this. Thanks for sharing.
Excellent post! We are linking to this great article on our site.
Keep up the great writing.
Wonderful article! That is the type of information that
should be shared around the internet. Disgrace on Google for
not positioning this put up higher! Come on over and seek advice from my website .
Thank you =)
بلیچینگ دندان در شمال تهران
Hi there! This is my first visit to your blog!
We are a team of volunteers and starting a new initiative in a community in the same niche.
Your blog provided us valuable information to work on. You
have done a outstanding job!
Very rapidly this site will be famous among all blogging and
site-building users, due to it’s nice posts
Please let me know if you’re looking for a article author for your
site. You have some really good posts and I think I would
be a good asset. If you ever want to take some of
the load off, I’d really like to write some material for your blog
in exchange for a link back to mine. Please blast me an email if
interested. Regards!
Excellent web site you’ve got here.. It’s
difficult to find quality writing like yours these days.
I truly appreciate people like you! Take care!!