Bangladesh

বন্ধ সব পোশাক কারখানা খুলছে আজ, ক্ষতি ১৩৭৫ কোটি টাকা

* আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৫ কারখানায় ভাঙচুর * নিট পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ * মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু পোশাক শ্রমিকদের ১৭ দিনের আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৫টি কারখানায় ভাঙচুর চালানো হয়। এতে এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। এদিকে বন্ধ ঘোষণা করা সব কারখানা আজ বুধবার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ।

বন্ধ কারখানা সংশ্লিষ্ট এলাকার শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসন ও শিল্প পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে বিজিএমইএ।

গত রবিবার পোশাকশিল্প কারখানায় কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে ১৩০টি পোশাক কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। বিজিএমইএর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব কারখানার শ্রমিকরা মালিকদের আশ্বস্ত করেছেন, কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।

আজ ১৫ নভেম্বর সব বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া হবে।

শ্রমিক বিক্ষোভ চলাকালে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও কারখানা বন্ধ থাকার ঘটনায় সার্বিক ক্ষতি নিয়ে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি কালের কণ্ঠকে বলেন, মজুরি বাড়ানো আন্দোলনে বিজিএমইএর ২৫টি কারখানায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব কারখানায় গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, স্থাপনা, কাপড়, কম্পিউটার, যন্ত্রপাতিসহ মোট ক্ষতি এক হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে এবিএম ফ্যাশনের ৫৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিট পোশাক কারখানায় নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ

নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখার জন্য সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলনে মুখে গত সপ্তাহে নিজেদের সদস্য কারখানাকে নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলে দিয়েছিল তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বিকেএমইএ তাদের সদস্যদের জন্যও একই নির্দেশনা দিয়েছে।

মালিকদের উদ্দেশে বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বলেন, ‘শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে। আপনার কারখানায় কোনো অবস্থাতেই যাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখুন।’

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গত এপ্রিলে নিম্নতম মজুর বোর্ড গঠন করে সরকার। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দেন। আর মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা পরদিন আন্দোলনে নামেন। প্রথমে গাজীপুরে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া ও মিরপুরে ছড়ায়। এই আন্দোলনে গাজীপুরের চারজন পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

মিরপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

নতুন বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর মিরপুর-১০, ১৩ ও ১৪ নম্বর এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত তাঁরা মিরপুর-১৪ নম্বর এলাকার সড়কে অবস্থান নেন। এ সময়ে অবস্থান নেওয়া ওই সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button