Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

বন্ধ ৩৫৩ কারখানা, লক্ষাধিক বেকার

  • গাজীপুর সাভার নারায়ণগঞ্জ নরসিংদী ও চট্টগ্রাম

গত এক বছরে সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ৩৫৩টি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। তাতে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৪২ শ্রমিক বেকার হয়েছেন। তাঁদের অনেকে চাকরির জন্য ছুটতে ছুটতে শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে গ্রামে ফিরেছেন। বন্ধ কারখানার বেশির ভাগই তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ও টেক্সটাইলশিল্পের।

কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্প পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

শিল্প মালিকরা বলছেন, ব্যাংকঋণ সুদে কড়াকড়ি, শ্রমিক অসন্তোষসহ বিভিন্ন কারণে দেশে শিল্প-কারখানা বন্ধ হচ্ছেই। তাঁরা চরম সংকটের কারণেই কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

তাঁরা বলছেন, কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার ছাড়াও কাঁচামাল আমদানিতে এলসি সমস্যা, শিল্পে অব্যাহত গ্যাসসংকট, দফায় দফায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়া, অব্যাহতভাবে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচে অনেকে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না।

সাভারে বন্ধ ২১৪ কারখানা : সাভার প্রতিনিধি ওমর ফারুক জানান, শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ায় এক বছরে ২১৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে স্থায়ীভাবে ১২২টি ও অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে ৯২টি কারখানা। বন্ধ হওয়ায় এসব কারখানার প্রায় ৩১ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ নিয়ে কড়াকড়ি এবং বিভিন্ন কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মেলাতে না পারায় কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।

আশুলিয়ায় অস্থায়ীভাবে বন্ধ বড় কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে ওডিসি ক্রাফট পিডিপি লিমিটেড, মাসকট গ্রুপ, ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেড (প্রাইড গ্রুপ), গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেড ও সিঙ্গার ইলেকট্রনিকস। স্থায়ীভাবে বন্ধ বড় কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে দি ড্রেসেস অ্যান্ড দি আইডিয়াস লিমিটেড, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড, সাফওয়ান আউটার ওয়্যার লিমিটেড, ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ বিভিন্ন কারখানা। বন্ধ কারখানাগুলোর একটি সাভারের বিশমাইল-জিরাবো সড়কের কাঠগড়া আমতলার ছেইন অ্যাপারেলস লিমিটেড। গত ফেব্রুয়ারিতে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে না পারায় অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।

এতে বেকার হয়ে পড়েছেন কারখানার এক হাজার ৭৬৫ জন শ্রমিক-কর্মচারী। এই কারখানার শ্রমিক জেসমিন আক্তার বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে কারখানায় চাকরি করছিলাম। গত ফেব্রুয়ারি থেকেই কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। এর পর থেকে বেকার হয়ে বিভিন্ন কারখানায় চাকরির জন্য গিয়েছি। কিন্তু আমাদের ফিঙ্গার লক করে রাখায় অন্য কোথাও চাকরি পাইনি। আন্দোলনের পর কর্তৃপক্ষ আমাদের ফিঙ্গার লক খুলে দিয়েছে। তবে অন্য কোনো কারখানায় লোক নিচ্ছে না। প্রথমে জিনিসপত্র বন্ধক রেখে চলেছি। অনেক টাকা দোকানে বাকি থাকায় দোকানিও বাকি দিচ্ছিলেন না। বাসাভাড়া দিতে না পারায় ঘরের সব কিছু রেখে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’ কারখানার ব্যবস্থাপক সুজাত মল্লিক খান জানান, কারখানা বন্ধ থাকায় তিনি ফরিদপুর জেলার সদর থানার দিল মাহমুদপুর গ্রামে বসবাস করছেন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ঢাকার শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ছেইন অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে শ্রম আদালতে মামলা করা হয়েছে। বন্ধ থাকা জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন কারখানার শ্রমিক মাহমুদা বেগম বলেন, ‘মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করায় মালিক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। এই কারখানায় পাঁচ-ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করতাম। কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা অনিশ্চয়তায় আছি।’

গাজীপুরে বন্ধ ৭২ কারখানা : গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক শরীফ আহমেদ শামীম জানান, জেলায় একে একে শিল্প-কারখানা বন্ধ হচ্ছে। তাতে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। তাঁরা কাজ না পেয়ে নানা অপরাধে যুক্ত হচ্ছেন। কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক বছরে গাজীপুরে ৭২টি কলকারখানা বন্ধ করা হয়েছে। কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে মাহমুদ জিন্স, ডার্ড কম্পোজিট, পলিকন লিমিটেড, টেক্সটিল ফ্যাশন, ক্লাসিক ফ্যাশন, লা-মুনি অ্যাপারেলসসহ বিভিন্ন কারখানা। কারখানা বন্ধ হওয়ায় জেলায় বেকার হয়েছেন প্রায় ৭৩ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থাভাবে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় রপ্তানিমুখী বেক্সিমকো গ্রুপের ১৩ পোশাক কারখানা। জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, চাকরি হারানো শ্রমিকদের খুব কমই অন্য কারখানায় চাকরি পেয়েছেন।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের গাজীপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে ৪৩টি কারখানা বন্ধ হয় গত জানুয়ারিতে। বেক্সিমকোর ১৩টিসহ বাকি কারখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছে গত ছয় মাসে। সব মিলিয়ে বেকার হয়েছেন ৭৩ হাজার ১০৩ জন শ্রমিক। এগুলোর বেশির ভাগই কাজ না থাকা, কার্যাদেশ বাতিল এবং আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়েছে। এই অধিদপ্তরের গাজীপুরের সহকারী মহাপরিদর্শক (সাধারণ) মো. রবিউল ইসলাম বাঁধন কালের কণ্ঠকে জানান, দেশের পোশাক কারখানাগুলো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, মালিকানা পরিবর্তন, ব্যাংকঋণ রিশিডিউল না করা, কাজ না থাকা ইত্যাদি কারণে কারখানা বন্ধ হচ্ছে। তবে আর্থিক সংকটের কারণেই বন্ধ হচ্ছে বেশির ভাগ কারখানা।

চট্টগ্রামে বন্ধ ২১ কারখানা : চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক মুহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান, গত এক বছরে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়েছে ২১টি কারখানা। তাতে জাহাজ ভাঙাসহ বিভিন্ন কারখানার কমপক্ষে ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন। ২১ কারখানাসহ ২০০৫ সাল থেকে তৈরি পোশাক ও শিপ ব্রেকিং (জাহাজ ভাঙা শিল্প) এই দুটি প্রধান শিল্প খাতে ৪১৬ কারখানা একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর তথ্যানুসারে, ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে ৬৯৯টি নিবন্ধিত কারখানার মধ্যে ৬১০টি সচল ছিল, সেখানে এখন ৩৫০টি কারখানা চালু রয়েছে। বাকি ২৬০টি কারখানায় তালা ঝুলছে। এর মধ্যে গত বছর ১৪টি ও চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে সাতটি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। এর বাইরে এক বছরে একাধিক জাহাজ ভাঙা কারখানা বন্ধ এবং কয়েকটি কারখানায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কমানো হয়েছে। বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ক্রয়াদেশ কমার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও ব্যাংকিং সংকটও এসব কারখানা বন্ধ হওয়ার কারণ। বিজিএমইএর আরেক সাবেক প্রথম সহসভাপতি মো. নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর মতে, সুযোগ-সুবিধার অভাবে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা চট্টগ্রামে আসতে চান না। তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ঢাকায় যেতে হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামে দক্ষ শ্রমিকের সংকটও এই শিল্পকে দুর্বল করে তুলছে।

চট্টগ্রামে তৈরি পোশাক খাতের চেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে জাহাজ ভাঙা শিল্পে। প্রতিবছর সীতাকুণ্ডে ২০০ থেকে ২৫০টি জাহাজ ভাঙা হয়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপকূলে ২০ কিলোমিটারজুড়ে গড়ে উঠেছিল ১৮০টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড। সংশ্লিষ্ট খাত সূত্র জানায়, এখন সেগুলোর বেশির ভাগই বন্ধ। বর্তমানে চালু আছে ২৪টি। ১৫৬টি ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত দুই লাখ শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন আগেই। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সাবেক কার্যকরী সদস্য আবুল কাশেম জানান, বেশির ভাগ ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার বাড়ছে। শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কখনো অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ, কখনো আন্তর্জাতিক বাজারে লোহার মূল্যবৃদ্ধি—এসব কারণে মালিকরা বিপুল লোকসানের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া ব্যবসা বন্ধ থাকলেও এলসির বিপরীতে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ বন্ধ ছিল না, ফলে মালিকরা কঠিন সংকটে পড়েন। ডলার সংকট, এলসি খুলতে ব্যাংকের কঠোর শর্ত এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণেও এই শিল্পে চরম দুরবস্থা দেখা দিয়েছে। মোস্তফা হাকিম গ্রুপের পরিচালক মো. সারোয়ার আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, নতুনভাবে কারখানা স্থাপনে আগ্রহীরা গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগও পাচ্ছেন না।

না.গঞ্জে বন্ধ ২৬টি পোশাক কারখানা : নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি রাশেদুল ইসলাম রাজু জানান, নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় এক হাজার ৮৩৪টি পোশাক কারখানা রয়েছে। সূত্র জানায়, বিভিন্ন কারণে এক বছরে ২৬টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৪২ জন। বন্ধ কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে নিট গার্ডেন, একে ফ্যাশন লিমিটেড, লা মেইজন কচুর লিমিটেড, মোল্লা নিট ফ্যাশনসহ অন্তত আটটি বড় প্রতিষ্ঠান। এদিকে কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পোশাক কারখানার মধ্যে বেশির ভাগই বন্ধ হয়েছে আর্থিক সংকট এবং পর্যাপ্ত কাজের অভাবের কারণে। স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও গত এক বছরে নারায়ণগঞ্জের ১৯টি কারখানা অস্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কারখানা লে-অফ করা হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর দিচ্ছে ভিন্ন হিসাব। তাদের হিসাবে, নারায়ণগঞ্জে নিবন্ধনকৃত পোশাক কারখানা এক হাজার ১০টি। এর মধ্যে গত এক বছরে ৯টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

বন্ধ হয়ে যাওয়া নিট গার্ডেন কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল হোসেন রনি বলেন, ‘কারখানায় প্রায় সাড়ে ৪০০ শ্রমিক কাজ করত। দৈনিক ১০ হাজারেরও বেশি পোশাক তৈরি হতো। আর টাকার অঙ্কে বলতে গেলে প্রতিদিন ২০ হাজার মার্কিন ডলারের সমমূল্যের পোশাক তৈরি হতো। ঋণ খেলাপের কারণেই মূলত আমাদের কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আমাদের প্রত্যেক শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়েছে।’ এএসটি গার্মেন্টসের মালিক মো. আতিকুর রহমান বলেন, কার্যাদেশ কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে কয়েক মাস কারখানাটি পরিচালনা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এম এ শাহীন বলেন, নারায়ণগঞ্জে যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলোর বেশির ভাগ শ্রমিক বেঁচে থাকার জন্য এখন অটোরিকশা চালাচ্ছেন, কিছুসংখ্যক শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোরশেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, কয়েকটি কারখানা আগে থেকেই বন্ধ হওয়ার উপক্রম ছিল। বিগত সরকারের আমল থেকেই ফ্যাক্টরিগুলো দুর্বল অবস্থায় ছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব থেকেই বন্ধ শুরু হয়। ব্যাংকের সুদহার বেড়ে যাওয়া, কার্যাদেশ কমতে থাকা—এসব কারণে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ না এলে আগামী দিনে আরো কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।

নরসিংদীতে বন্ধ ২০ কারখানা : নরসিংদী প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান জানান, নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দিতে হামিদ ফ্যাব্রিকস লিমিটেডে কাজ করতেন প্রায় এক হাজার ৪০০ শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা। দেড় মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি লে-অফ ঘোষণা (সাময়িক বন্ধ) করা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্যাসসংকটের কথা বললেও রয়েছে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণ। কারখানা বন্ধ থাকলেও জেলা প্রশাসন, কলকারখানা পরিদর্শকের কার্যালয়, শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখানকার শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে বাধ্য হচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে সেটা হয়তো আর ১৫ দিন চলমান থাকবে। এর মধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে হয়তো জেলার সবচেয়ে পরিছন্ন ও আধুনিক কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নরসিংদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদীতে বিভিন্ন শ্রেণির কারখানা রয়েছে দুই হাজার ২৫১টি। এর মধ্যে বড় ৪০টি, মাঝারি ৭১টি ও ছোট দুই হাজার ১৪০টি। এর মধ্যে ছোট কারখানা বন্ধ হয়েছে ২০টি। এতে কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ৫০০ শ্রমিক-কর্মচারী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto