বসতি এলাকায় খসে পড়ল চীন-ফ্রান্সের সেই রকেটের অংশ
শনিবার চীন এবং ফ্রান্স যৌথভাবে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে। এর নাম লং মার্চ ২-সি। চীনের শিচাং স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে স্থানীয় সময় ভোর ৩টার দিকে স্পেস ভেরিয়েবল মনিটর মহাকাশযানের সঙ্গে সেটি উৎক্ষেপণ করা হয়। রকেটটি ছিল আসলে বুস্টার। উৎক্ষেপণের কিছুক্ষণের মধ্যেই এর কিছু অংশ খসে পড়ে চীনের বসতি এলাকায় এবং তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে, যা ক্যামেরাবন্দি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, আকাশ থেকে হলুদ ধোঁয়ার একটি রেখা দ্রুত গতিতে নিচের দিকে নেমে আসছে, যার অগ্রভাগে রয়েছে রকেটের অংশ। বাড়িঘর, গাছপালার মধ্যেই আছড়ে পড়ে রকেটের ওই অংশ এবং বিস্ফোরণ ঘটে। পুরো ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। রকেটটিকে আকাশ থেকে নেমে আসতে দেখেই ছুটতে শুরু করেন লোকজন এবং শিশুরা। দূর থেকে সেটিকে আছড়ে পড়তে দেখে তারা। লং মার্চ ২-সি রকেটে নাইট্রোজেন টেট্রোক্সাইড এবং আনসিমেট্রিক্যাল ডাইমিথাইলহাইড্রাজিন ব্যবহৃত হয়েছিল, যা মানবশরীরের জন্য বিষাক্ত। তাই বসতি এলাকায় রকেটের ওই অংশ ভেঙে পড়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ওই বিষাক্ত গ্যাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করার ফল মারাত্মক হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রকেটের অংশ বিশেষ খসে পড়লেও মহাকাশযান উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে চীন। এযাবৎকালীন সবচেয়ে শক্তিশালী মহাকাশযান হিসেবেলং মার্চ ২-সিকে চিহ্নিত করেছে তারা। বহুদূরের নক্ষত্রের বিস্ফোরণও সেটি ক্যামেরাবন্দি করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। মহাকাশযানটি পৃথিবীর কক্ষপথে পৌঁছে গেছে বলে খবর।
চীনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, গামা রে-র বিস্ফোরণ থেকে মহাজাগতিক বস্তুসমূহ নিয়ে গবেষণা চালাবে লং মার্চ ২-সি মহাকাশযানটি। মহাকাশ গবেষণার পথও আগামী দিনে এতে প্রশস্ত হবে বলে দাবি চীনা বিজ্ঞানীদের।
এই প্রথম মহাকাশ গবেষণায় যৌথভাবে অংশ নিল চীন ও ফ্রান্স। মহাকাশ গবেষণায় যে চীনের আধিপত্য ক্রমশ বাড়ছে, এর দ্বারা তারই ইঙ্গিত মিলছে। চলতি মাসের শুরুতেই তাদের চ্যাংই-৬ মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা সংগ্রহে সফল হয়। ২৫ জুন সেই নমুনা পৃথিবীতে এসে পৌঁছনোর কথা। চীনই প্রথম দেশ, যারা চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে সফল হল।