Hot

বাংলাদেশের প্রতি নাগরিকের মাথাপিছু ঋণ এখন ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা

যে শিশুটি এখন জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশে তার ঋণ ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মানে সে জন্ম নিয়েছে এই ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (বিবিএস) সর্বশেষ (২৮ নভেম্বর, ২০২৩) তথ্য বলছে দেশে সর্বমোট জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। আর গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া মোট ঋণ ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে দেশের প্রতিটি মানুষের (সব বয়সী) মাথাপিছু ঋণ এখন ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আসল হোক আর সুদ হোক তা পরিশোধ করতে হবে দেশের প্রত্যেক করদাতাদেরই।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া দেশি-বিদেশি ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন: সাবেক সরকারের যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় দেশি উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে। যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেওয়াকে সব সময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গত ১৫ বছরে অনেক বিদেশি ঋণও নেওয়া হয়েছে। তবে এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয়েছে দর–কষাকষি ও বাছবিচারহীনভাবে; যা সরকারের দায়দেনা পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়েছে।

সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরের বেশি সময়ে বাছবিচার ছাড়াই ঋণ নিয়েছে। এ ঋণের বড় অংশই নেওয়া হয়েছে দেশি উৎস থেকে। এর মধ্যে আবার বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে দেশের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া দেশি-বিদেশি ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পদত্যাগের সময় শেখ হাসিনার সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এ ঋণ পরিশোধে এখন ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, সাবেক সরকারের যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় দেশি উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে। যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেওয়াকে সব সময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গত ১৫ বছরে অনেক বিদেশি ঋণও নেওয়া হয়েছে। তবে এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয়েছে দর–কষাকষি ও বাছবিচারহীনভাবে; যা সরকারের দায়দেনা পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন : সামনে আসছে ঋণ পরিশোধের চাপ। এত অপরিকল্পিত ও প্রায় দর-কষাকষিহীনভাবে বৈদেশিক মুদ্রায় সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট নেওয়া হয়েছে, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে।

অর্থ বিভাগ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ঋণের প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। তাতে মোট ঋণের স্থিতি দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ঋণের হিসাব হালনাগাদ করা হয় তিন মাস পরপর। মার্চ ও জুনের হিসাব আরও কিছুদিন পর তৈরি করা হবে।

অর্থ বিভাগ ধারণা করছে, চলতি বছরের জুন শেষে দেশি-বিদেশি ঋণ স্থিতি দাঁড়াবে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে দেশি অংশ হবে ১০ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা আর বিদেশি অংশ ৮ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা।

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের যে স্থিতি ছিল, তা দেশের তিনটি বাজেটের মোট অর্থ বরাদ্দের সমান।

বড় ঋণের বোঝা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেছেন : চীনের কাছে কিছু ঋণের সুদহার এবং শোধ দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ জানাবে সরকার। দেশি-বিদেশি বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বড় চাপ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন : গত সরকারের নেওয়া ঋণের বেশ বড় একটা অংশ খুব ভালো দরকষাকষি করে নেওয়া হয় নাই, এটা কাম্য ছিল না।

এদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন: চীন এ পর্যন্ত ৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ঋণ ছাড় করা হয়েছে। আরো ৭ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে দেশটির।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button