বাংলাদেশে অসুস্থ গণতন্ত্রে একপক্ষীয় নির্বাচন: নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ
রোববার নির্বাচনে টানা চতুর্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু দেশে কী গণতন্ত্র থাকবে- সেটাই বড় প্রশ্ন।
প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে চূর্ণবিচূর্ণ করা হয়েছে। তাদের গতিশীল হওয়ার সক্ষমতা নেই বললেই চলে। এই দলটির যেসব নেতা জেলের বাইরে আছেন তারা আদালতে অফুরন্ত হাজিরায় জর্জরিত অথবা যারা পালিয়ে আছেন তাদের পিছু নিয়েছে পুলিশ। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ একপক্ষীয় প্রতিযোগিতার পথ পরিষ্কার করেছে। যেখানে দলটি নির্বাচনে নিজেদেরই ডামি প্রার্থী দেয়ার আহ্বান জানায়, যাতে মনে হয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জবিহীন হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি, যাতে নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য একটি নির্দলীয় প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা যায়, নির্বাচন তদারকির জন্য। কিন্তু তাদের সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন শেখ হাসিনা। ফলে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে।
এমনকি বাংলাদেশ যখন দৃশ্যত সমৃদ্ধির পথ খুঁজে পেয়েছে, অভ্যুত্থান ও হত্যকাণ্ডের একটি যুগ অতিক্রম করেছে, তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এই নির্বাচন এটাই দেখিয়ে দেয় যে- ১৭ কোটি মানুষের এই দেশটি কয়েক দশক ধরে প্রধান দুটি দলের মধ্যে পুরনো বিবাদের মধ্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
সহিংসতার আশঙ্কা বাতাসে ভাসছে। বিরোধীরা ভোটের বিরোধিতা করছে।
তারা বার বার দেশজুড়ে ধর্মঘট, অবরোধ ও গণঅসহযোগ আহ্বান করেছে। জবাবে তাদের ওপর কড়া দমনপীড়ন চালানো হয়েছে। দলীয় নেতা ও আইনজীবিদের মতে, ২৮শে অক্টোবর মহাসমাবেশের পর বিএনপির কমপক্ষে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারাগারগুলো উপচে পড়ছে। তার ভিতরকার ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট পাওয়ার কথা বলেছেন ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকরা। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৮শে অক্টোবর থেকে জেলে নিহত হয়েছেন বিরোধী দলের কমপক্ষে ৯ জন নেতা বা কর্মী। বিএনপি আরও একটি হরতাল আহ্বান করেছে দেশজুড়ে। এবার নির্বাচনের প্রাক্কালে এই হরতাল। এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও অন্য অঞ্চলগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা সদস্যদের।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক পিয়েরে প্রকাশ বলেছেন, নির্বাচনের পর উভয় পক্ষের মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধির ঝুঁকি আছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি যদি ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাদের অহিংস কৌশল ব্যর্থ বলে মনে করে, তাহলে অতীতের প্রকাশ্য সহিংসতার দিকে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপের মুখে পড়তে পারে। পিয়েরে প্রকাশ বলেন, যদি বিএনপি ব্যাপক সহিংসতা শুরু করে তাহলে তারা একটি ফাঁদে পা দেবে। প্রধানমন্ত্রীর দল আরও বিস্তৃত দমনপীড়নের পথে হাঁটছে, তারা বিরোধীদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ এবং ‘খুনি’ বলে বর্ণনা করে।
দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনে দেশটি পরিণত হয়েছে বিরোধপূর্ণ।
গার্মেন্ট রপ্তানি শিল্পে বিনিয়োগের সুফল পাওয়া শুরু হয়। এতে অর্থনীতি চমৎকার প্রবৃদ্ধি পায়। এতে এক পর্যায়ে গড় আয় ভারতকে ছাড়িয়ে যায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি গ্রহণের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা দেশটিকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছেন। নিরাপত্তা বিষয়ক এজেন্সি থেকে শুরু করে আদালত, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিনি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। তাদেরকে ওইসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন, যারা তার পথে না আসেন।
সর্বশেষ উদাহরণ হলো শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছে। একে ড. ইউনূস রাজনৈতিক প্রতিশোধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। জামিনে মুক্ত আছেন তিনি। মামলার রায়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এই মামলা রাজনৈতিক নয় এবং এটা শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা।
বিএনপিকে ভেঙে ফেলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যে প্রচেষ্টা তাকে মনে হয় ব্যক্তিগত প্রতিশোধ।
বাঙালিদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক নিষ্পেষণ চালানোর পর রক্তাক্ত এক যুদ্ধে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। তখন থেকে বেশির ভাগ সময় দেশটি শাসন করছে এই দুটি দল। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। একই সঙ্গে পরিবারের অনেক সদস্যকে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অবঃ) জিয়াউর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সামরিক অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় উত্থান হয় তার। জিয়া, এ নামেই তিনি বেশি পরিচিত, পরে এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। শেখ হাসিনা বিএনপিকে দেখেন সামরিক ক্যাডারদের দিয়ে গঠিত দল হিসেবে, যারা তার পিতার খুনিদের রক্ষা করেছিল। তার সহযোগীরা বলেন, এই দলটিকে ধ্বংস করে দিতে তার এই চেষ্টা অধিক পরিমাণে ব্যক্তিগত। ২০০০ এর দশকের শুরুর দিকে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ওই সময়কার বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার এক র্যালিতে গ্রেনেড হামলায় অনেক মানুষ মারা যান। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। কিন্তু দলের নেতা ও কর্মী মিলে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হন।
গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ক্ষয় দেখা দিয়েছে, এ কারণে শেখ হাসিনার দমনপীড়ন বিশেষ করে তীব্র হয়ে উঠেছে।
করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধ পর্যায়ক্রমে আঘাত হানায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে সংকুচিত করে বিপজ্জনক নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ওই সঙ্কটে জ্বালানি ও খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। এই সঙ্কট শুধু গার্মেন্ট শিল্পের ওপর বাংলাদেশের অধিক নির্ভরতার কথাই প্রকাশ করেছে এমন নয়, একই সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেপথ্যে লুকিয়ে আছে ‘ক্লেপ্টোক্রেটিক’ চর্চা। কূটনীতিকরা বলেন, দেশের অভিজাত শ্রেণি ব্যাংকগুলোকে কুক্ষিগত করেছেন এবং ধনীরা সামান্য জবাবদিহিতায় রয়েছেন। পার্লামেন্টের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ সদস্য ব্যবসায়ী। অর্থনৈতিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক ক্ষমতা গভীরভাবে জড়িত। এতে অর্থনৈতিক সংস্কার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিরোধীরা ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য নিয়ে জনক্ষোভকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। অনেক বছরের মধ্যে প্রথম বড় মহাসমাবেশ করে। কিন্তু তা স্বল্পস্থায়ী ছিল। কারণ, তাদের ওপর সরকারের দমনপীড়ন গভীর হয়েছে।
বিএনপির দাবি তারা একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়- যা নতুন নয়। কারণ, বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় এই একই দাবি করেছিলেন শেখ হাসিনা। এই ব্যবস্থায় তিনি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষমতাসীন দলের অপব্যবহারের জন্য এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, তত্ত্বাবধায়কের অধীনে ভোট না হলে কোনো বিরোধী দল নির্বাচনে জয়ী হয়নি।
কিন্তু শেখ হাসিনা বিএনপির দাবিকে সংবিধানের লঙ্ঘন বলে মনে করেন। কারণ, তিনি ক্ষমতায় আসার পর তত্ত্বাবধায়কের চর্চাকে বেআইনি ঘোষণা করতে সংবিধান সংশোধন করেন এবং গণতান্ত্রিক চর্চায় বিঘ্ন ঘটান।
২০১৪ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার দল পার্লামেন্টের কমপক্ষে অর্ধেক আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। এবার তা এড়াতে আওয়ামী লীগ ছোট ছোট দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েছে। তারা এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, দলটি একটি নতুন ‘টোকেন’ বিরোধী দল সাজিয়েছে। তাদের অনেকে নির্বাচনী পোস্টারে এটা পরিষ্কার করেছেন তাদের অবস্থান কি: ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’।
বিএনপির নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গৃহবন্দি। তার ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে নির্বাসনে। দলটির বেশির ভাগ নেতা জেলে। এ অবস্থায় রোববারের ভোটকে সামনে রেখে দলটির দৃশ্যমানতা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে যাচ্ছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির হাতেগোণা যে কয়েকজন নেতাকে জেলে নেয়া হয়নি, তিনি তাদের অন্যতম। রিজভীর নিজের বিরুদ্ধে ১৮০টি মামলা আছে আদালতে। এক সময় তিনি দলীয় কার্যালয়ে নিজেকে আবদ্ধ রেখেছেন। ঘুমিয়েছেন এক কোণায় ছোট্ট একটি বিছানায়। সেখান থেকে বেরিয়ে এলেই তিনি গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে। ১৯৮০র দশকে সাবেক সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভকালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এ কারণে একটি বেতের লাঠির ওপর ভর দিয়ে তাকে হাঁটতে হয়। বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই নির্বাচন বর্জন করেছি আমরা এবং সমমনা দলগুলো। এ সময় তিনি শনিবার নতুন করে হরতালের ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন, এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণ এরই মধ্যে বুঝে গেছে যে, এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নৈরাজ্যের একটি মহড়া। এটা একপক্ষীয় নির্বাচন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতি দুঃখজনক। তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচনে থাকলে নির্বাচন আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো।
Thank you, I’ve just been looking for info about this subject for ages and yours is the best I have found out till now.
But, what concerning the bottom line? Are you sure about the supply?
Look into my page; vpn special coupon code 2024
Hi, i believe that i noticed you visited my blog thus i
came to go back the desire?.I am trying to find issues to improve my web site!I guess
its adequate to make use of a few of your concepts!!
My web-site: vpn special coupon code (vpnspecialcouponcode.wordpress.com)
whoah this weblog is magnificent i love studying your posts.
Keep up the good work! You know, many individuals are looking
round for this information, you could aid them greatly.
my page: how vpn works
Its like you learn my mind! You appear to understand so much about this, like you wrote the ebook in it or something.
I think that you can do with a few percent to drive the message house a little bit, but other than that, that is wonderful blog.
A great read. I will certainly be back.
Also visit my homepage … vpn deals
I constantly spent my half an hour facebook vs eharmony to find love online read this blog’s posts all the time along with a mug of coffee.
Thank you for the good writeup. It in fact was a amusement account it.
Look advanced to more added agreeable from you! However, how could we
communicate?
my blog post eharmony special coupon code 2024
Nice post. I was checking constantly this blog and I’m impressed!
Very helpful info specially the last part 🙂 I care for
such information much. I was seeking this certain info for a long
time. Thank you and good luck.
my homepage: nordvpn special coupon code 2024