বাংলাদেশে সহিংসতার নিন্দায় যুক্তরাষ্ট্র, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সমর্থন
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শান্তি বজায় রাখতে ও উত্তেজনা কমাতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। ওয়াশিংটন বলেছে, ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে তারা সমর্থন করে। সরকারকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।’
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় প্রাণহানি নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনা আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা শান্তি বজায় রাখতে ও উত্তেজনা কমাতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আগেও বলেছি, আমরা সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই। সেটা যেমন সহিংসতাই হোক, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা হোক বা সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা হোক। আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সমর্থন করি। কিন্তু সব অবস্থায় বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ হতে হবে।’
বাংলাদেশজুড়ে টেলিযোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার খবরে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘এর ফলে বাংলাদেশে অবস্থানরত আমেরিকার নাগরিকসহ দেশটির মানুষের জরুরি তথ্য পাওয়ার সুযোগ সীমিত হয়েছে। এটা এমন একটি বিষয় যা অন্যান্য দেশে ঘটলে তার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলেছি এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বলছি। আমরা এই উদ্বেগ জানিয়ে যাব।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করার আহ্বান জানায়। আমরা স্পষ্টভাবে বলি, বিশ্বের যে কোনো জায়গায় দেশগুলো যখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো ধারণ করে, তখনই সেসব দেশ সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। এটাই আমরা অব্যাহত রাখব। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের কর্মপদ্ধতি এই নীতি দ্বারাই পরিচালিত হবে।’
এক সাংবাদিক বাংলাদেশে বিক্ষোভ দমনে জাতিসংঘের লোগো সংবলিত ট্যাঙ্ক ব্যবহারের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘এই সম্পর্কে আমাদের হাতে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। আপনি জাতিসংঘের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইতে পারেন। তবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যে কোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে আমরা নিন্দা জানাই। বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে মত প্রকাশ মৌলিক অধিকার। বিক্ষোভকারীদেরও শান্তিপূর্ণ থাকতে হবে।
উদ্বিগ্ন সিনেট নেতা চাক শুমার
মার্কিন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেটিক দলের নেতা চাক শুমার মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমি গভীর উদ্বেগ নিয়ে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভের অধিকার যে কোনো গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি। সহিংসভাবে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমন করাটা ভুল এবং তা আরও অস্থিরতা তৈরি করবে।’
চাক শুমার সিনেটের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা। তিনিই সবচেয়ে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা, যিনি বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ে কথা বললেন।