Bangladesh

বাংলাদেশ ব্যাংকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নানা আলোচনা

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনো চলছে বিস্তর আলোচনা। কেন এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তার গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ কারণে গুজবের ডালপালা মেলছে একের পর এক। এর আগে রিজার্ভ চুরি, একের পর এক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সমালোচনার মুখে ছিল নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে যে নির্দেশনা দেয়া হয় তারপর থেকে নতুন করে আলোচনা হচ্ছে কেন এই নিষেধাজ্ঞা? এর নেপথ্যে কারণই-বা কী। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কেউ বলছেন, আর্থিক খাতের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার খবর বাইরে যাতে না যায় তার জন্য সাংবাদিকদের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কেউ বলছেন, সম্প্রতি এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে যা আড়াল করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

এমন আলোচনার মধ্যে নতুন করে প্রচার হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ফের অর্থ চুরির খবর। ভারত থেকে পরিচালিত নর্থ ইস্ট নিউজের এক খবরে বলা হয়, ভারতীয় কিছু হ্যাকার বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে দুই দেশের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা নীরবে তদন্ত চালাচ্ছেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।

তবে ওই খবরে সুনির্দিষ্ট কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। 

এই খবর প্রচারের পর ব্যাংকপাড়ায় নতুন আলোচনা চলছে। দেশের গণমাধ্যমের অনেকে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করছেন। এবিষয়ে মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিবৃতিতে রিজার্ভ চুরিসংক্রান্ত প্রতিবেদনের সত্যতা নাকচ করে দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, নিউইয়র্ক ফেডের সঙ্গে লেনদেনে নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে বর্তমানে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নীতি চালু রয়েছে। এর ফলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা ভুয়া (ফেক)। 

এমন এক সময়ে এই খবর এসেছে যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। ডলারের দাম বাড়ানোয় নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যয় সংকোচন করে আগামী বাজেট প্রণয়নের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নানা অনিয়মে ডুবতে বসা অন্তত ১০টি ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৫টি ব্যাংককে একীভূত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হয়েছে। কিন্তু এখন আর ব্যাংকগুলো একীভূত হতে চাইছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত নিয়েও অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা নানা সমালোচনা করছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন রেখে বলছেন, লুটপাটকারীদের সুবিধা দিতেই এমন সিদ্ধান্ত কিনা? 

সর্বশেষ গত ৭ই মে অর্থনীতি বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন ইআরএফ আয়োজিত অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে কিছু একটা গণ্ডগোল চলছে। তবে বিষয়টি তিনি পরিষ্কার কিছু বলেননি। 

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস্‌ বাংলাদেশ ব্যাংকে যান। সেখানে তিনি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বৈঠক নিয়েও ব্যাংক অঙ্গনে নানা আলোচনা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু’র ঢাকা সফরের সময়ে দেশের অর্থনীতির হালহকিকত জানতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button