বাইডেনের বদলে অন্য কাউকে কি প্রার্থী করা হতে পারে: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে ছয় মাসেরও কম সময়। এই নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রথম সরাসরি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পর থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন এই লড়াই চালিয়ে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এই বিতর্কের জের ধরে বাইডেন যদি প্রার্থিতা থেকে সরেও দাঁড়ান, তাহলে তাঁর জায়গায় নতুন একজনকে নির্ধারণ করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ও জটিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই ইতিমধ্যে দু্ই দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই বাইডেন প্রায় তাঁর সব প্রতিপক্ষকে হারিয়েছেন। তবে এরপরও বাইডেনকে যদি সরে দাঁড়াতে হয় তাহলে ডেমোক্র্যাটরা আরেকটি বড় সমস্যায় পড়বে। তা হলো, বাইডেনের জায়গায় কে আসবেন।
বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস আমেরিকার জনগণের মধ্যে ততটা জনপ্রিয় হবেন না। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অন্য কোনো নেতাকেও দেখা যাচ্ছে না, যিনি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারাতে পারেন।
তবে তাতে এই আলোচনা শেষ হচ্ছে না। বরং নতুন নতুন প্রস্তাব আলোচনাকে জোরদার করছে। বাম ঘরানার রাজনৈতিক কলাম লেখক নিকোলাস ক্রিস্টফ এরই মধ্যে বাইডেনের বিকল্প হিসেবে কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ক্রিস্টফ লিখেছেন, তিনি আশা করেন, বিতর্কে যা ঘটেছে, তা মেনে নেবেন বাইডেন ও তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবেন। (ডেমোক্রেটিক পার্টির আসন্ন) সম্মেলনে নতুন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ দেবেন।
এখানেই থামেননি কলাম লেখক ক্রিস্টফ। বাইডেনের পরিবর্তে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে কোন কোন রাজনীতিবিদ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন, তাঁদের কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর মতে মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হোয়াইটমার, ওহিওর সিনেটর শেরোড ব্রাউন বা বাণিজ্যমন্ত্রী গিনা রাইমোন্ডো বাইডেনের জায়গা নিতে পারেন।
বিতর্কে ট্রাম্পের জোরালো বক্তব্যের বিপরীতে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন জো বাইডেন। এ নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অসন্তোষ ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নতুন করে বাইডেনের বয়স ও তাঁর কর্মতৎপরতার ওপর নজর এসেছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটকৌশলী ও বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারের কর্মকর্তা ডেভিড প্লুফ গতকালের বিতর্ককে ‘একধরনের ডেফকন-১ মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ডেফকন হলো মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর একটি পরিভাষা। এর অর্থ হলো প্রতিরক্ষার প্রস্তুতিমূলক অবস্থা।
ডেভিড প্লুফ বলেন, ‘তাঁর (বাইডেন) বয়স নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগই এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় বিষয়। এটা দলের সমর্থক ভোটার ও দোদুল্যমান ভোটার উভয়ের জন্যই। আজ রাতে তাঁরা উভয়েই হতাশ হয়েছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিসও গতকালের বিতর্কে বাইডেনের দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন। বিতর্কের পর সিএনএন ও এমএসএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হ্যারিস বলেন, ‘তাঁর (বাইডেন) শুরুটা যে কিছুটা ধীরগতির ছিল, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে তিনি বেশ বলিষ্ঠভাবেই শেষ করেছেন।’