বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কমঞ্চে পরা স্যুট বেচে তহবিল জোগাচ্ছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তহবিল জোগাড় করতে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড বিক্রির এ কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, সমর্থকদের মধ্যে যিনি ১৫ বা এর বেশি ট্রেডিং কার্ড কিনবেন, তিনি বাস্তবেও একটি ট্রেডিং কার্ড পাবেন, যেটির সঙ্গে থাকবে একটি স্যুটের টুকরা। এ স্যুট পরেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে গত জুনে প্রথম মুখোমুখি প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে হাজির হয়েছিলেন তিনি (ট্রাম্প)।
গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে এক ভিডিও বার্তায় সাবেক এই প্রেসিডেন্ট এসব কথা জানান।
যে সমর্থক ৭ হাজার ৪২৫ ডলারে (৮ লাখ ৭৬ হাজার ১৫০ টাকায়) ৭৫টি ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড কিনবেন, তিনি ফ্লোরিডার জুপিটারে ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাবে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গালা ডিনারে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবেন।
বিতর্কের মঞ্চে ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশে জো বাইডেন। ২৭ জুন, সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে প্রথম ওই মুখোমুখি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সী (৮১ বছর) প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ।
বিতর্কে ট্রাম্পের বাক্যবাণে প্রথম দিকে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন বাইডেন। এ নিয়ে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর-বাইরে তীব্র সমালোচনার মুখ পড়তে হয় বাইডেনকে। একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থিতা থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি।
যাহোক, ট্রাম্পের প্রকাশিত নতুন ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। কার্ডগুলোতে তাঁর অর্ধশত নতুন ছবি রয়েছে। এসবের মধ্যে আছে তাঁর নাচ, বিটকয়েন ধরে রাখাসহ আরও কিছু ছবি।
আমরা এই নকআউট স্যুট (যে স্যুট পরে ট্রাম্প বিতর্কমঞ্চে বাইডেনকে ধরাশায়ী করেন) টুকরা করব। আপনারা এক-একটি টুকরা পাবেন। সংগৃহীত আইটেমগুলো আপনারা পরিবারের সদস্যদের দেবেন, শিশুদের দেবেন, নাতি-নাতনিদের দেবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী
ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ডগুলোর একেকটির মূল্য ৯৯ ডলার (১১ হাজার ৬৮২ টাকা)। ট্রাম্পের যে সমর্থক ১৫টি বা এর বেশি (১ হাজার ৪৮৫ ডলার বা ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৩০ টাকায়) ট্রেডিং কার্ড সংগ্রহ করবেন, তিনি সত্যিকারের একটি ট্রেডিং কার্ড পাবেন।
ট্রাম্পের প্রকাশিত নতুন ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’। কার্ডগুলোতে তাঁর অর্ধশত নতুন ছবি রয়েছে। এসবের মধ্যে আছে তাঁর নাচ, বিটকয়েন ধরে রাখাসহ আরও কিছু ছবি।
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘লোকজন একে নকআউট স্যুট বলছেন। আমি এটি সম্পর্কে জানি না, তবে তাঁরা এটিই বলছেন।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা এই নকআউট স্যুট (যে স্যুট পরে ট্রাম্প বিতর্কমঞ্চে বাইডেনকে ধরাশায়ী করেন) টুকরা করব। আপনারা একেকটি টুকরা পাবেন। সংগৃহীত আইটেমগুলো আপনারা পরিবারের সদস্যদের দেবেন, শিশুদের দেবেন, নাতি-নাতনিদের দেবেন।’
এদিকে যে সমর্থক ৭ হাজার ৪২৫ ডলারে (৮ লাখ ৭৬ হাজার ১৫০ টাকায়) ৭৫টি ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড কিনবেন, তিনি ফ্লোরিডার জুপিটারে ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাবে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গালা ডিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা জানেন, তাঁরা আমাকে ক্রিপটো-প্রেসিডেন্ট বলে ডাকেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি না এটি সত্য না মিথ্যা। তবে অনেক মানুষ এমনটাই বলছেন। তাই আপনারা সুযোগ হারাবেন না। আপনারা কালেক্টট্রাম্পকার্ডস ডটকমে যান এবং মার্কিন ইতিহাসের টুকরা সংগ্রহ করুন।’
সম্ভবত বিস্ময়কর না হলেও ট্রাম্প অতীতেও এ ধরনের ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড প্রকাশ ও তা বিক্রি করেছেন। ২০২২ সালে ট্রাম্প প্রথম তাঁর ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড প্রকাশ করেন। ওই কার্ডে সুপারহিরোর পোশাক পরা নিজের ছবি জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এক দিনের কম সময়ে ওই কার্ড বিক্রি করে উঠেছিল ৪৫ লাখ ডলার।
সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কের একপর্যায়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
আবার ট্রাম্প যে এবারই শুধু তাঁর স্যুটের টুকরা বিক্রি করছেন, তেমনটি নয়। গত বছর ট্রাম্প যখন গ্রেপ্তার হন ও আটলান্টা কারাগারে তাঁর মুখচ্ছবি নেওয়া হয়, সেই সময় পরনে থাকা স্যুট কেটেও বিক্রি করা শুরু করেছিলেন তিনি। স্যুটের একেকটি টুকরা সংগ্রহ করতে সমর্থকদের ৪৭টি করে ডিজিটাল ট্রেডিং কার্ড কিনতে হয়েছিল, যার মূল্য ছিল ৪ হাজার ৬৫৩ ডলার পর্যন্ত।
আটলান্টা কারাগারে থাকাকালীন ট্রাম্পের মুখচ্ছবি–সংবলিত কফি মগ, টি-শার্ট ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি করেও অর্থ কামিয়েছেন আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই রিপাবলিকান প্রার্থী।