বাইডেন প্রশাসনের দ্বিমুখী নীতিতে ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ চরমে
২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে ডেমোক্র্যাট নেতারা ক্রমবর্ধমানভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন। দলটির নেতারা ইসরায়েলের হামলায় বেসামরিক মানুষ হত্যা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। এই অবস্থায় সম্প্রতি মার্কিন সিনেট নেতা চাক শুমার ও বাইডেনের বক্তব্যে ডেমোক্র্যাটরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্য হিলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শুমার তাঁর বক্তব্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাননি, তবে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি একহাত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু তাঁর পথ হারিয়েছেন। এজন্য গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন।’ এ সময় তিনি ইসরায়েলে নতুন নির্বাচন দাবি করেন।
শুমার বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহুর জোট সরকারকে এখন দেশটির মানুষ চায় না। রাজনৈতিকভাবে বেঁচে থাকতে তিনি গাজায় মানুষ হত্যা চালিয়েই যাচ্ছেন।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে চরম অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং গাজায় মানবিক চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের বক্তব্যের কোথাও যুদ্ধবিরতির কথা নেই। এতেই ক্ষেপেছেন ডেমোক্র্যাটরা।
তাদের মতে, বাইডেন প্রশাসন দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে। একদিকে যুদ্ধ না থামিয়ে ইসরায়েলকে তারা অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে, একই সঙ্গে চলছে নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা। অন্যদিকে, গাজায় মানবিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটরা মনে করেন, এই পন্থায় যুদ্ধ থামার সম্ভাবনা কম।
ফিলিস্তিনি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আল-শাবাকার মার্কিন পলিসি ফেলো তারিক কেনি-শাওয়া বলেন, যুদ্ধকে ব্যবহার করে বাইডেন ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছেন। যদিও বাইডেন ও শুমার নেতানিয়াহুর প্রতি খুবই বিরক্ত। এর পরও দেশটি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করছে ইসরায়েল।
তবে আমেরিকার ইহুদি ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটির (জিনসা) প্রতিরক্ষাবিষয়ক সিনিয়র ফেলো জন হান্না বলেন, বাইডেন প্রশাসন গাজায় সহায়তা অব্যাহত রেখেছে মানে হলো, বাইডেন ইসরায়েলকে সমর্থন করছে। অথচ উচিত ছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধের অবসান ঘটানো। মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো খালেদ এলগিন্ডি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক বিপর্যয় জিইয়ে রেখেছে। এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
‘একদিকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ, অন্যদিকে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ’ এ নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিবৃত হন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। জবাবে তিনি বলেছিলেন, দুটি উদ্দেশ্য বিরোধপূর্ণ নয়। ইসরায়েল একদিকে নিজের নিরাপত্তা রক্ষায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে, বেসামরিক লোক হত্যা না করেই। আর ত্রাণ সহায়তাও জরুরি।