Trending

বাণিজ্যযুদ্ধ নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বৈঠক শুরু

চলমান উত্তেজনা নিরসন ও বাণিজ্যযুদ্ধের ইতি টানতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। মধ্য লন্ডনের ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে শুরু হওয়া এই আলোচনায় বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতি নিজেদের বিবদমান ইস্যুগুলোর সমাধানে ঐকমত্য হবে, এমনটা অনেকেই আশা করছেন। কারণ, এ দুটি দেশের মধ্যকার বিবাদ এখন বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে জন্য বৈঠকটি নিয়ে সারা বিশ্বে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল এবং চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হি লাইফেংয়ের নেতৃত্বে তাঁর দেশের প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে।

আধুনিক প্রযুক্তির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান চীনের বিরল খনিজ রপ্তানি ও কম্পিউটার চিপসহ মার্কিন পণ্যগুলোতে চীনের প্রবেশাধিকার ইত্যাদি রয়েছে আলোচ্যসূচির ওপরের দিকে।

গত মাসে ওয়াশিংটন ও বেইজিং শুল্ক বিষয়ে একটি ‘অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছিল। তবে এরপর আবার এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।

গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে একটি ফোনালাপের পর নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই ফোনালাপকে ট্রাম্প ‘খুব ভালো আলোচনা’ বলে বর্ণনা করেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দুই নেতার মধ্যে এটিই ছিল প্রথম আলোচনা। এ নিয়ে ট্রাম্প বলেন, উভয় দেশ একটি অত্যন্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।

অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত চীনের বিরুদ্ধে নেওয়া নেতিবাচক পদক্ষেপগুলো প্রত্যাহার করা।

এর আগে গত ১২ মে জেনেভায় আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ৯০ দিনের একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছায়। এতে উভয় দেশ একে অপরের ওপর আরোপিত শুল্ক শিথিল করতে সম্মত হয়। এই ঘোষণার পর বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে স্বস্তি ফিরে আসে। যদিও দুই দেশের মধ্যে জটিল ইস্যুগুলো এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

ট্রাম্প বারবার বিভিন্ন বাণিজ্য অংশীদারের ওপর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তবে শেষ মুহূর্তে কিছু পদক্ষেপ আবার প্রত্যাহারও করেছেন। তাঁর এই অনিয়মিত, কখনো কখনো সিদ্ধান্ত বদলানোর কৌশলে বিশ্বনেতারা বিভ্রান্ত হয়েছেন এবং ব্যবসায়িক খাতের শীর্ষ নির্বাহীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন বিরল খনিজ রপ্তানিকে কৌশলগত চাপের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছে। এসব খনিজ চীন থেকে রপ্তানি বন্ধ হলে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধাক্কা খেতে পারে। যার ফলে ট্রাম্পের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়তে পারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনকে তাদের শীর্ষ ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেছেন, চীনই একমাত্র দেশ, যেটি অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম।

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের মূল নিশানা ছিল চীন। দেশটির পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি। জবাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করে চীন। পরে অবশ্য উভয় পক্ষই সাময়িকভাবে উত্তেজনা কমাতে রাজি হয়। এর আগে আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত অন্যান্য দেশের ওপর ব্যাপক হারে আরোপিত শুল্ক স্থগিত করে ওয়াশিংটন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto