বাতিল হচ্ছে অর্ডার ওয়াশিংটনে দু’দিন ধরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক-শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ সবার দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে। দু’দিন ধরে শুল্ক ইস্যু নিয়ে সেখানে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসেডর জেমিসন গ্রিয়ারের সাথে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশের টার্গেট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনা। তৈরি পোশাক রফতানিতে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম শুল্ক ২০ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কা ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনলেও বাংলাদেশ যথাসময়ে উদ্যোগ গ্রহণ না করায় এখন বিপাকে পড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য প্রবেশে শুল্ক কমাতে ব্যর্থ হলে হুমকির মুখে পড়বে দেশের তৈরি পোশাকখাত। ওয়াশিংটনে বৈঠকের পর তৈরি পোশাকের শুল্ক কমানো নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানিয়েছেন, শুল্ক ইস্যুতে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে। আলোচনার দ্বিতীয় দিনে দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতি কেমন হবে- সে সব বিষয় উপস্থাপনের পর যুক্তিতর্ক হয়েছে। আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ মোটামুটিভাবে একমত হয়েছে। কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। কিন্তু মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রবেশে আগের ধার্য করা শুল্ক থাকছে নাকি কমানো হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেয়া হচ্ছে না। ফলে পোশাক শিল্পে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্ক ইস্যুর কারণে নতুন রফতানি আদেশ আপাতত স্থগিত রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে শুল্ক কমানো না গেলে আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের অর্ডার ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকের নিট খাতের রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, শুল্ক এখনো কার্যকর হয়নি। চলমান আলোচনাও শেষ হয়নি। এর মধ্যেই অনেক ব্র্যান্ড-ক্রেতা দর কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে বলে সদস্য কারখানাগুলো বিকেএমইএর কাছে অভিযোগ করেছে। কোনো কোনো ক্রেতা এক ডলার পর্যন্ত দর কম দিতে চায়। অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক বাণিজ্যে অভ্যস্ত মার্কিন ব্র্যান্ড ক্রেতাগুলো যেন নতুন করে একটি মওকা পেয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পোশাক রফতানিতে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দেশের পোশাক খাতে এক অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এখনো বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ছিল আলোচনার শেষ দিন। অনেকে শুল্ক কমানোর বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ফলপ্রসূ বললেও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য উৎপাদন এবং রফতানির প্রক্রিয়ায় থাকা পোশাক নিয়ে অনেকটা বেকায়দায় উদ্যোক্তারা। অনেক মার্কিন ক্রেতা বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক অর্ডার বাতিল বা স্থগিত করে দিচ্ছে। কেউ কেউ আবার ডিসকাউন্ট দিতে বলছে। একই সঙ্গে পণ্যের দর কমানো এবং বাড়তি শুল্কের একটি অংশ রফতানিকারকদের বহন করতে চাপ দিচ্ছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাইপলাইনে থাকা এ রকম পোশাকের আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটি ডলার, দেশি মুদ্রায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এসব নিয়ে জটিলতার পাশাপাশি নতুন রফতানি আদেশ আপাতত স্থগিত রয়েছে। যা আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পোশাকের অর্ডার ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।
এদিকে আগামী দিনে অর্ডার কমে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় এ শিল্পখাত, যার ওপর নির্ভর করে ৪০ লাখ শ্রমিকের জীবিকা। বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে তৈরি পোশাকখাত থেকে। এই খাতের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক, যার বেশির ভাগই নারী এবং দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১০ শতাংশ অবদান রাখে এটি। নতুন এই মার্কিন শুল্ক বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর ‘ত্রিমুখী চাপ’ তৈরি করেছে। একদিকে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সমস্যা, অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ জ্বালানি সঙ্কটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়াÑ এই দুই সঙ্কটের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এই উচ্চ শুল্ক। অর্থনীতি-বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলছে, এই তিন সঙ্কটের মিলিত প্রভাবে শুধু ২০২৫ সালেই বাংলাদেশের পোশাক রফতানি দুই বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমে যেতে পারে। দেশের মোট রফতানির ৮১ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তাই এই ক্ষতি পুরো অর্থনীতির জন্য একটি বড় আঘাত।
শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্টের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যাশা ফলোপ্রসূ না হলে অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা বলছেন, মার্কিন বাজারে রফতানির গতি কমে যেতে পারে। তবে তারা আশাবাদী, এখনো আলোচনার সুযোগ রয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষির মাধ্যমে এই শুল্কহার কমানো যায়, তাহলে বাজারটি ধরে রাখা সম্ভব। অন্যথায় প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশি শুল্কে বাংলাদেশি পণ্যের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে, যা অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের পর বিকল্প খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছেন। বিকল্প বাজার খুঁজে রফতানির বহুমুখীকরণ ও কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষিতে সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট ছিল না বলে মনে করেন রফতানিকারক উদ্যোক্তারা। প্রথম দফা ৩৭ শতাংশ শুল্ক ঘোষণার পর গত প্রায় তিন মাসে বলার মতো কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি সরকার। কয়েকজন রফতানিকারক বলেন, কী আলোচনা হচ্ছে, কারা আলোচনা করছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি সরকারের তরফ থেকে। এমনকি এত বড় একটি ইস্যুতে সরকার ব্যবাসয়ীদের সঙ্গে বসে কখনো পরামর্শ নেয়ার চিন্তা করেনি। তবে অগামী ১ আগস্ট থেকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। তাই এর মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি ফলপ্রসূ সমাধানে আসা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন একাধিক ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞ। বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপ শুধু তাৎক্ষণিক নয়, দীর্ঘমেয়াদেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এখনই কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান স্পারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেছেন, আগামী ঋতুতে পোশাকের অর্ডার ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং এই খাতের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের আশঙ্কা, পোশাক রফতানিতে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ট্রাম্পের ঘোষণা কর্মসংস্থানে বড় প্রভাব পড়বে; কারখানা কমে যেতে পারে এবং কর্মীরা বেকারত্বের মুখে পড়বে।
বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ২০ শতাংশ, প্রতিবেশী ভারতের উপর ৩০ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কার উপরে ৩০ শতাংশ। তৈরি পোশাক রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সেলিম রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা বেশি রফতানি করে, তাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হবে। বিকল্প বাজারে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়বে, প্রতিযোগিতা বাড়বে, আর ন্যায্যমূল্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
সূত্র মতে, সাধারণত রফতানি আদেশের চুক্তির পর পণ্যের মান ও নকশায় আর কোনো পরিবর্তনের সুযোগ থাকে না। চুক্তিতে উল্লেখ করা সময়ের মধ্যে ক্রেতাদের হাতে পণ্য পৌঁছাতে আর্থিক লোকসান মেনে নিয়ে আকাশপথে হলেও পণ্য পৌঁছে দিতে বাধ্য হন রফতানিকারকরা। অথচ রাজনৈতিক অস্থিরতা, শ্রম অসন্তোষ, করোনার মতো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দর কমাতে নানা ধরনের অনৈতিক বাণিজ্য চর্চা করে থাকে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ওয়ালমার্ট বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি গত বৃহস্পতিবার অর্ডার বাতিল করার কথা জানিয়েছে। বিজিএমইএর একাধিক পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, একটি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে। এর মধ্যে ১৫০ মিলিয়নের একটি অর্ডার বাতিল করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই অর্ডার ভিয়েতনামে চলে গেছে। বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম যুক্তরাষ্ট্রে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে থাকেন। ইতোমধ্যে ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট শর্তের কথা জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তিনি এতে সম্মত হননি। তিনি জানান, এটি দিলে ব্যবসা থাকবে না। যদিও ইতোমধ্যে অমদানিকারকরা লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। বিকেএমইএর আরেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তার ব্যবসা ১৩০ মিলিয়ন ডলারের। ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট শর্তের কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারক। আর তাই এই মুহূর্তে এ নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আছেন তিনি।
বছরব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করে প্যাসিফিক সোয়েটার্স। কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ জানান, মার্কিন একটি বড় ব্র্যান্ডের রফতানি আদেশের ৬০ হাজার পিস টি-শার্টের কাজ চলছিল তার কারখানায়। নতুন শুল্কের ঘোষণা আসার পর ব্র্যান্ডটি কাজ বন্ধ রাখতে ই-মেইল করেছে। মাঝপথে এখন কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর একটি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি আছে। এই রফতানি আদেশ কবে আবার চালু হবে বা আদৌ হবে কি-না, সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট কিছু বলেনি। মূলত তারা ৯ জুলাইয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল। অবশ্য এ রকম একটি শুল্ক খড়গের অনুমান থেকে সারা বছর ব্যবহার হয় এ রকম কিছু পণ্য গত কয়েক মাসে বেশি পরিমাণে নিয়েছেন ক্রেতারা। বাণিজ্যিক স্বার্থে ওই ব্র্যান্ডের নাম জানাতে চাননি তিনি।
ওভেন পণ্যের বড় শিল্প গ্রুপ অনন্ত গার্মেন্টসও সারা বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের কাজ করে। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক খান বাবলু বলেন, গত সোমবার নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর গত বুধবার মার্কিন একটি ব্র্যান্ডের ডাকে জরুরি বৈঠকে বসেন তারা। ক্রেতাদের একটাই কথা, বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য নিয়ে বিপদে পড়বেন তারা। এ অবস্থায় উৎপাদন এবং সরবরাহ পর্যায়ে থাকা পণ্যে বাড়তি শুল্কের একটি অংশ রফতানিকারকদের বহন করতে হবে। তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি এই উদ্যোক্তা বলেন, মার্কিন ক্রেতাদের কাজ করা বেশির ভাগ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের একই রকম পরিস্থিতি। এ রকম পণ্যের মূল্য ২০০ কোটি ডলারের মতো।
একক রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে প্রায় ৮৭০ কোটি ডলারের পণ্য। মোট রফতানির মধ্যে পোশাক ৮৫ শতাংশ। পোশাকের মোট রফতানির ২০ থেকে ২২ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার এবং বুধবার দু’দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ দেশের ওপর বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের পণ্যে এ যাত্রায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এ হার বিদ্যমান হারের অতিরিক্ত। এতে মোট শুল্ক দাঁড়াবে অন্তত ৫১ শতাংশ। গত মাসে সব দেশের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ বাদ না গেলে শুল্ক ৬১ শতাংশ দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের মূল প্রতিযোগী চীন, ভিয়েতনাম, ভারত ও পাকিস্তানের নাম না থাকায় অসম প্রতিযোগিতার মুখে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি ব্যাপকহারে কমে যেতে পারে।
সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে বিকল্প বাজার খোঁজা। নিজেদের যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আছে, তার মধ্যে থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বাজার বড় করার চেষ্টা করা উচিত। সেখানে আরো কয়েক বছর বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাজারের সুবিধা আছে। সেই সঙ্গে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের বাজার অনুসন্ধান করতে হবে। এছাড়াও আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধির মূল কেন্দ্র হবে এশিয়া। সবকিছু মিলে ‘ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।